চট্টগ্রামের হাজারী লেনের ঘটনায় আটক ৮০
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম || রাইজিংবিডি.কম
চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানার টেরিবাজার এলাকার হাজারী লেনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপর হামলা ও এসিড নিক্ষেপের ঘটনায় ৮০ জন সন্দেহভাজন দুষ্কৃতিকারীকে আটক করেছে যৌথবাহিনী।
বুধবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রামের দামপাড়ায় ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং ব্রিগেডের সদর দপ্তরে যৌথবাহিনীর এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৫টার দিকে ওসমান আলী নামক একজন ব্যক্তির ইস্কন বিরোধী একটি ফেসবুক পোষ্টকে কেন্দ্র করে হাজারী লেনে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আনুমানিক ৫০০-৬০০ জন দুষ্কৃতিকারী হাজারী লেনে ওসমান আলী ও তার ভাইকে হত্যা এবং দোকান জ্বালিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে জড়ো হয়।
স্থানীয় কন্ট্রোল রুম থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সেনাবাহিনী, পুলিশ এবং বিজিবি সদস্যদের ৬টি টহল দল উক্ত এলাকায় পৌঁছায়। বিশৃঙ্খলাকারীদের সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় জানমাল রক্ষা এবং মব জাস্টিস রোধে যৌথবাহিনী ওসমান আলী ও তার ভাইকে উক্ত এলাকা থেকে উদ্ধার করে। এই সময় উত্তেজিত জনতাকে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সমাধানের বিষয়টি আশ্বস্ত করবার সত্ত্বেও এক পর্যায়ে উগ্র বিশৃঙ্খলাকারীরা আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দুর্বৃত্তরা এ সময় যৌথবাহিনীর উপর অতর্কিতভাবে জুয়েলারীর কাজে ব্যবহৃত এসিড হামলা চালায় এবং ভারী ইট-পাটকেলসহ ভাঙা কাঁচের বোতল ছুঁড়তে শুরু করে। এর প্রেক্ষিতে সেনাবাহিনীর ৫ জন সদস্যসহ ৭ পুলিশ সদস্য আহত হয়। এর মধ্যে সেনাবাহিনীর ৫ জন সদস্যকে বর্তমানে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়াও ঘটনাস্থলে দুর্বৃত্তরা ইট ছুঁড়ে সেনাবাহিনীর একটি পিকআপ ভ্যানের উইন্সীল্ড ভেঙে ফেলে।
উদ্ধার অভিযানের পর দুর্বৃত্ত সনাক্তকরণে যৌথবাহিনীর ১০টি টহল দল আনুমানিক রাত সাড়ে ৯টার দিকে হাজারী লেন এলাকায় গেলে করলে লুকিয়ে থাকা দুষ্কৃতিকারীরা পুনরায় যৌথবাহিনীর উপর এসিড সদৃশ বস্তু ছুড়তে শুরু করে। এসময় যৌথবাহিনী ঘটনাস্থল থেকে ৮০ জন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে আটক করতে সমর্থ হয়।
বর্তমানে বিভিন্ন সিসিটিভি ফুটেজ ও গোয়েন্দা তথ্য যাচাই-বাচাইয়ের মাধ্যমে প্রকৃত দুষ্কৃতিকারীদের চিহ্নিতকরণের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। আটককৃত ব্যক্তিদের সংশ্লিষ্ট থানায় প্রয়োজনীয় জিজ্ঞাসাবাদসহ যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আদালতে হস্তান্তরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যৌথবাহিনীর অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং হাজারী গলিসহ নগরীর অন্যান্য এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।