কিশলয় কচি-কাঁচার মেলায় মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা
নিউজ ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম
গেন্ডারিয়া কিশলয় কচিকাঁচার মেলা আয়োজিত অনুষ্ঠানের একাংশ
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা ফোরাম ও গেন্ডারিয়া কিশলয় কচি-কাঁচার মেলার যৌথ উদ্যোগে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা, আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়েছে।
গেন্ডারিয়া কিশলয় কচিকাঁচার মেলা প্রাঙ্গণে বুধবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকালে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম কালুরঘাট স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শব্দ সৈনিক ইঞ্জিনিয়ার রেজাউল করিম চৌধুরী। সভাপতিত্ব করেন সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা ফোরামের সভাপতি ও গেন্ডারিয়া কিশলয় কচি কাঁচার মেলার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এ এম শফিউর রহমান দুলু।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধা এবং সকল শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী পর্বে জাতীয় সংগীত, কচিকাঁচার মেলার গান, ‘আমার দেশের মাটির গন্ধে’ পরিবেশন করে গেন্ডারিয়া কিশলয় কচিকাঁচার মেলার শিশু ও কিশোর শিক্ষার্থীরা। এরপর স্বাগত বক্তব্য রাখে শিশু প্রতিনিধি গেন্ডারিয়া কিশলয় কচিকাঁচার মেলার শিক্ষার্থী ইলমি আক্তার।
বিজয়ের এই উৎসবে সাংস্কৃতিক পর্বের সূচনা হয় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শব্দ সৈনিক মলয় কুমার গাঙ্গুলির কণ্ঠে ‘দুই ভূবনের দুই বাসিন্দা’ গানের মাধ্যমে। সুরময় হয়ে ওঠে সম্পূর্ণ প্রাঙ্গণ। পরে ‘আউল বাউল’, ‘সোনায় মোড়ানো বাংলা মোদের’, ‘কারার ওই লৌহ কপাট’সহ একাধিক দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করে গেন্ডারিয়া কিশলয় কচিকাঁচার মেলার শিশু ও কিশোর শিক্ষার্থীরা।
সংগীত পরিচালনা করেন গেন্ডারিয়া কিশলয় কচিকাঁচার মেলার ললিতকলার সিনিয়র শিক্ষক আশীষ কুমার শীল। এছাড়াও বিভিন্ন একক সংগীত পরিবেশিত হয়। ‘ও আমার দেশের মাটি’, ‘সোনা সোনা সোনা’, ‘জয়ধ্বনি কর’ গানে নৃত্য পরিবেশন করে গেন্ডারিয়া কিশলয় কচিকাঁচার মেলার শিক্ষার্থীরা।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মলয় কুমার গাঙ্গুলি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলামকে সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা ফোরামের পক্ষ থেকে সম্মাননা জ্ঞাপন করেন সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম ও বীর মুক্তিযোদ্ধা বোরহানউদ্দিন খান। উপস্থিত প্রায় অর্ধ-শতাধিক বীর মুক্তিযোদ্ধার হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানের সভাপতি কামাল এ. এম. শফিউর রহমান দুলু বলেন, “একাত্তরে স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের ভূমিকা ছিল একদমই অন্যরকম এবং গুরুত্বপূর্ণ। বলতে গেলে স্বেচ্ছায় ও সাংগঠনিকভাবে মুক্তিযুদ্ধ শুরু করেছিল স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্র। মুক্তিযুদ্ধের আহ্বান জানিয়েছিল স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্র। তাদের অবদান অবিস্মরণীয়। সেইসাথে সকল মুক্তিযোদ্ধার অবদানে আজকের স্বাধীন বাংলাদেশ।”
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শব্দ সৈনিক ইঞ্জিনিয়ার রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, “১৯৭১ সালে ২৫ মার্চের কথা সবাইর জানা। ২৬ মার্চ পাকিস্তান বেতারকেন্দ্র বন্ধ করে সূচনা হয়েছিল স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের। প্রথম বিমান হামলা আমাদের উপরই হয়েছিল। তারা বেতার আংশিক ধ্বংস করে দিয়েছিল। মেইন ট্রান্সমিটার রাখতে গিয়ে আমাদের মেরে ফেলেনি।”
“তবে, আজকে এখানে এসে শিশু কিশোরদের দেখে খুব ভালো লাগছে। ওরা আগামী দিনের ভবিষ্যত। কচিকাঁচায় এমনভাবে বেড়ে উঠছে যে ওরাই হবে দেশ গড়ার কারিগর। অনেক চড়াই উতরাই পেরিয়ে আজকের এই অবস্থানে গেন্ডারিয়া কিশলয় কচিকাঁচার মেলা” বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন গেণ্ডারিয়া কিশলয় কঁচিকাচার মেলার সাধারণ সম্পাদক নুসরাত ইয়াসমিন রূম্পা। সাংস্কৃতিক পর্বে উপস্থাপনা করেন কামাল স্মৃতি পাঠাগারের সাংস্কৃতিক সম্পাদক অরুনিমা ও গেন্ডারিয়া কিশলয় কচিকাঁচার মেলার আবৃত্তির প্রশিক্ষক নুসরাত জাহান আফরিন আলম নিপা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গেন্ডারিয়া কিশলয় কচিকাঁচার মেলার ললিতকলার অধ্যক্ষ গোলাম জিলানী। সংগীত পরিবেশন করেন আশীষ কুমার শীল, হুমায়রা হামিদ হুমা, নাফিজা পারভীন হিয়াসহ গেণ্ডারিয়া কিশলয় কচিকাঁচার মেলার শিক্ষকবৃন্দ ও শিক্ষার্থীরা।
ঢাকা/সনি