ঢাকা     শনিবার   ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  অগ্রহায়ণ ৩০ ১৪৩১

চোর সন্দেহে ২ জনকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৫৬, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪   আপডেট: ১৬:১০, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪
চোর সন্দেহে ২ জনকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামে মহিষ চুরির অভিযোগে উত্তেজিত লোকজন দুই জনকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসময় সেখানে পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত থাকলেও তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।  

অষ্টগ্রাম থানার ওসি মো. রুহুল আমিন গণপিটুনিতে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‍‍“নিহত দুই ব্যক্তি পেশাদার চোর। তাদের বিরুদ্ধে নাসিরনগর থানায় চুরি ও ডাকাতির একাধিক মামলা ও প্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল।”

নিহতরা হলেন- অষ্টগ্রাম উপজেলার কগজি গ্রামের হিরু মিয়ার ছেলে নাসির (২৮) ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার চাতলপাড় গ্রামের চারু মিয়ার ছেলে মো. শাহজাহান (৪০)।

আরো পড়ুন:

দেওঘর ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মো. মহিউদ্দিন বলেন, “শাহজাহান ও নাসির পাশের বাঙ্গালপাড়া ইউনিয়নের মনোহরপুর গ্রামের হিরা মিয়ার বাড়ি থেকে একটি মহিষ চুরি করে। তারা চুরি করা মহিষটি নৌকাযোগে নিয়ে যাচ্ছিল। আজ ভোরে স্থানীয় লোকজনের চোখে পড়লে তাদের সন্দেহ হয়। এ সময় শতাধিক লোক লোড্ডা নদীর পাড় থেকে মহিষসহ তাদের আটক করে। পরে ওই দুইজনকে স্থানীয় দেওঘর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বেঁধে রাখা হয়। খবর পেয়ে শত শত এলাকাবাসী লাঠি নিয়ে বিদ্যালয়ে হাজির হয়। এক পর্যায়ে উত্তেজিত লোকজনের গণপিটুনির শিকার হন শাহজাহান ও নাসির। পরে তারা মারা যান।”

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী দুই ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দুই চোরকে ধরে আনার খবর পুলিশকে দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে পুলিশও যায়। তবে, শত শত মানুষের আক্রমণ প্রতিহত করতে পারেনি তারা। তাদের সামনেই দুই ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।”  

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের এক সদস্য জানান, মহিষ চুরির অভিযোগে ওই দুই জনকে রাত সাড়ে ৩টার দিকে আটক করে লোকজন। পুলিশকে খবর দেওয়া হয় ভোর সাড়ে ৬টার দিকে। আটকের পর থেকে দুজনকে মারধর করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দুইজনকে নিজেদের জিম্মায় নেওয়ার চেষ্টা করে। এসময় পুলিশের ওপর চাড়াও হয় লোকজন। পরে গণপিটুনিতে পুলিশের সামনেই মারা যায় চুরির অভিযোগ আটক দুইজন। প্রকৃতপক্ষে পরিস্থিতি এতটাই খারাপ ছিল যে, পুলিশের কিছুই করার ছিল না। 

অষ্টগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছা. দিলশাদ জাহান বলেন, “গণপিটুনির সময় পুলিশ উপস্থিত ছিল কি-না তা আমার জানা নেই। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত হবে। তদন্তে জানা যাবে প্রকৃত ঘটনা কী ছিল।” 

অষ্টগ্রামের ওসি মো. রুহুল আমিন বলেন, “চুরি হওয়া মহিষটি উদ্ধার করা হয়েছে। পুরো ঘটনার বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। নিহত দুই জনের লাশ কিশোরগঞ্জ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হচ্ছে।” 

ঢাকা/রুমন/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়