ঢাকা     বুধবার   ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  পৌষ ৩ ১৪৩১

নেত্রকোণায় মা ও মেয়ের লাশ উদ্ধার, মৃত্যু নিয়ে রহস্য

নেত্রকোণা সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৪৪, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪   আপডেট: ২২:৪৫, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪
নেত্রকোণায় মা ও মেয়ের লাশ উদ্ধার, মৃত্যু নিয়ে রহস্য

নেত্রকোণার পূর্বধলা উপজেলায় মা ও মেয়ের লাশ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। ঘরের খাটের ওপর থেকে লাশ দুটি উদ্ধার করা হয়। 

গৃহবধূর বাবার বাড়ির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, পারিবারিক কলহের জের ধরে তাদের হত্যা করা হয়েছে। আর শ্বশুরবাড়ির পক্ষ বলছে, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ বলছে, মৃত্যুর রহস্য উন্মোচনে থানা পুলিশের পাশাপাশি সিআইডিও তদন্ত শুরু করেছে।

মা ও মেয়ে হচ্ছেন, উপজেলার চুরাটিয়া গ্রামের মোস্তাকিনের স্ত্রী রূপালী আক্তার (২৭) ও তাদের মেয়ে রুবাইয়া তাবাসসুম মুন (৭)। রূপালী আক্তার উপজেলার জারিয়া ইউনিয়নের বারহা গ্রামের আব্দুর রশিদের মেয়ে।

আরো পড়ুন:

মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকালে উপজেলার ধলামূলগাঁও ইউনিয়নের চুরাটিয়া গ্রাম থেকে লাশ দুটি উদ্ধার করা হয়। 

রূপালীর বাবা আব্দুর রশিদ বলেন, ‘‘১০-১২ বছর আগে আমার মেয়েকে বিয়ে দেই। মেয়ের স্বামী মোস্তাকিন ফায়ার সার্ভিসে চাকরি করেন। বর্তমানে তিনি ময়মনসিংহ বিভাগীয় কন্টোল রুমে কর্মরত। তাদের দুটি মেয়ে সন্তান হয়েছে। বেশ ভালোই চলছিল তাদের সংসার। সম্প্রতি মোস্তাকিন গ্রামের বাড়িতে তিন কাঠা জমি কেনেন। এরপর তাদের দাম্পত্য কলহ দেখা দেয়। গত ১৫ দিন আগে ওই কলহের জের ধরে মোস্তাকিন আমার মেয়েকে পিটিয়ে আমার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। এর দুই দিন পর আমি মেয়েকে তার স্বামীর বাড়িতে রেখে আসি। আজ সকালে মেয়ে ও নাতির মৃত্যুর খবর পাই। আমার মেয়ে ও নাতিকে হত্যা করা হয়েছে।’’

রূপালীর শাশুড়ি আমেনা খাতুন বলেন, ‘‘আমার পুত্রবধূ প্রতিদিনের মতো তার ৭ বছরের মেয়ে রুবাইয়া তাবাসসুম মুন ও দুই বছরের মেয়ে তাহমিনা আক্তার মুনিয়াকে নিয়ে নিজ ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন। সকাল ৭টা বাজলেও রূপালী বা নাতিরা ঘুম থেকে উঠছে না কেন এই ভেবে আমি তাদের ডাকতে গিয়ে দেখতে পাই, ঘরে খাটের ওপর বিছানায় রূপালী ও মুন মৃত অবস্থায় পড়ে আছে। ছোট মেয়ে মুনিয়া তার মৃত মায়ের পাশে বসে আছে।’’

রূপালীর স্বামী মোস্তাকিন তার বিরুদ্ধে আনিত সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘আমার স্ত্রী ও সন্তান বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছে।’’ 

জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার লুৎফর রহমান বলেন, খবর পেয়ে খাটের ওপর থেকে লাশ দুটি উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মা ও মেয়ে মারা গেছে। খবর পেয়ে সিআইডি ও পূর্বধলা থানা পুলিশের টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। থানায় অপমৃত্যুর মামলা হবে। সবদিক মাথায় রেখে তদন্ত শুরু হয়েছে।

রূপালী আক্তারের বাবার বাড়ির অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘‘এ ধরনের কোনো অভিযোগ এখনও আমরা পাইনি।’’

পুলিশ সুপার মির্জা সায়েম মাহমুদ জানান, রূপালীর ডান হাতে আগুনে ঝলসানোর চিহ্ন, দুই পায়ের গোড়ালির উপরে ও দুই হাতের কব্জির উপরে কালো দাগ রয়েছে। তার মেয়ে মুনের ডান পায়ের গোড়ালি ও দুই হাতের কব্জির উপরে গোল কালো দাগ দেখা গেছে। লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।
 

ঢাকা/রেজা/বকুল

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়