সংস্কারের অভাবে সৌন্দর্য হারাচ্ছে খাগড়াছড়ির ‘দীঘিনালা দীঘি’
রূপায়ন চাকমা, খাগড়াছড়ি || রাইজিংবিডি.কম
সংস্কারের অভাবে খাগড়াছড়ির ঐতিহ্যবাহী দীঘিনালা দীঘি সৌন্দর্য হারাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। তাদের দাবি, দীঘিটি সংস্কার করা গেলে একদিকে যেমন ঐতিহ্য সংরক্ষণ হবে, অন্যদিকে পর্যটনের অন্যতম দর্শনীয় স্থান হিসেবে পরিচিতি পাবে।
জানা যায়, খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার বড়াদম এলাকায় তিন’শ ২০ শতক জায়গার উপর রয়েছে ঐতিহ্যবাহী এই দীঘি।
স্থানীয়দের দাবি, দীঘিটির নামানুসারে দীঘিনালা উপজেলার নামকরণ করা হয়েছে। প্রতিদিন দীঘিটি দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে পর্যটকরা ছুটে আসেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, দীঘির পাড়ে কয়েকটি দোকান ও রেস্টুরেন্ট গড়ে উঠেছে। এ সময় কথা হয় ঘুরতে আসা পর্যটকদের সঙ্গে। তারা জানান, দীঘির পাড়ে দোকানপাট হওয়ায় স্থানীয়দের কিছুটা আয়-রোজগারের পথ হলেও দীঘির পাড়ের সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে।
এ বিষয়ে খাগড়াছড়ির উন্নয়ন কর্মী ও গবেষক মথুরা বিকাশ ত্রিপুরা বলেন, ‘‘দীঘিনালা দীঘিটি অতি পুরনো এবং ঐতিহ্যবাহী। এই দীঘির নামানুসারে দীঘিনালা উপজেলা হয়েছে। এটি সংস্কার ও সংরক্ষণ করা উচিত। তাহলে জেলার অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র হবে।’’
দীঘিনালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান চন্দ্র রঞ্জন চাকমা বলেন, ‘‘সৌন্দর্য বর্ধনে কয়েকবারই দীঘির চারপাশে রাস্তা, দোলনা, ছোট-ছোট ঘর তৈরি করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তবে, ইউনিয়ন পরিষদের আর্থিক সক্ষমতা না থাকায় করা যায়নি। সরকারি বরাদ্দ পেলে দীঘিটি দ্রুতই সংস্কার করা হবে।’’
ইতিহাসবিদ ও স্থানীয়দের মতে, ১৬৬৫ খ্রিষ্টাব্দে তৎকালীন ত্রিপুরা রাজ্যের মহারাজা গোবিন্দ মাণিক্যে নিজ রাজ্য ছেড়ে দীঘিনালায় স্বেচ্ছায় নির্বাসন বেছে নিয়েছিলেন। তৎকালীন এ অঞ্চলের নাম ছিল রিয়াংদেশ। রাজা গোবিন্দ মাণিক্যে স্মৃতি অক্ষয় করে রাখতে দীঘিটি খনন করেন। সে সময় তিনি ১২টি দীঘি খনন করলেও ‘দীঘিনালা দীঘি’ ছিল উল্লেখযোগ্য। তবে, বাকি ১১টি দিঘীর এখন আর অস্তিত্ব নেই।
ঢাকা/রাজীব