ঢাকা     শুক্রবার   ০১ নভেম্বর ২০২৪ ||  কার্তিক ১৭ ১৪৩১

পর্যটকে মুখর রাঙামাটি

রাঙামাটি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৪৩, ১ নভেম্বর ২০২৪   আপডেট: ১৪:৫১, ১ নভেম্বর ২০২৪
পর্যটকে মুখর রাঙামাটি

৮ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত রাঙামাটিতে পর্যটক ভ্রমণ বন্ধ ছিল। আজ থেকে বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে ভ্রমণে পর্যটকদের বিধি-নিষেধ তুলে দেয়ার পর আশানুরূপ পর্যটক রাঙামাটি ভ্রমণ করতে শুরু করেছেন। এতে আবারও পর্যটক মুখর হয়ে উঠেছে রাঙামাটির বিনোদন কেন্দ্রগুলো। সাপ্তাহিক ছুটির প্রথম দিন শুক্রবার (১ নভেম্বর) সকাল থেকে পর্যটকরা রাঙামাটি ভ্রমণ করছেন। ব্যবসায়ীদের আশা, পর্যটক আসতে শুরু করলে লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারবেন। 

সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকেই রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতুতে পর্যটকদের সংখ্যা বাড়ছে। দলে দলে পর্যটকরা ঝুলন্ত সেতুতে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে। ঝুলন্ত সেতুর পাটাতনে হাঁটা-চলার পাশাপাশি অনেকেই কাপ্তাই হ্রদে নৌবিহার করছেন। রাঙামাটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে মোহিত পর্যটকরা জানালেন নিরাপত্তা নিয়ে কোনও শঙ্কা নেই। পর্যটকরা আসতে শুরু করায় খুশি ব্যবসায়ীরাও।

 

ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা মো. এনামুল হক বলেন, নিষেধাজ্ঞা থাকায় এতদিন রাঙামাটি আসিনি। গতকাল (বৃহস্পতিবার) প্রত্যাহারের খবর শুনে রাতেই গাড়িতে উঠেছি। আজ সকালে রাঙামাটি পৌঁছে এখন ঝুলন্ত সেতু ঘুরতে এলাম। খুব ভালো লাগছে এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে। 

চট্টগ্রাম থেকে বাইক নিয়ে ঘুরতে আসা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, রাঙামাটির প্রকৃতি অনেক সুন্দর। হ্রদের স্বচ্ছ পানি, পাহাড়, পর্বত সবমিলিয়ে খুব সুন্দর লাগছে প্রকৃতিটা। মনে হচ্ছে, ঘুরতে এসে ভুল করিনি। 

আরেক পর্যটক তরিকুল ইসলাম বলেন, রাঙামাটির পরিবেশ আসলেই খুব সুন্দর। শান্ত একটা পরিবেশ বিরাজ করছে। আমাদের দেশে যে এতো সুন্দর দৃশ্য রয়েছে, সেটা এখানে না আসলে কেউ কল্পনা করতে পারবে না। তিনি আরও বলেন, এখানে নিরাপত্তা নিয়ে কোনও শঙ্কা দেখছি না। সবকিছু ভালো মনে হল। 

রাঙামাটি হাউজ বোট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বাপ্পী তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, পর্যটকরা আসতে শুরু করেছে। যদিও সংকট কাটিয়ে উঠতে আমাদের অনেক সময় লেগে যাবে। তারপরও নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে আমরা খুশি। রাঙামাটি এখন পর্যটকদের জন্য সম্পূর্ণ নিরাপদ। আমি সবাইকে রাঙামাটি ভ্রমণের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।

গত ২৪ দিনের বন্ধে রাঙামাটির পর্যটনে ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলেও জানান তিনি। 

রাঙামাটি আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক মোস্তফা কামাল উদ্দীন বলেন, সবুজের জান্নাত ও রূপের রাণী রাঙামাটি এমনিতেই পর্যটকবান্ধব একটি শহর। সাম্প্রতিককালের বেশকিছু ঘটনায় রাঙামাটিতে পর্যটক ভ্রমণে যে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে তাতে আমরা পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি। 

তিনি আরও বলেন, রাঙামাটি শহরে বর্তমানে প্রায় ৫৫টির মত হোটেল-মোটেল রয়েছে। পর্যটকরা আসতে শুরু করেছে। আমরা তাদেরকে বরণে প্রস্তুতি শেষ করেছি। 

হোটেল হিল পার্কের ব্যবস্থাপক স্বপন শীল বলেন, দীর্ঘদিনের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে রাঙামটিতে আবারও পর্যটক আসছে। এটি আমাদের জন্য খুবই আনন্দের। আমরা পর্যটকদের বরণ করে নিতে সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি।

পর্যটক নৌ ঘাটের ব্যবস্থাপক ফখরুল ইসলাম বলেন, প্রথমদিন সকাল থেকেই আশানুরূপ পর্যটক আসতে শুরু করেছে। আশা করছি ধীরে ধীরে পর্যটক বাড়বে। এতে করে আমাদের লোকসানও পুষিয়ে নিতে পারবো। 

পর্যটকরা যাতে কোনও ধরনের হয়রানি কিংবা নিরাপত্তা সঙ্কটে না পড়ে সেই বিষয়ে সতর্ক ট্যুরিস্ট পুলিশ। ট্যুরিস্ট পুলিশ রাঙামাটি রিজিয়নের পুলিশ সুপার নিহাদ আদনান তাইয়ান বলেন, রাঙামাটি কেন্দ্রিক যতজন স্টেকহোল্ডার রয়েছেন তাদের সাথে আমরা ইতিমধ্যেই কথা বলেছি। পর্যটকরা ভ্রমণ করলে সেটা দেশের অর্থনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই রাঙামাটিতে বেড়াতে আসা পর্যটকরা যাতে কোনো হয়রানির শিকার না হয় এবং তারা যাতে সর্বোচ্চ সেবাটুকু পায়, আমরা সেই ব্যাপারে সচেষ্ট আছি।

শংকর/ইমন


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়