ঝালকাঠি মুক্ত দিবস আজ
ঝালকাঠি প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
আজ ৮ ডিসেম্বর ঝালকাঠি মুক্তদিবস। ১৯৭১ সালের এদিন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তীব্র আক্রমণের মুখে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের দোসররা ঝালকাঠি শহর থেকে পালিয়ে যায়। বিজয়ীর বেশে মুক্তিযোদ্ধারা ঝালকাঠি শহরে প্রবেশ করেন। জেলার সর্বত্র আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠেন স্বাধীনতাকামী জনতা। পাশাপাশি শুরু হয় বিভিন্ন গণকবর আর বধ্যভূমিতে হারানো স্বজনের লাশ খোঁজার পালা।
জানা গেছে, ১৯৭১ সালের ২৭ এপ্রিল ভারী কামান আর মর্টার শেলের গোলা নিক্ষেপ করে পাক হানাদার বাহিনী ঝালকাঠি শহর দখলে নেয়। পাক বাহিনী তাদের এ দেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর ও আল শামসের সহায়তায় ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলা জুড়ে হত্যা, ধর্ষণ, লুট, অগ্নি সংযোগসহ নারকীয় নির্যাতন চালায়।
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের থেকে জানা যায়, জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিদিন মুক্তিযোদ্ধাসহ নিরীহ বাঙালিদের ধরে এনে পালবাড়ী টর্চার সেলে আটকে রেখে নির্যাতন চালাতো পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের দোসররা। পরে সুগন্ধা তীরবর্তী পৌরসভা খেয়াঘাট এলাকায় সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করতো তাদের। এছাড়া, জেলার বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা ও বাঙালিদের হত্যা করে মাটি চাপা দেয় পাকিস্তানি সেনা ও তাদের দোসররা। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল আক্রমণের মুখে টিকতে না পেরে ৭ ডিসেম্বর শহরে কারফিউ জারি করে রাতের আঁধারে পাকবাহিনী ঝালকাঠি ছেড়ে পালিয়ে যায়। পরদিন ৮ ডিসেম্বর স্থানীয়রা ঝালকাঠিকে হানাদার মুক্ত ঘোষণা করে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মোতালেব হোসেন জানান, পাকবাহিনী ঝালকাঠি শহর ছেড়ে যাওয়ার পর ৮ ডিসেম্বর রাজাকারা পালাতে শুরু করে। এ সময় তরুণ মুক্তিযোদ্ধারা জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে রাজাকারদের ঘিরে ফেলেন। পরে রাজাকারা নিজেদের রাইফেল ফেলে আত্মসমর্পণ করেন। একইদিন সন্ধ্যায় মুক্তিযোদ্ধারা ঝালকাঠি থানা অবরোধ করেন। সেখানে আটকা পড়া পুলিশ সদস্যরা মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে নিজেদের অস্ত্রসমর্পণ করেন।
এদিকে, একই দিন পাক হানাদার মুক্ত হয় ঝালকাঠির বর্তমান নলছিটি উপজেলা। নলছিটি থানার তৎকালীন পুলিশ কর্মকর্তারা বীর মুক্তিযোদ্ধা সেকান্দার আলী মিয়ার কাছে অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করেন। ৭ ডিসেম্বর রাতে মুক্তিযোদ্ধারা থানাটি ঘেরাও করে রাখেন।
ঢাকা/অলোক/মাসুদ