খুলনায় জনদুর্ভোগ লাঘবে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার প্রতিবাদ বিএনপির
নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা || রাইজিংবিডি.কম
নগরের সমস্যা এবং প্রতিকার চেয়ে বক্তব্য রাখছেন নগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন
খুলনা শহরের নাগরিক জীবনের দুর্ভোগ লাঘবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও সুপরিকল্পিত দীর্ঘসূত্রিতার প্রতিবাদ জানিয়েছে খুলনা মহানগর বিএনপি।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) কে ডি ঘোষ রোডন্থ দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে প্রতিবাদ জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলন থেকে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদানসহ তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন বলেন, খুলনা মহানগরী এলাকায় বসবাসরত জনসাধারণের কিছু মৌলিক চাহিদা, প্রত্যাশা এবং বিপরীতে তাদের প্রাপ্তি হতাশার। বর্ষা মৌসুমের শুরুতে দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয় এবং শীত মৌসুম পর্যন্ত এর দাপট চলতে থাকে। অথচ মশক নিধনে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের কর্মতৎপরতা নগরবাসীকে রীতিমতো হতাশ করেছে। মশার লার্ভা নিধনে তাদের উদ্যোগ যেমন নেই, পাশাপাশি ফগার মেশিন দিয়ে সৃষ্ট ধোঁয়ার কুণ্ডলীর মধ্যে শত শত মশার ওড়াওড়ি প্রমাণ করে, এই স্প্রে মশক নিধনে কেবল অকার্যকরই নয়, সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের সততার ঘাটতিরও রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, হাসপাতালে মরণাপন্ন রোগীর দেহে প্লাজমা দেওয়ার প্রয়োজনে অধিকাংশই দ্বারস্থ হচ্ছেন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। নগরীর কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা থাকলেও চার্জ মাত্রাতিরিক্ত হওয়ায় অনেকে যথাযথ চিকিৎসা পাচ্ছেন না। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চলতি বছরে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রন্ত হয়ে ১ হাজার ১০০ মানুষ ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৩ জন মারা গেছেন।
বিএনপির এ নেতা অভিযোগ করেন, খুলনা মহানগর এলাকায় চুরি ডাকাতি রাহাজানি যেমন বেড়েছে, পাশাপাশি দিনের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে নগরীর সবগুলো ট্রাফিক পয়েন্টে দীর্ঘ সময় যানজট লেগে থাকছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সিটি কর্পোরেশনের রাস্তা ও ড্রেন সংস্কার বা পুনঃনির্মাণ এবং ২২টি মোড়/সড়ক দ্বীপ আধুনিকায়ন। শুরু করার পর কাজ ফেলে রাখায় জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
বিএনপি নেতা শফিকুল আলম তুহিন বলেন, খুলনার ক্রীড়াঙ্গন যে এখনও স্বৈরাচারের দালালমুক্ত হয়নি, তার প্রমাণ জেলা ও বিভাগীয় মহিলা ক্রীড়া সংস্থা। শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার চার মাস পরও তার চাটুকার দালালরা রন্ধ্রে রন্ধ্রে বিরাজ করছেন।
খুলনার মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সে সকল সুযোগ সুবিধা থাকলেও কর্মকর্তাদের অদক্ষতা ও অনভিজ্ঞতায় কোনোা টুর্নামেন্ট যেমন হয় না, তেমনি নতুন খেলোয়াড় তৈরির উদ্যোগ নেই। নতুন খেলোয়াড় সৃষ্টিতে সরকারের বরাদ্দ বিপুল অংকের অর্থের নয়ছয় হচ্ছে বলে অভিযোগ আছে।
সংবাদ সম্মেলন থেকে অবিলম্বে খুলনায় ডেঙ্গু প্রতিরোধে ক্রাশ প্রোগাম গ্রহণের জোর দাবি জানানো হয়। সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ট্রাফিক বিভাগকে সচল করা এবং কেসিসির কথিত উন্নয়ন প্রকল্পগুলো যতদ্রুত সম্ভব শেষ করার দাবি জানা্নো হয়। এছাড়া সকল সংস্থা থেকে ফ্যাসিবাদের দোসরদের তাড়িয়ে প্রকৃত দেশপ্রেমিক শক্তিকে কাজে লাগানোর আহ্বান জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলন থেকে ২৭ নভেম্বর বেলা সাড়ে ১১টায় খুলনা সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি পেশ, ২৮ নভেম্বর মহিলা ক্রীড়া সংস্থার কার্যক্রম বৃদ্ধির দাবিতে জেলা প্রশাসকের কাছে মহানগর মহিলাদল ও সচেতন নারীদের স্মারকলিপি পেশ, ১ ডিসেম্বর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ছাত্রদল ও ড্যাবের প্রচারাভিযান শুরুর কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বেগম রেহেনা ঈসা, কাজী মাহমুদ আলী, শের আলম সান্টু, বদরুল আনাম খান, মাহাবুব হাসান পিয়ারু, চৌধুরী শফিকুল ইসলাম হোসেন প্রমুখ।
ঢাকা/নুরুজ্জামান/বকুল