হিলি স্থলবন্দর দিয়ে সব ধরনের পণ্য আমদানি বন্ধ
দিনাজপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর
ভারতের অভ্যন্তরে ট্রাকের স্লট বুকিং বন্ধ থাকায় দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে সকল প্রকার পণ্য রপ্তানি বন্ধ রেখেছেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন শিল্পী।
হিলি কাস্টমস কর্মকর্তা শফিউল ইসলাম বলেন, “ভারত থেকে বেলা ১২টার পর থেকে কোনো ট্রাক হিলি স্থলবন্দরে প্রবেশ করেনি। তবে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি স্বাভাবিক রয়েছে। এ কারণে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত মাত্র পাঁচটি ট্রাক পণ্য নিয়ে দেশে প্রবেশ করেছে। কী কারণে ভারত সরকার পণ্য রপ্তানি বন্ধ রেখেছে সে বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো চিঠি দেওয়া হয়নি। পণ্য আমদানি এবং রপ্তানির জন্য আমরা সব সময় প্রস্তুত রয়েছি।’’
হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন শিল্পী বলেন, “রপ্তানির ক্ষেত্রে আলু ও পেঁয়াজবাহী ভারতীয় ট্রাকের অনলাইন স্লট বুকিং বন্ধ করে দেওয়ার প্রতিবাদে বাংলাদেশে সব ধরনের পণ্য পরিবহন বন্ধ রেখেছেন ভারতের ব্যবসায়ীরা। দাম বৃদ্ধির অজুহাতে পশ্চিমবঙ্গ সরকার গত রোববার থেকে এই দুটি পণ্যবাহী ট্রাকের অনলাইন স্লট বুকিং বন্ধ করে দেয়। ফলে আজ দুপুর ১২টা থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে কোনো পণ্যবাহী ভারতীয় ট্রাক বন্দরে প্রবেশ করেনি।”
ভারতীয় ব্যবসায়ী পাপ্পু আগারওয়াল বলেন, “বাংলাদেশে রপ্তানি না করার জন্য আলু ও পেঁয়াজবাহী ট্রাকের অনলাইন স্লট বুকিং বন্ধ করে দেয় পশ্চিমবঙ্গ সরকার। হঠাৎ করেই পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এমন সিদ্ধান্তে প্রায় শতাধিক আলু ও পেঁয়াজবাহী ভারতীয় ট্রাক বাংলাদেশে যাওয়ার অপেক্ষায় সীমান্তের কাছে আটকে রয়েছে। এসব ট্রাকে এই দুটি পণ্য লোড থাকায় নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই মঙ্গলবার সকাল ১১টার পর আমরা পেঁয়াজবাহী একটি ট্রাক বাংলাদেশে রপ্তানির জন্য বন্দরের গেটে পাঠাই। এ সময় পুলিশ আটকে দিলে ব্যবসায়ীরা উত্তেজিত হয়ে পেঁয়াজবাহী ট্রাকটি বন্দরের প্রবেশ মুখে রেখে দেয়। ফলে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে সব ধরনের পণ্য পরিবহন বন্ধ হয়ে যায়।”
তিনি আরও বলেন, “পশ্চিমবঙ্গ সরকার আলু ও পেঁয়াজবাহী ট্রাকের অনলাইন স্লট বুকিং চালু না করা পর্যন্ত আমরা বাংলাদেশে কোনো রপ্তানিকৃত পণ্যবাহী ট্রাক যেতে দিব না। এ বিষয়ে আমরা আমাদের ব্যবসায়ী সংগঠনের সাথে মিটিং করেছি। আমাদের সিদ্ধান্ত হলো- অনলাইন স্লট বুকিং চালু করে রপ্তানি করতে দিতে হবে। অন্যথায় সব ধরনের পণ্য পরিবহন বন্ধ থাকবে। বিষয়টি রাজ্যসহ কেন্দ্রীয় সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি।”
ভারতের গণমাধ্যম বলছে, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরকে না জানিয়ে সেখান থেকে অন্য রাজ্যে এবং বাংলাদেশে আলু ও পেঁয়াজ রপ্তানি করা হচ্ছিলো। ফলে সেখানে আলুসহ পেঁয়াজের দাম হু হু করে বাড়ছে। এমন অভিযোগ তুলে ধরে বলা হয় মুখ্যমন্ত্রীর পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত ভিন রাজ্যসহ বাংলাদেশে আপাতত আলু ও পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ থাকবে।
এই অবস্থায় ২৪ নভেম্বর সকাল থেকে পশ্চিমবঙ্গ সরকার রপ্তানিকৃত আলু ও পেঁয়াজবাহী ট্রাকের অনলাইন স্লট বুকিং বন্ধ রাখে।
ঢাকা/মোসলেম/সনি