স্বজনদের অভিযোগ
নবজাতক রেখে মারা যাওয়া সুমাইয়ার পরিবার পায়নি সরকারি সহায়তা
নারায়ণগঞ্জ সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
সুমাইয়া। ফাইল ফটো
গত ২০ জুলাই নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের ছয়তলা ভাড়া বাসার বারান্দায় দাঁড়িয়ে মায়ের সঙ্গে কোটা সংস্কার আন্দোলন দেখছিলেন সুমাইয়া। সে সময় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষ চলছিল। হঠাৎ হেলিকপ্টার থেকে ছোড়া গুলি এসে জানালার এসএস পাইপ ভেদ করে লাগে সুমাইয়ার মাথায়। দ্রুত তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের স্বজনদের অভিযোগ, মৃত্যুর আড়াই মাস আগে সুমাইয়া একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা সুমাইয়ার নবজাতককে দেখতে আসেন। কিন্তু, এখন পর্যন্ত সরকারি কোনো সহায়তা পায়নি তার পরিবার। এমনকি, সরকারের পক্ষ থেকে খোঁজ নেওয়া হয়নি।
সুমাইয়ার মা আসমা বেগম বলেন, ‘‘সুমাইয়া ওর মেয়েকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখত। কিন্তু, সব শেষ হয়ে গেল। সুমাইয়া মৃত্যুর পর অনেকেই যোগাযোগ করেছে, নম্বর নিছে। কিন্তু, কেউ সহযোগিতা করেনি। শুধু জামায়েতের আমির তিন লাখ টাকা দিয়েছেন।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘খবরে দেখি, সরকার নিহতের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা করছে। কই আমরা তো কিছু পেলাম না। আমার মেয়েটা ঘরের ভেতর হেলিকপ্টার থেকে ছোড়া গুলিতে মরল। সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কেউ দেখতে আসেনি।’’
সুমাইয়ার বোন জামাই বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘‘সুমাইয়া যখন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে, তখন অনেক চাপে ছিলাম। সরকার পরিবর্তন না হলে আমাদের বিরুদ্ধে মামলা হতে পারত।’’
গত আগস্টে সুমাইয়ার মেয়েকে দেখতে যান জামায়াত আমির
সুমাইয়ার মায়ের মতো বিল্লাল হোসেনও সরকারি কোনো সহায়তা না পাওয়ার আক্ষেপ করেন।
সুমাইয়া বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জের মৃত সেলিম মাতবরের মেয়ে। তার স্বামী পোশাকশ্রমিক জাহিদ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার কাঁচপুরে একটি ভাড়া বাসায় থাকেন। সুমাইয়া নিজেও পোশাক কারখানার কর্মী ছিলেন। অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর তিনি চাকরি ছেড়ে দেন।
ঢাকা/অনিক/রাজীব