রাজশাহীতে কৃষকদল নেতা হত্যার ৬ বছর পর মামলা

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষক দলের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি নজরুল ইসলামকে হত্যার ছয় বছর পর মামলা করেছে পরিবার। এ মামলায় পুলিশ এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। রোববার (২৪ নভেম্বর) তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

গোদাগাড়ী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‍“গতকাল শনিবার রাতে থানায় মামলাটি রেকর্ড হয়। এরপর একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।” 

গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম সেতাবুর রহমান বাবু (৩৬)। তার বাড়ি উপজেলার মাটিকাটা গ্রামে। তিনি মাটিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য। সেতাবুর রহমান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত শীর্ষ মাদক কারবারি। তার নামে একাধিক মাদক মামলা রয়েছে। 

এই মামলায় সেতাবুর রহমান বাবুর চাচা নাসির উদ্দিন নয়ন ওরফে নয়ন ডাক্তারকে (৫২) আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন- গ্রেপ্তার বাবুর বাবা আতাউর রহমান (৬০), মো. ডালিম (৩৬), মো. আলমগীর (৪৫), তরিকুল ইসলাম কালু (৪৫), সোহেল রানা (৩০), তরিকুল ইসলাম (৩২), মো. সাদ্দাম (৩৪) ও দুরুল মুন্সি (৫২)।

নিহত নজরুল ইসলামের ছেলে রবিউল ইসলাম কুসুম উপজেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক। তার অপর ছেলে আসাদুজ্জামান সরকার বাদী হয়ে গতকাল রাতে গোদাগাড়ী থানায় হত্যা মামলাটি করেন। রাতেই অভিযান চালিয়ে মামলার প্রধান আসমি বাবুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এজাহারের সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন নজরুল ইসলাম ও তার ছেলে রবিউল সরকার কুসুম মাটিকাটা ভোটকেন্দ্রে যান। এ সময় আওয়ামী লীগের কর্মীরা বাবা-ছেলেকে পিটিয়ে আহত করেন। ভোট দিতে গেলে প্রাণেই মেরে ফেলা হবে বলে তাদের হুমকিও দেওয়া হয়। পরে বাবা ছেলে পালিয়ে জীবন রক্ষা করেন। ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি সন্ধ্যায় আসামিরা নজরুল ইসলামের বাড়িতে হামলা করেন। তারা ব্যাপক ভাঙচুর চালান। দুই লাখ টাকার মালামালও লুট করেন। বাধা দিতে গেলে আসামিরা নজরুল ইসলামকে লোহার রড ও হকস্টিক দিয়ে পিটিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে চলে যান। পরে আসামিরা ময়নাতদন্ত ছাড়াই নজরুল ইসলামের মরদেহ দাফন করতে বাধ্য করেন। আসামিদের ভয়ে তখন পরিবারের সদস্যরা মামলা দায়ের করতে পারেননি।

গোদাগাড়ী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, “শনিবার থানায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়েছে। এরপর মামলার প্রধান আসামিকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ আসামিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।”