যে কারণে কৃষিপণ্য স্পেশাল ট্রেনে অনাগ্রহ
চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
কৃষকের উৎপাদিত ফসল কম খরচে পরিবহনের জন্য চালু হওয়া কৃষিপণ্য স্পেশাল ট্রেন প্রথমদিনই কোনো পণ্য ছাড়া চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ছেড়ে গেছে।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ট্রেনটি ছেড়ে যায়। রেলওয়ে কর্মকর্তারা যোগাযোগ করেও কৃষি উদ্যোক্তা বা ব্যবসায়ীদের কোনো সাড়া পাননি।
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে ব্যবসায়ী আরাফাত রহমান বলেন, ট্রেন থেকে পিকআপে কৃষিপণ্য পরিবহনে খরচ অনেক কম। এছাড়া আরও অনেক সুবিধা আছে।
তিনি উল্লেখ করেন, ট্রেনে পণ্য পরিবহনে কুলি খরচ, ফসলের মাঠ থেকে স্টেশন এবং সেখান থেকে মোকামের আলাদা খরচ লাগবে। কিন্তু পিকআপে সরাসরি জমি থেকে মোকাম পর্যন্ত পণ্য পৌঁছানো যায়। হিসেব করে দেখেছি, পিকআপে না পাঠিয়ে ট্রেনে পণ্য পরিবহনে কেজিপ্রতি ৩ টাকা বেশি খরচ হবে।
শফিকুর রহমান নামে এক কৃষক বলেন, সাধারণত সন্ধ্যার দিকে পিকআপে সবজি লোড করে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। ভোরে মোকামে পৌঁছে যায়। কিন্তু ট্রেনে সবজি পরিবহন করে বাজার ধরাতে অনেক বেগ পেতে হবে। কারণ, ট্রেনটি রহনপুর থেকে ছেড়ে যাবে সকাল সোয়া ৯টায়।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানায়, নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বমুখী বাজার দর নিয়ন্ত্রণে কৃষিপণ্য স্পেশাল ট্রেনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। সপ্তাহে একদিন বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ট্রেনটি ছেড়ে যাবে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর থেকে কৃষিপণ্যে স্পেশাল ট্রেনটি প্রতি শনিবার সকাল সোয়া ৯টায় ছেড়ে যাবে। এরপর আরও ১৩টি স্টেশনে বিরতি দিয়ে ঢাকার তেজগাঁও পৌঁছাবে। সবগুলো স্টেশন থেকে পণ্য উঠানো ও নামানো যাবে। স্টেশন ভেদে পণ্যের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। যেখানে প্রতিকেজি সবজি ও কৃষিপণ্য বহনে ১ টাকা ৮ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ১ টাকা ৪৭ পয়সা খরচ হবে। তবে ডিম-মাছ পরিবহনের ক্ষেত্রে চাইলে পুরো ওয়াগন ভাড়া নেওয়া যাবে। বিশেষ ট্রেনে প্রতিদিন ১২০ মেট্রিক টন পণ্য পরিবহন করা সম্ভব।
রহনপুর রেলওয়ে স্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার মামুন আলী বলেন, কোনো বুকিং না হওয়ায় ওয়াগন ফাঁকা রেখে কৃষিপণ্য স্পেশাল ট্রেনটি রহনপুর থেকে আজ ছেড়ে গেছে। পরে নাচোল ও আমনুরা স্টেশনে থামলেও সেখানেও কোনো বুকিং হয়নি। ফলে ট্রেনটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে কৃষিপণ্য ছাড়াই ছেড়ে গেছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চল জোনের চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার সুজিত কুমার বিশ্বাস বলেন, পণ্যের গুণগত মান বজায় রাখতে সম্প্রতি চীন থেকে আনা আধুনিক কোচ সংযুক্ত করা হয়েছে। এই ট্রেনে থাকছে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত বগি।
তিনি আরও বলেন, সড়কপথে বিভিন্ন কারণে পণ্য পরিবহনের ভোগান্তি ও প্রতিবন্ধকতা দূর করতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বেচাকেনার সময় বিবেচনা করে ট্রেনটি রাতে পৌঁছাবে।
শিয়াম/কেআই