ঢাকা     শনিবার   ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  পৌষ ৭ ১৪৩১

কক্সবাজারে সাফজয়ী নারী ফুটবলারদের বর্ণাঢ্য সংবর্ধনা

কক্সবাজার প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:০৬, ৮ ডিসেম্বর ২০২৪   আপডেট: ১৪:০৮, ৮ ডিসেম্বর ২০২৪
কক্সবাজারে সাফজয়ী নারী ফুটবলারদের বর্ণাঢ্য সংবর্ধনা

সাফজয়ী নারী ফুটবলারদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান

সাফজয়ী বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের গৌরব উদযাপনে ইনানীর একটি অভিজাত হোটেলে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী ও বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন বর্ণাঢ্য সংবর্ধনার আয়োজন করে। সংবর্ধনা সকলের ভালোবাসা ও গরবের উচ্চারণে মোহিত হন সাফজয়ী নারী ফুটবলাররা।

শনিবার (৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় আয়োজিত জমজমাট এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। তিনি নিজ হাতে সংবর্ধনা দিয়ে গৌরবান্বিত করেন সাফজয়ী নারী ফুটবলারদের।  

এ সময় সেনাপ্রধান বলেন, ‘‘খেলাধুলায় আমাদের মেয়েরা এগিয়ে যাচ্ছে। নানা প্রতিকূলতার পরও তারা থেমে নেই। বিশ্বজয়ের স্বপ্ন দেখছে। খেলাধুলায় এগিয়ে যেতে আমরা তাদের আরো পৃষ্টপোষকতা করবো। তাদের দেখভাল করলে তারা উৎসাহ পাবে। তাদের অভিভাবকদের ধন্যবাদ জানাতে চাই। কারণ, তাদের সদিচ্ছা না থাকলে কিংবা মেয়েদের পৃষ্টপোষকতা করলে মেয়েরা এতদূর এগিয়ে দেশের সুনাম বয়ে আনতে পারতো না। আমরা সবসময় তাদের পাশে আছি।’’

সেনাপ্রধান বলেন, ‘‘আজ সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলকে সশস্ত্র বাহিনী ও অলিম্পিক এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হলো। এতে আমরা অত্যন্ত  আনন্দিত এবং গর্বিত। আমদের নারী ফুটবল দল অত্যন্ত গর্বের জায়গা। অনুর্ধ্ব ১৫ ও ১৮ সহ অন্যান্য দলগুলো অত্যন্ত ভালো ফলাফল করে আসছে। একই সাথে দুই দুই বার সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। তারা ভালো করলে আমাদের এই সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।’’

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি তাবিথ আওয়াল বলেন, ‘‘বাংলাদেশের মেয়েরা শুধু সাফ চ্যাম্পিয়নে নয়, এর চেয়ে বড় আসরে গিয়ে খেলারও দক্ষতা রাখে। আমরা সেভাবে তাদের এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। ২০১৪ সালে যখন নেপালে ভয়াবহ ভূমিকম্প হয় তখন সেখানে খেলতে যাওয়া ৫/৬ জন খেলোয়াড় সাফ চ্যাম্পিয়নে খেলেছে। তারা এখনো মনোবল শক্ত করে খেলে যাচ্ছে। দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল।’’ 
 

কক্সবাজারের সন্তান সাফজয়ী নারী ফুটবল দলের খেলোয়াড় রিপা আক্তার বলেন, ‘‘নিজ জন্মভূমিতে সংবর্ধনা পেয়েছি। মা-বাবা ও পরিবারের সদস্যরা এসেছে। আমাদের পুরো টিমের সঙ্গে আমাকে দেখে তারা খুশি হয়েছে। দেশের জন্য খেলে সবখানে সম্মানিত হচ্ছি এটা নিশ্চয় ভালো লাগার বিষয়। এই সংবর্ধনা ভবিষ্যতে আরো ভালো করার অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।’’

খেলোয়াড়প্রতি ৪ লাখ টাকা করে প্রাইজমানির পাশাপাশি সাফ চ্যাম্পিয়নে সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হওয়ায় ঋতুপর্না চাকমাকে অতিরিক্ত ১ লাখ ৭৫ টাকার প্রাইজমানি দেওয়া হয়েছে। গৌরবময় এসব পুরস্কার পাওয়ার পর তিনি বলেন, ‘‘এতো বড় অনুষ্ঠানে সংবর্ধনা ও সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার পাওয়ার ব্যাপারটি সত্যি অন্যরকম অনুভূতি কাজ করে। পুরস্কার কাজের গতি বাড়ায়। আমিও আমার ধারাবাহিকতা ধরে রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাবো।’’ 

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান ও নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল মুহাম্মদ নাজমুল হাসানসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। 

এ সময় সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলকে ১ কোটি টাকা প্রাইজমানি দেওয়া হয়। তন্মধ্যে প্রতি খেলোয়াড়কে ৪ লাখ টাকা, প্রাইজমানি সেরা খেলোয়াড় ঋতুপর্না চাকমা এবং সেরা গোলরক্ষক রুপনা চাকমাকে অতিরিক্ত ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা এবং বাফুফের কোচসহ সংশ্লিষ্টদের জনপ্রতি ৫০ টাকার প্রাইজমানি তুলে দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়।

গত ৩০ অক্টোবর, কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল ইতিহাস গড়ে। নেপালকে ২-১ গোলে পরাজিত করে তারা পুনরুদ্ধার করে সাফ শিরোপার মুকুট। দুই বছর আগে একই মাঠে নেপালকে হারিয়েই প্রথমবার সাফ শিরোপা ঘরে তুলেছিল তারা। এবারের জয় যেন সেই ইতিহাসকেই নতুন করে লিখল।

দেশে ফিরে এই বীর কন্যাদের বরণ করে নিয়েছিলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। 

ঢাকা/তারেকুর/টিপু


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়