ঢাকা     শুক্রবার   ২০ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  পৌষ ৬ ১৪৩১

পাহাড়ের ‘শান্তি নিকেতন’ খ্যাত মোনঘরের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন

রাঙামাটি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৩৬, ২০ ডিসেম্বর ২০২৪  
পাহাড়ের ‘শান্তি নিকেতন’ খ্যাত মোনঘরের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন

সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে রাঙাপানি মাঠে আয়োজিত আলোচনা সভা

নানা আয়োজনে পাহাড়ের ‘শান্তি নিকেতন’ হিসেবে পরিচিত ও ১৩টি ক্ষুদ্র জাতিসত্তার শিক্ষা প্রসারের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রাঙামাটির মোনঘরের সুবর্ণ জয়ন্তী উৎযাপিত হচ্ছে। 

শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে প্রতিষ্ঠানটির সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসবটি নবীন-প্রবীণদের মিলন মেলায় রূপ নেয়। 

দু’দিন ব্যাপী এই উৎসবের প্রথমদিন সকালে মোনঘর বিদ্যালয় থেকে একটি শোভাযাত্রা বের হয়ে রাঙাপানি সড়ক প্রদক্ষিণ করে রাঙাপানি মাঠে গিয়ে শেষ হয়।

সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে রাঙাপানি মাঠে আয়োজিত আলোচনা সভায় মোনঘর কার্যনির্বাহী পরিষদের সহ-সভাপতি গৈরিকা চাকমার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা)। 

বিশেষ অতিথি ছিলেন চাকমা সার্কেল চিফ ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়, মং সার্কেল চিফ সাচিং প্রু চৌধুরী, প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক পারটাজ, মোনঘরের সভাপতি ও প্রতিষ্ঠাতা শ্রীমৎ শ্রদ্ধালঙ্কার মহাথের, প্রতিষ্ঠাতার সহধর্মিনী রাখি দেওয়ানসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

এ সময় বক্তারা বলেন, দীর্ঘ ৫০ বছরে প্রতিষ্ঠানটি পাহাড়ে অন্যতম বিদ্যাপিঠ হিসেবে পরিণত হয়েছে। এই অঞ্চলের পিছিয়ে থাকা হতদরিদ্র ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতিসত্তার শিক্ষার্থীরা এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নিজেদের আলোকিত করেছে। এই প্রতিষ্ঠানটিকে আরও এগিয়ে নিতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন তারা।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সন্তু লারমা বলেন, “এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পার্বত্য আঞ্চলের বুকে স্মরণীয় হয়ে থকাবে। যারা মোনঘর প্রতিষ্ঠা করেছেন, তাদের স্মরণ রাখতে হবে। যারা এখনো নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন এবং এই পর্যন্ত নিয়ে আসার জন্য যাদের অক্লান্ত পরিশ্রম রয়েছে তাদের সকলকে কৃতজ্ঞতা জানাই।”

তিনি আরও বলেন, “শুধু প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নিলে হবে না, নিজেদের আরও এগিয়ে যাওয়ার জন্য পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি নিজস্ব জাতিসত্তার জন্য কাজ করতে হবে। এখন থেকে বের হয়ে অনেকেই রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে অবদান রাখছে।”

তিনি আরও বলেন, “আজকে পাহাড়ের বুকে মানুষকে অনিরাপদে বসবাস করতে হচ্ছে। পার্বত্য অঞ্চলে ১৩ ভাষাভাষিসহ ১৪টি ভাষাভাষির মানুষের বসবাস। দীর্ঘ লড়াই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। পার্বত্য চুক্তি দীর্ঘ দিনেও বাস্তবায়ন না হওয়ায় আজকে পাহাড়ের মানুষ বদ্ধ পরিবেশে জীবনযাপন করছে। যা কোনোভাবেই কাম্য না। তাই পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের সংগ্রামে মোনঘর শিক্ষার্থীদেরও ভূমিকা রাখার আহ্বান জানাই।”

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানান আয়োজনে শনিবার বিকালে দু’দিনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে।

উল্লেখ্য, ১৯৭৪ সালে রাঙামাটি শহরের অদূরে রাঙ্গাপানি এলাকায় চার একর জমিতে বৌদ্ধ সন্ন্যাসী জ্ঞানশ্রী মহাস্থবিরের কয়েকজন শিষ্য বিমল তিয্যে ভিক্ষু, প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু ও শ্রদ্ধালংকার ভিক্ষুর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় গড়ে ওঠে মোনঘর শিশু সদন।

ঢাকা/শঙ্কর/সনি


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়