আবু সাঈদ হত্যা মামলা: বেরোবি’র সাবেক প্রক্টর শরিফুল রিমান্ডে
রংপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
বেরোবি’র সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলামকে মঙ্গলবার বিকেলে আদালতে তোলা হয়
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলিতে নিহত আবু সাঈদ হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলামের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) বিকেলে শুনানি শেষে রংপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এর বিচারক মো. আসাদুজ্জামান রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আবু সাঈদ হত্যা মামলার আইনজীবী অ্যাডভোকেট রোকনুজ্জামান রোকন এ তথ্য জানিয়েছেন।
এদিকে, ভাইয়ের ওপর অবিচার করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলামের বোন ও ঢাকা জজ কোর্টের শিক্ষানবিশ আইনজীবী সাবিহা আক্তার পপি। আদালত থেকে বেরিয়ে ন্যায়বিচার প্রাপ্তিতে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে গণমাধ্যমকে জানান তিনি।
এর আগে, গতকাল সোমবার রাতে রংপুর নগরীর খামার মোড় এলাকার বাসা থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে ডেকে আনে মামলার তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই। পরে তাকে আবু সাঈদ হত্যা মামলা গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ বিকেলে রংপুর আদালতে পাঠানো হয়।
সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক।
আরো পড়ুন: আবু সাঈদ হত্যা চেষ্টা মামলায় বেরোবির সাবেক প্রক্টর গ্রেপ্তার
আইনজীবী অ্যাডভোকেট রোকনুজ্জামান রোকন বলেন, “পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন জানানো হয়েছিল। শুনানি শেষে বিচারক তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।”
তিনি আরো বলেন, “গত ১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নং গেটের সামনে পুলিশের গুলিতে নিহত হন আবু সাঈদ। সেই দিনের সিসি ক্যামেরায় ধারণ করা ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, উস্কানিদাতাদের অন্যতম একজন তৎকালীন প্রক্টর শরিফুল ইসলাম। বিষয়টি আদালতে তুলে ধরা হয়েছে। শুনানি শেষে অধিকতর তদন্তের স্বার্থে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রিমান্ড আবেদন জানান।”
এই মামলায় এর আগে মহানগর পুলিশের এএসআই আমীর আলী ও কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলার বাকি আসামিদেরও অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানান এই আইনজীবী।
গত ১৮ আগস্ট পুলিশের সাবেক আইজিপিসহ ১৭ জনের নাম উল্লেখ এবং ৩০ থেকে ৩৫ জনকে নাম না জানা আসামি করে মামলা করেন আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী। পরবর্তীতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলামসহ সাত জনের নাম মামলায় নথিভুক্ত করার জন্য সম্পূরক এজাহার করেন তিনি। পরে আদালতের আদেশে তাদের ওই মামলায় নামীয় এজহারভুক্ত আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
প্রসঙ্গত, প্রসঙ্গত, কোটা সংস্কার নিয়ে সারা দেশে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অগ্রণী ভূমিকায় ছিলেন আবু সাঈদ। সেখানে তিনি ছিলেন এই আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক। গত ১৬ জুলাই দুপুর ২টার দিকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক দিয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী ছাত্ররা মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশের চেষ্টা করেন। পুলিশ তাদের বাধা দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। একপর্যায়ে পুলিশের ছোড়া রাবার বুলেটে ক্ষতবিক্ষত হওয়ার পর মাটিতে লুটিয়ে পড়েন আবু সাঈদ। হাসপাতালে নেওয়ার আগেই মৃত্যু হয় তার।
ঢাকা/আমিরুল/মাসুদ