গড়াই নদে কুমির, খাবার হিসেবে চরে ছাড়া হয়েছে ছাগল
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
কুষ্টিয়া শহরের জুগিয়া ভাটাপাড়া গোরস্থান এলাকার গড়াই নদে কুমিরের দেখা মিলেছে। ছবি সংগৃহীত
কুষ্টিয়া শহর সংলগ্ন পদ্মা নদীর শাখা গড়াই নদে গত কয়েকদিন ধরে কুমিরের দেখা মিলছে। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কুমির দেখতে শহরের জুগিয়া ভাটাপাড়া গোরস্থান এলাকার গড়াই নদের পাড়ে ভিড় করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কম পানিতে কুমিরের দেখা মেলায় বর্তমানে জেলেরা মাছ ধরতে নদে কম নামছেন।
এদিকে, কুমিরদের খাবার দিতে বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফেডারেশন (বিবিসিএফ) কুষ্টিয়া শাখার সহ-সভাপতি ও পাখিপ্রেমী শাহাব উদ্দিন গড়াই নদের চরে কুমিরের খাবার হিসেবে ছাগল ও হাঁস-মুরগি ছেড়েছেন। মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) বিকেল পর্যন্ত সেগুলো খেতে কুমির চরে যায়নি।
কুমিরের খাবার হিসেবে গড়াই নদের চরে বেঁধে রাখা ছাগল। ছবি সংগৃহীত
আজ সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ ও শিশুরা নদের পাড়ে বসে আছেন। তারা কুমির দেখতে সকাল থেকে সেখানে আছেন। পদ্মার উৎসমুখ থেকে অন্তত এক কিলোমিটার দূরে গড়াই নদের ভাটাপাড়া এলাকা। সেখানে নদের মাঝে চরও জেগেছে। চর জাগার এক পাশে ফালি হয়ে কিছু পানি জমে আছে। সেই পানিতে মূলত কুমির দেখেছেন স্থানীয় লোকজন।
কুমির দেখা লোকদের একজন স্থানীয় জেলে খাদিমুল ইসলাম। তিনি গড়াই নদে মাছ ধরেন। তিনি বলেন, “নেজের (লেজ) দিকটা চিকন বড়। আর এত্ত বড় মাথা। গায়ে কাঁটা কাঁটা। কুমির ওঠে আর ডুব দেয়। ভয়ে আমি নদীতে নামছিনে। মানুষ দেখতে আসছে। তাই ঝালমুড়ি বিক্রি করছি।”
নদের পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকা জুগিয়া এলাকার বাসিন্দা সুজন ইসলাম বলেন, ‘গত শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে আমি নদে কুমির দেখি। বড় আকারের কুমিরটি জেগে ওঠা চরে শরীরের অর্ধেক বের হয়ে শুয়ে ছিল। মুঠোফোনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে কয়েক মিনিট লাইভও করেছিলাম। এরপর আরো দুই দিন দেখেছি।”
কুমিরের খবরে গতকাল সোমবার বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফেডারেশনের সভাপতি শাহাব উদ্দিন গড়াই নদের চরে দুটি মুরগি রেখে আসেন। সারা দিন রাখলেও সেটা খেতে কুমির আসেনি। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে নদের পাড়ে জেগে ওঠা চরে একটি মোটাতাজা ছাগল বেঁধে রাখেন তিনি। পাশাপাশি পানিতে চারটি হাঁসও ছেড়ে দেন।
শাহাব উদ্দিন বলেন, “এখন শুষ্ক মৌসুমে নদের পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। হয়তো কোনোভাবে কুমির এখানে এসেছে। কুমির কোনো খাবার পাচ্ছে না। এ জন্য হাঁস, মুরগি ও ছাগল আনা হয়েছে। কুমির সংরক্ষণ করতে হবে। এ বিষয়টি বন বিভাগকেও জানানো হয়েছে।”
ঢাকা/কাঞ্চন/মাসুদ