সাবেক মন্ত্রী-এমপিসহ ১০৬ জনের বিরুদ্ধে নাশকতার মামলা
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
সাবেক মন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী ও অ্যাডভোকেট আনিসুল হক
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাবেক মন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, অ্যাডভোকেট আনিসুল হকসহ ১০৬ জনের নামে নাশকতার মামলা হয়েছে।
সোমবার (১৯ নভেম্বর) দিবাগত রাতে জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক বাদী হয়ে সদর থানায় মামলা করেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ইব্রাহিম আহমেদ শাহীন জেলা শহরের কান্দিপাড়ার বাসিন্দা। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ৪০ থেকে ৫০ জনকে আসামি করা হয়।
আসামিদের মধ্যে সাবেক গণপূর্ত ও গৃহায়ণ মন্ত্রী মোকতাদির চৌধুরী ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, আনিসুল হক সাবেক আইনমন্ত্রী ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, ফাহিমা খাতুন মাউশির সাবেক মহাপরিচালক ও ইউনিভার্সিটি অব ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ট্রেজারার ও মোকতাদির চৌধুরীর স্ত্রী।
মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ (বাঞ্ছারামপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এ বি তাজুল ইসলাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ এবাদুল করিম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (আশুগঞ্জ-সরাইল) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মাইন উদ্দিন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামান, জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি সাবেক পৌর মেয়র হেলাল উদ্দিন, নায়ার কবির, সাধারণ সম্পাদক মাহবুববুল বারী চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল আলম, সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডিউক চৌধুরী, সদস্য ও সাবেক ভিপি হাসান সারোয়ার, জেলা স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাবেক সিভিল সার্জন মো. শাহ আলম, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন, মোকতাদির চৌধুরীর সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ এইচ মাহবুব আলম, কসবা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রুস্তম খা প্রমুখ।
মামলার এজাহার সুত্রে জানা গেছে, গত ৪ আগস্ট গভ. মডেল গার্লস হাই স্কুলের সামনে জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়কের নেতৃত্বে সরকারের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। সেইসময় সাবেক গণপূর্ত মন্ত্রী মোকতাদির চৌধুরী, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য একরামুজ্জামানের নির্দেশে মামলার আসামিরাসহ অজ্ঞাতনামা ৪০-৫০ জন প্রতিহত করার উদ্দেশ্যে দেশীয় অস্ত্র, পেট্রোল, কেরোসিন, ককটেল, হাতবোমা নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলের চারদিক থেকে ঘেরাও করে। তারা মুহুর্মুহু ককটেল বিস্ফোরণ করে ঘটনাস্থলে ত্রাসের সৃষ্টি করে। এতে ককটেলের আঘাতে ছাত্রদলের আহ্বায়ক কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়। আসামিরা ঘটনাস্থলে থাকা পাঁচটি মোটরসাইকেল আগুনে পুড়িয়ে দেয়। পালানোর চেষ্টা করলে তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাটিতে ফেলে এলোপাথারি কিল, ঘুষি, লাথিসহ বুকের উপর উঠে আঘাত করে। আসামিরা হাতে থাকা পিস্তল দিয়ে গুলি করে। গুলির আঘাতে আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রীসহ পথচারী অনেকে গুলিবিদ্ধ হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ইব্রাহীম আহমেদ শাহীন বলেন, ‘‘এখন মামলার পরিবেশ হয়েছে। তাই মামলা করেছি।’’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফ্ফর হোসেন বলেন, মামলায় দুইজন সাবেক মন্ত্রী, একাধিক সাবেক সংসদ সদস্যসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ১০৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।
ঢাকা/রুবেল/বকুল