বিএনপি নেতাকে হত্যা, পলকসহ ১২২ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নাটোরের সিংড়া বাসস্ট্যান্ডে ১৪ বছর আগে জাকির হোসেন নামে এক বিএনপি নেতাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকসহ ১২২ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। 

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে নিহত জাকির হোসেনের স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা বাদী হয়ে সিংড়া আমলি আদালতে মামলাটি করেন।

আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. সুমন আলী মামলাটি গ্রহণ করে তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) দায়িত্ব দিয়েছেন। কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক মোস্তফা কামাল এ তথ্য জানান।

নিহত জাকির হোসেন বগুড়ার শেরপুর উপজেলার গাড়িদহ ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক ছিলেন। তিনি মাদরাসায় শিক্ষকতা করতেন। ২০১০ সালের ৫ মে রাজশাহীতে বিএনপির মহাসমাবেশে যোগ দিতে যাওয়ার সময় নাটোরের সিংড়া বাসস্ট্যান্ডে নেতাকর্মীদের গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় তার মৃত্যু হয়।

মামলার গুরুত্বপূর্ণ আসামিরা হলেন-সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালক লুৎফুল হাবীব রুবেল (৪১), সিংড়া পৌরসভার সাবেক মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস (৪৩), উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবদুল ওয়াদুদ মোল্লা (৫৬), পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ডালিম আহমেদ (৪৩), উপজেলা যুবলীগের সভাপতি সোহেল তালুকদারসহ (৪৩) ১২২ জন। নাম না জানা আসামি ২৫০ জন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার দিন জাকির হোসেন অন্য নেতাকর্মীদের নিয়ে মিনিবাসে করে বগুড়া থেকে রাজশাহী যাচ্ছিলেন। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে জুনাইদ আহমেদের নেতৃত্বে কয়েক শ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী বিএনপি নেতাকর্মীদের বহনকারী গাড়িবহরে হামলা করে। একপর্যায়ে আসামিরা ধারালো অস্ত্র ও লাঠি দিয়ে তার স্বামী জাকির হোসেনকে মারধর করে মহাসড়কে ফেলে রাখেন। এ সময় বিএনপির গাড়িবহরের বাস, মিনিবাস ও মাইক্রোবাস ভাঙচুর করে ৭৫ লাখ টাকার ক্ষতিসাধন করেন। বিএনপি নেতারা পালানোর চেষ্টা করলে দুর্বৃত্তরা ফাঁকা গুলি করে ত্রাসের সৃষ্টি করে।

গুরুতর আহত জাকির হোসেনকে নেতাকর্মীরা প্রথমে সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করার উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে পথে রণবাঘা এলাকায় পৌঁছালে বেলা সাড়ে ৩টায় জাকির হোসেন মারা যান। সে সময় থানায় মামলা করতে গেলে আসামিদের প্রভাবে পুলিশ মামলা গ্রহণ করেনি বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে বাদী বিলম্বে মামলা করতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানান।