ঢাকা     সোমবার   ১৮ নভেম্বর ২০২৪ ||  অগ্রহায়ণ ৩ ১৪৩১

মৌলভীবাজারে খাসিয়াদের বর্ষবরণের অনুষ্ঠান এবার হচ্ছে না

মৌলভীবাজার সংবাদদাতা  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:১৯, ১৮ নভেম্বর ২০২৪   আপডেট: ১১:২৯, ১৮ নভেম্বর ২০২৪
মৌলভীবাজারে খাসিয়াদের বর্ষবরণের অনুষ্ঠান এবার হচ্ছে না

খাসি সম্প্রদায়ের বর্ষ বিদায় ও বর্ষ বরণের অনুষ্ঠান সেং কুটস্নেম এবার হবে না। ফাইল ছবি

মৌলভীবাজারে কমলগঞ্জে রয়েছে নানা ভাষাভাষী ও ভিন্ন সংস্কৃতির মানুষ। এখানে বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতিসমৃদ্ধ অন্যতম একটি সম্প্রদায় খাসিয়া। সবুজ পাহাড়ের নিরালা টিলার ফাঁকে তাদের বসবাস। পাহাড়ে পান চাষাবাদ যাদের জীবিকার মূল উৎস। অর্থ সংকটের কারণে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী খাসি (খাসিয়া) সম্প্রদায়ের এবার বর্ষ বিদায় ও নতুন বছরকে বরণের ‘খাসি সেং কুটস্নেম’ অনুষ্ঠান হবে না বলে জানিয়েছেন খাসি সোশ্যাল কাউন্সিল। প্রতিবছর ২৩ নভেম্বর এই অনুষ্ঠানটি করে থাকেন তারা। 

জানা যায়, খাসিদের আয়ের উৎস পান ব্যবসায় এবার মন্দা চলছে। খাসিরা পানের ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না। পরিবার পরিজন নিয়ে জীবন চালানো কঠিন হয়ে গেছে। এই অনুষ্ঠান করতে তাদের বেশ কিছু টাকার মতো খরচ হয়। এই টাকা জোগাড় করতে না পারার কারণে এ বছর তারা অনুষ্ঠান করতে পারছেন না। 

অনুষ্ঠান আয়োজকদের অন্যতম সদস্য সাজু মরচিয়াং বলেন, পান চাষে খরচ বেড়েছে। ব্যাংকগুলো সহজ ভাবে ঋণ প্রদান করলে আমরা পান চাষ বৃদ্ধি করতে পারতাম। পান চাষিরা বাধ্য হয়ে মধ্যস্বত্বভোগী মহাজনদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে তাদের হাতে বন্ধী হয়ে যান। তারা সিন্ডিকেট করে চাষিদের কাছ থেকে কম দামে পান কিনে বাজারে অধিক লাভে বিক্রি করেন। বাজারের নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতে থাকে। এতে সাধারণ পান চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হন। 

খাসি সোশ্যাল কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফিলা পতমী জানান, খাসিয়াদের আয়ের উৎস পান। এবার ব্যবসায় মন্দা চলায় পানের ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না। এ কারণে অর্থনৈতিক সমস্যায় ভুগছেন তারা। অনুষ্ঠান করতে দুই লাখ টাকার মত খরচ হয় তাদের। এই টাকা জোগাড় না হওয়ায় এ বছর অনুষ্ঠান করছেন না তারা। তবে ঘরোয়া ভাবে এই অনুষ্ঠান করা হবে। প্রতিবছর সিলেট বিভাগের প্রায় ৭০টি খাসিয়া পুঞ্জির মানুষ এই উৎসবে অংশ নেন। দেশ-বিদেশের পর্যটকরাও আসেন অনুষ্ঠানে। 

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জির খেলার মাঠে নতুন বর্ষবরণ ও বিদায় অনুষ্ঠান হয়। খাসিয়ারা তাদের প্রাচীন ইতিহাস ও ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে আদি পাহাড়ি নৃত্য ও গান পরিবেশন করেন। পাশাপাশি তাদের জীবন-জীবিকার প্রধান উৎসব জুমচাষের এবং জীবন জীবিকার বিভিন্ন পদ্ধতি নৃত্যের মাধ্যমে তুলে ধরেন।

ঢাকা/আব্দুল/ইমন


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়