সিলেটের ২ শুল্ক স্টেশন দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ
সিলেট প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
ভারত থেকে বাংলাদেশে কোনো পণ্য আমদানি-রপ্তানি করা যাবে না, এমন দাবির মুখে আজ মঙ্গলবারও (৩ ডিসেম্বর) সিলেটের জকিগঞ্জ শুল্ক স্টেশন ও বিয়ানীবাজারের শেওলা শুল্ক স্টেশন দিয়ে বাংলাদেশে কোনো মালামাল ঢোকেনি।
এতে সীমান্তের উভয়পাড়ে পণ্যবোঝাই শত শত ট্রাক আটকা পড়েছে। এতে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের লোকসান গুনতে হচ্ছে।
ভারতের শ্রীভূমিতে (করিমগঞ্জ) সনাতনী ঐক্য মঞ্চ নামের একটি সংগঠন তিন দিন ধরে বাংলাদেশবিরোধী বিক্ষোভ-সমাবেশ করছে। এ সংগঠনের বাধার মুখেই এ দুই সীমান্ত এলাকায় থাকা শুল্ক স্টেশন দিয়ে কোনো পণ্য বাংলাদেশে আসতে পারছে না।
কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সিলেটের জকিগঞ্জ শুল্ক স্টেশন দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা আমদানি করেন। এখান দিয়ে কোনো রপ্তানি হয় না। তবে বিয়ানীবাজারের শেওলা শুল্ক স্টেশন দিয়ে আমদানি-রপ্তানি দুটিই হয়। আজ উভয় স্থলসীমান্তে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ ছিল।
শেওলা শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, আজ তাঁদের স্টেশন দিয়ে কোনো আমদানি-রপ্তানি হয়নি।
জকিগঞ্জ স্থল শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, আজ মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) কোনো পণ্য আসেনি ও আগামীকাল বুধবারও (৪ ডিসেম্বর) আসবে না। তিনি জানান, এ স্টেশন দিয়ে ব্যবসায়ীরা মূলত বাংলাদেশে কমলা আমদানি করেন। তবে এটাও নিয়মিত নয়। আজ আমদানির কোনো মালামাল আসেনি।
সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সাবেক পরিচালক এবং পাথর আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি আতিক হোসেন জানান, ইসকন ইস্যুতে দুটি শুল্ক স্টেশন দিয়ে সব ধরনের আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। ভারতীয় লোকজনের বাধার মুখে ভারত থেকে বাংলাদেশে আসতে কিংবা বাংলাদেশ থেকে ভারতে কোনো পণ্যবাহী গাড়ি ঢুকতে পারছে না।
তিনি জানান, সোমবার পর্যন্ত ভারতের সুতারকান্দিতে পাথরসহ বিভিন্ন পণ্যবাহী অন্তত ২০০ ট্রাক এবং এপারে শেওলা শুল্ক স্টেশনে অর্ধশতাধিক ট্রাক আটকা পড়েছে। এছাড়া সিলেটের জকিগঞ্জের ওপারে ভারতের করিমগঞ্জে আটকা পড়েছে ফল ও কাঁচামাল বোঝাই অর্ধশতাধিক ট্রাক।
আতিক হোসেন আরও জানান, সিলেটের তামাবিল স্থলবন্দরে পণ্য পরিমাপ নিয়ে অসন্তোষের জের ধরে পণ্য আমদানি বন্ধ রয়েছে। তিনি বলেন, সিলেটের তামাবিল ও শেওলা স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে যে পাথর আমদানি করা হয়, তা সরাসরি খনি থেকে ট্রাকে লোড করা হয়। ফলে পাথরের সঙ্গে মাটি ও বালি মিশ্রিত থাকে। আগে শুল্কায়নের পূর্বে বন্দর কর্তৃপক্ষ মাটি ও বালির ওজন বাদ দিয়ে পাথরের ওজন নির্ণয় করতেন। কিন্তু বর্তমানে স্থলবন্দরের নতুন কর্মকর্তারা মাটি ও বালির ওজন ছাড় না দেওয়ায় লোকসানের হাত থেকে বাঁচতে ব্যবসায়ীরা আমদানি বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে তামাবিল স্থলবন্দরের ওপারে ভারতের ডাউকিতে পাথর ও চুনাপাথর বোঝাই তিন শতাধিক ট্রাক আটকা পড়েছে।
এ ব্যাপারে তামাবলিবল স্থল বন্দরের সহকারী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান জানান, সর্বশেষ পাথর ও চুনাপাথর বোঝাই ট্রাক প্রবেশ করেছিল ১৬ নভেম্বর। ব্যবসায়ীরা আমদানি করছেন না তাদের লোকসান হয় দেখে। তবে ইসকন ইস্যুতে এই বন্দরে কোনো প্রভাব পড়েনি বলে জানান তিনি।
ঢাকা/নুর/বকুল