ঢাকা     রোববার   ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২৯ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

হিলি হানাদার মুক্ত দিবস আজ

দিনাজপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৪৯, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪   আপডেট: ১২:০৩, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪
হিলি হানাদার মুক্ত দিবস আজ

হিলি হানাদার মুক্ত দিবস আজ। একাত্তরের ১১ ডিসেম্বর পাক হানাদার বাহিনীর সাথে প্রচণ্ড যুদ্ধের পর ৭নং সেক্টরের আওতায় দিনাজপুরের হিলি হানাদার মুক্ত হয়েছিলো। 

মুক্তিযুদ্ধকালে বিভিন্ন স্থানে সম্মুখ ও গেরিলা যুদ্ধে হাকিমপুর (হিলি) উপজেলার বোয়ালদাড় গ্রামের গোলাম মোস্তফা, একরাম উদ্দিন, বানিয়াল গ্রামের মুজিব উদ্দিন শেখ, ইসমাইলপুর গ্রামের মনির উদ্দিন, মমতাজ উদ্দিন, বৈগ্রামের ইয়াদ আলী ও চেংগ্রামের ওয়াসিম উদ্দিনসহ ৩৪৫ জন মিত্রবাহিনীর সদস্য শহিদ হন। 

হিলির মুহাড়াপাড়া এলাকায় শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্রবাহিনীর স্মরণে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভ আজও তাদের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। ‘সম্মুখ সমর’ নামকরণে এই স্মৃতিস্তম্ভটি নির্মাণ করা হয়।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার লিয়াকত আলী বলেন, “৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণের পর সারাদেশের সঙ্গে হিলিতে মরহুম খলিলুর রহমানকে একটি স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গঠন করার দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। স্কুল কলেজ এবং উৎসাহী যুবকদের সমন্বয়ে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী (২৫ মার্চ ঢাকায় হানাদার বাহিনীর বর্বর আক্রমণের পর) পাক হানাদারদের আক্রমণের উদ্দেশে গাছ কেটে ও রাস্তা খনন করে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে রাখে। এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের নির্দেশে থানা ও ইপিআর (ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস) ক্যাম্প থেকে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর কাছে কিছু ৩০৩ রাইফেল হস্তান্তর করা হয়।” 

এ সময় তৃতীয় বেঙ্গল রেজিমেন্টের মেজর নিজাম উদ্দিন ১৭টি গাড়ি বহরসহ অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে সৈয়দপুর ক্যান্টনমেন্ট থেকে ফুলবাড়িতে এসে অবস্থান গ্রহণ করেন। ওই স্বেচ্ছাসেবক দলকে হিলি ইপিআর ক্যাম্পের সুবেদার শুকুর আলীর নেতৃত্বে কয়েকজন ইপিআরসহ বিহারী অধ্যুষিত পার্বতীপুরের হাবড়ায় খান সেনাদের প্রতিরোধ করার জন্য পাঠানো হয়। সেখানে স্বেচ্ছাসেবক দলের সাথে পাক হানাদারদের সম্মুখ যুদ্ধ শুরু হয়। গোলার আঘাতে ওই দলের ৯ জন যোদ্ধা শহিদ হন। 

হিলির ছাতনী গ্রামে শক্ত ঘাঁটি ছিলো হানাদারদের। মুহাড়া পাড়ায় তারা বেশ কয়েকটি বাংকার তৈরি করে। ৬-৭ হাজার পাক সেনা ৪০টি ট্যাংক নিয়ে সেখানে অবস্থান করতে থাকে। ৬ ডিসেম্বর হাকিমপুরে ভারত-বাংলাদেশ মিত্র বাহিনীর সাথে পাক সেনাদের প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়। প্রথমদিকে মুক্তিযোদ্ধাসহ মিত্রবাহিনী ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। পরবর্তীতে সুসংগঠিত হয়ে ১০ ডিসেম্বর মুহাড়া পাড়া এলাকাসহ পাক সেনাদের বিভিন্ন আস্তানায় আকাশ পথে এবং স্থলপথে একসঙ্গে হামলা চালায়। দুইদিন ধরে প্রচণ্ড যুদ্ধের পর পাক হানাদার বাহিনী পরাস্ত হলে ১১ ডিসেম্বর দুপুর ১টার দিকে হিলি-হাকিমপুর হানাদার মুক্ত হয়। 

মিত্র বাহিনীসহ সকল শহীদদের স্মরণে এখানে নির্মাণ করা হয়েছে স্মতিস্তভম্ভ ‘সম্মুখ সমর’। প্রতিবছর মুক্তিযোদ্ধারাসহ এলাকাবাসী নিহত মুক্তিসেনাদের স্মৃতি চারণ, রুহের মাগফেরাত কামনা, র‌্যালী ও আলোচনা সভা সহ বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যম দিনটি পালন করে থাকেন।

ঢাকা/মোসলেম/ইমন

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়