জেলগেটের সামনে থেকে সাবেক এমপির ছেলেকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ, পরে মুক্তি
রাজশাহী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে থেকে আওয়ামী লীগের রাজশাহী-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রাহেনুল হকের ছেলে রেজাউন-উল হক তরঙ্গকে (২৭) তুলে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পরে তিনি ছাড়া পেলেও অপহরণকারীরা ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ চেয়েছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন তরঙ্গের মা নার্গিস খাতুন। তিনি চারঘাট পৌরসভার সাবেক মেয়র।
নার্গিস খাতুনের অভিযোগ, রাজশাহী শহরের ছাত্রদলের কিছু নেতাকর্মী তার ছেলেকে কারাগারের সামনে থেকে তুলে নিয়ে যান। এবং ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন।
সোমবার রাত ৮টা থেকে সাড়ে ৯টার মধ্যে ঘটনাগুলো ঘটেছে বলে জানান তিনি।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাহেনুল হককে গ্রেপ্তার করে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। সোমবার আদালত তাকে জামিন দেন। সন্ধ্যার পর তার কারাগার থেকে বের হওয়ার কথা ছিল। এ কারণে নার্গিস খাতুন ছেলে তরঙ্গ এবং আইনজীবীকে নিয়ে কারাগারের সামনে অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় ছাত্রদলের কিছু নেতাকর্মী এসে আইনজীবীকে মারধর করে তরঙ্গকে তুলে নিয়ে যায় বলে নার্গিস খাতুন জানান।
এরপর তিনি তরঙ্গর মুঠোফোনে কল দিলে তরঙ্গ তাকে জানান, কারাগারসংলগ্ন পদ্মা নদীর ধারে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এবং তারা ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ চেয়েছে। নার্গিস খাতুন যেন দ্রুত টাকা সংগ্রহ করেন।
এরপর যুবদল-ছাত্রদলের কয়েকজনের মধ্যস্থতায় তরঙ্গ ছাড়া পান। রাত সাড়ে ৯টার দিকে তরঙ্গকে লালন শাহ মুক্তমঞ্চ এলাকায় তার এক মামাতো ভাইয়ের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়।
নার্গিস খাতুন বলেন, ‘‘তুলে নেওয়ার পর তার ছেলেকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়নি। ছাত্রদল-যুবদলের কয়েকজনের মধ্যস্থতার কারণে মুক্তিপণও দেওয়া লাগেনি।’’
এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করবেন কি না জানতে চাইলে নার্গিস খাতুন বলেন, ‘‘অভিযোগ আর কাকে দেব? কাউকে অভিযোগ দেব না। আল্লাহর কাছেই বিচার দেওয়া থাকল।’’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে নগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মাকসুদুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, ‘‘তরঙ্গ ছাত্রলীগ করত। সে কারণে স্থানীয় কিছু ছেলে তাকে আটকেছিল পুলিশের হাতে তুলে দেবে বলে। আমরা তাকে ছাড়ানোর ব্যবস্থা করেছি।’’
মাকসুদুর রহমানের মুঠোফোন থেকেই কথা বলেন মহানগর ছাত্রদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মর্তুজা ফামিন। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশের হাতে তুলে দিতে আমাদের কিছু ছেলে তরঙ্গকে ধরেছিল। বিষয়টি জানার পর আমরা তাকে ছাড়ানোর ব্যবস্থা করেছি। তাকে কেউ মারধর করেনি। কেউ মুক্তিপণ দাবি করেছিল কি না আমার জানা নেই।’’
রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘‘কেউ বিষয়টি আমাদের পুলিশ কমিশনার স্যারকে জানান। সেখান থেকে খবর পেয়ে আমি কারাগারের সামনে গিয়ে তরঙ্গের মা নার্গিস খাতুনের সঙ্গে কথা বলছিলাম। এর মধ্যেই তার মোবাইলে কল আসে যে- তার ছেলেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় তিনি কোনো অভিযোগ করেননি।’’
ঢাকা/কেয়া//