পাহাড়ে সংঘাত: বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি
খাগড়াছড়ি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
সংঘাত ও বৈষম্যবিরোধী পাহাড়ি ছাত্র আন্দোলন নামে একটি সংগঠন সংবাদ সম্মেলন করে
খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে সংঘাতের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে। তবে পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা তদন্ত করতে এর আগে সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়।
বৃহষ্পতিবার (২৪ অক্টোবর) সকালে স্থানীয় একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। ‘সংঘাত ও বৈষম্যবিরোধী পাহাড়ি ছাত্র আন্দোলন’ নামে একটি সংগঠন এ সংবাদ সম্মেলন করে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ছাত্র প্রতিনিধি তুষিতা চাকমা।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, সম্প্রতি খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে সংঘাতের ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত করতে হবে। এর পাশাপাশি পাহাড়ি শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা উদ্দেশ্যমূলক ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর সমতলের পাশাপাশি পাহাড়েও বৈষম্য দূরীকরণে শিক্ষার্থীরা ‘সংঘাত ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ নামে একটি প্লাটফরম তৈরি করে। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই প্লাটফরমকে বিতর্কিত করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। যা অত্যন্ত নিন্দনীয় ও দুঃখজনক।
সংবাদ সম্মেলনে পার্বত্য চট্টগ্রামে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিতকরণ, রাষ্ট্র সংস্কারে আদিবাসীদের মূল্যায়ন ও সাংবিধানিক স্বীকৃতি, পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নসহ আট দফা দাবি উত্থাপন করা হয়।
এসময়, ছাত্র প্রতিনিধি কৃপায়ন ত্রিপুরা, কিকো দেওয়ান, লাব্রেচাই মারমা ও টরান ধন চাকমাসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি সদরে মোটরসাইকেল চুরিকে কেন্দ্রে করে গণপিটুনিতে মো. মামুন (৩০) নামের এক বাঙালি যুবককে হত্যার জেরে সংঘাতের সূত্রপাত হয়। সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে। এতে খাগড়াছড়ি জেলা সদরে দুজন, দীঘিনালায় একজন ও রাঙামাটিতে একজন নিহত হন। সেই সঙ্গে শতাধিক দোকানপাটে আগুন ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
সহিংসতার পরদিন অন্তবর্তীকালীন সরকারের তিন উপদেষ্টা খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি জেলা সফর করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, বিশিষ্টজন ও সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন।
খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে সহিংসতার কারণ উদঘাটনে গত ২৬ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনারকে (উন্নয়ন) আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম। এ কমিটিকে দুসপ্তাহের মধ্যে সরেজমিনে পরিদর্শন ও তদন্তপূর্বক চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কাছে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হচ্ছেন, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবানের তিন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও তিন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।
রূপায়ন/ইভা