ঢাকা     শনিবার   ১১ জানুয়ারি ২০২৫ ||  পৌষ ২৭ ১৪৩১

খেলাপি ঋণ আদায়ে গ্রহীতার বাড়ির সামনে ব্যাংক কর্মকর্তাদের অবস্থান

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৫৫, ১ ডিসেম্বর ২০২৪  
খেলাপি ঋণ আদায়ে গ্রহীতার বাড়ির সামনে ব্যাংক কর্মকর্তাদের অবস্থান

খেলাপি ঋণ আদায়ে গ্রহীতার বাড়ির সামনে ব্যানার হাতে ব্যাংক কর্মকর্তারা।

খেলাপি ঋণ আদায়ে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন কুষ্টিয়ায় কর্মরত অগ্রণী ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। খেলাপি ঋণ আদায়ে সামাজিকভাবে চাপ প্রয়োগের উদ্দেশ্যে তারা ঋণগ্রহীতার বাড়ির সামনে অবস্থান কর্মসূচির উদ্যোগ নিয়েছেন।

শনিবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে কুষ্টিয়া শহরের কোটপাড়ার কেরামত হোসেন মোস্তান রোডের বাসিন্দা ঋণখেলাপি মোশারফ হোসেনের বাড়ির সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন কুষ্টিয়া শহরের বিভিন্ন শাখার ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

ঋণগ্রহীতা মোশারফ হোসেন একজন ব্যবসায়ী। অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী এক কর্মকর্তা জানান, ব্যবসায়ী মোশারফ হোসেন তার বাড়ি বানানোর জন্য স্থানীয় বড় বাজার শাখা থেকে অগ্রণী ব্যাংক থেকে ২০১৬ সালে ৩০ লাখ টাকা ঋণ নেন। পরে ওই টাকায় বাড়ি তৈরি করেছেন তিনি। টাকা গ্রহণের পর থেকে ব্যাংকের বকেয়া পরিশোধে টালবাহানা শুরু করেন। গত প্রায় ৯ বছরে তিনি মাত্র দেড় লাখ টাকা ব্যাংকে ফেরত দিয়েছেন। সুদসহ বাকি টাকা আদায়ে বারবার তাকে নোটিস দেওয়া হলেও কোনো টাকা পরিশোধ না করে অনীহা দেখিয়ে আসছেন। শেষ পর্যন্ত বকেয়া টাকা আদায়ে মোশারফের বাড়ির সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালনে বাধ্য হয়েছে ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বকেয়া টাকা আদায়ে ব্যতিক্রমী এ উদ্যোগ স্থানীয়দের মধ্যে চাঞ্চল্যর সৃষ্টি করেছে। কর্মসূচি চলাকালে স্থানীয় এলাকাবাসী সেখানে ভিড় করে। 

অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে অগ্রণী ব্যাংক কুষ্টিয়া বড় বাজার শাখার অতিরিক্ত মহাব্যবস্থাপক এনামুল হক বলেন, “খেলাপি ঋণ আদায়ে খুলনা বিভাগের মধ্যে এই প্রথম গ্রহীতার বাড়ির সামনে অবস্থান কর্মসূচি করা হয়েছে। ব্যাংকের টাকা ঋণগ্রহণের পর বেশিরভাগ মানুষ সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও সেই ঋণ পরিশোধে গড়িমসি করে। কিছু অসাধু গ্রাহকের কাছে বকেয়া থাকে, অথচ আমাদের নিয়মিত গ্রাহকের দৈনন্দিন আমানত ফেরতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এ কারনেই সামাজিকভাবে তাদের মুখোশ উন্মোচনে এই উদ্যোগ।”

অগ্রণী ব্যাংক কুষ্টিয়া অঞ্চলের উপ-মহাব্যবস্থাপক সাবিনা সুলতানা বলেন, “বড় বড় ঋণগ্রহীতা সমাজের উঁচু স্তরের মানুষ, তাদের সামাজিক অবস্থান রয়েছে। এদের অনেকেই ঋণখেলাপি। শত চেষ্টা করেও তাদের কাছ থেকে বকেয়া ঋণ আদায় করা যাচ্ছে না। সমাজের সামনে এদের মুখোশ উন্মোচন করে সামাজিক চাপ প্রয়োগের জন্যই এ কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। বকেয়া ঋণ আদায়ে পর্যায়ক্রমে অন্য খেলাপি ঋণগ্রহীতার বাড়ির সামনেও এ কর্মসূচি পালন করা হবে।”

তবে অভিযুক্ত মোশারফ হোসেন বাড়িতে না থাকায় এবং তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এসময় বাড়ির অন্য বাসিন্দারাও কথা বলতে রাজি হননি।

ঢাকা/কাঞ্চন/ইমন


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়