নাটোরে বিএনপির জনসভা মঞ্চে পলকের শ্যালিকা
নাটোর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
বিএনপির জনসভা মঞ্চে বসে আছেন আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলকের শ্যালিকা ফারজানা রহমান (চশমা চোখে)। শুক্রবার বিকেলে সিংড়া কোর্ট মাঠে
নাটোরের সিংড়ায় বিএনপির জনসভা মঞ্চে আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালিকা ফারজানা রহমান দৃষ্টি উপস্থিত ছিলেন দাবি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশকিছু ছবি-ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। এ নিয়ে চলছে আলোচনা–সমালোচনা।
শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেলে সিংড়া উপজেলায় কোর্ট মাঠে এ জনসভা হয়। জনসভায় সভাপতিত্ব করেন সিংড়া উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি জুনাইদ আহমেদ পলকের চাচাশ্বশুর।
স্থানীয় বিএনপি নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলা ও পৌর বিএনপির যৌথ আয়োজনে শুক্রবার বিকেলে কোর্ট মাঠে জনসভা শুরু হলে প্রধান অতিথি হিসবে আসন গ্রহণ করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস দুলু। তার সঙ্গে দলটির কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক এমপি কাজী গোলাম মোর্শেদ, জেলা বিএনপির সদস্যসচিব রহিম নেওয়াজ, যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ এমদাদুল হক আল মামুন মঞ্চে আসন গ্রহণ করেন।
রহিম নেওয়াজ ও শেখ এমদাদুল হক আল মামুনের ঠিক পেছনেই বসেন পলকের শ্যালিকা ডা. ফারজানা রহমান দৃষ্টি। এ সময় অনেকেই তার ছবি ও ভিডিও ধারণ করেন। সেসব ছবি ও ভিডিও শুক্রবার রাতে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেন স্থানীয় বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের কর্মী-সমর্থকেরা।
সিংড়া পৌর বিএনপির সদস্যসচিব তায়েজুল ইসলাম বলেন, ‘‘ফারজানা রহমান শুধু পলকের শ্যালিকা নন, তিনি যুব মহিলা লীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে তাকে সক্রিয়ভাবে অংশ নিতে দেখা যেত। তিনি নৌকার নির্বাচনী প্রচারণাতেও নিয়মিত যোগ দিতেন। শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের হাত থেকে তাকে পুরস্কার নিতে দেখা গেছে। এমন একজন নারীকে বিএনপির একটি জনসভার মঞ্চে বসতে দেওয়ার ঘটনা সত্যিই লজ্জাজনক। কীভাবে কার সহযোগিতায় তিনি মঞ্চে আসন গ্রহণ করলেন, তার তদন্ত হওয়া দরকার।’’
এ বিষয়ে ফারজানা রহমান জানান, তিনি পেশায় একজন চিকিৎসক। বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে থাকেন। এরই ধারাবাহিকতায় তিনি বিএনপির জনসভার মঞ্চে বসেছিলেন। এতে রাজনৈতিক কোনো অভিপ্রায় ছিল না। যুব মহিলা লীগে তার কোনো পদ–পদবি ছিল না বলে দাবি করেন তিনি।
জনসভার সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম জানান, তিনি সভার কার্যক্রম নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। মঞ্চে অনেকেই বসেছিলেন। এর মধ্যে, ফারজানা রহমান যে বসেছিলেন, তা তিনি খেয়াল করেননি।
জনসভার প্রধান অতিথি রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, ‘‘পলকের শ্যালিকা ফারজানা রহমানসহ সিংড়ার অনেককে আমি চিনি না। তাই তার মঞ্চে আসন গ্রহণের বিষয়টি খেয়াল করতে পারিনি। তবে, সভা চলাকালে ঘটনাটি জানার পর তাকে মঞ্চ থেকে নেমে যাওয়ার ব্যবস্থা করেছি।’’
বিএনপির (রাজশাহী) সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীন শওকত বলেন, ‘‘বিষয়টি সাংবাদিকদের মাধ্যমে জেনেছি। দলের কেউ জানায়নি। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
ঢাকা/আরিফুল/রাজীব