ঢাকা     শনিবার   ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  পৌষ ১৩ ১৪৩১

পাবনায় ২ টাকার শীতবস্ত্র মেলা

পাবনা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:০০, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪  
পাবনায় ২ টাকার শীতবস্ত্র মেলা

‘দুই টাকায় আমেজ’ অনুষ্ঠানে কম্বল তুলে দিচ্ছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ অতিথিরা

মাত্র দুই টাকায় দরিদ্র শীতার্ত মানুষের মাঝে উষ্ণতার আমেজ ছড়ালো শিক্ষার্থী সহযোগিতা সংগঠন। ‘দুই টাকায় আমেজ’ নামে ব্যতিক্রমী শীতবস্ত্র মেলা।

বেড়া উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) বেড়া পৌর এলাকার সান্যালপাড়া ঈদগাহ মাঠে এ মেলার আয়োজন করে সংগঠনটি। 

আয়োজনে দৃষ্টি কাড়ে জুলাই আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে পাবনার সকল শহীদদের নামে স্টলের নামকরণ। এছাড়া জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের গ্রাফিতিও প্রদর্শন করা হয় মেলায়। 

এদিন সকালে ব্যতিক্রমী এই শীতবস্ত্র মেলার উদ্বোধন করেন জুলাই আন্দোলনে শহীদ খোকন সরদারের পিতা আজিজুল সরদার। প্রধান অতিথি ছিলেন বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোরশেদুল ইসলাম। বেড়া পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মঈন উদ্দিন খাজার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন পাবনা জেলা  জামায়াতে ইসলামীর সদস্য ডা. আব্দুল বাসেত খান।

মেলা থেকে দুই টাকার প্রতীকী মূল্যে এলাকার দরিদ্র শীতার্ত মানুষ কম্বল কিনে নেন। এর আগে সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রকৃত দরিদ্র মানুষ খুঁজে বের করে তাদের হাতে চাহিদা অনুযায়ী টোকেন দিয়ে আসেন। সেই টোকেন স্টলে জমা দিয়ে পছন্দমতো শীতবস্ত্র নিয়ে যান।

দুই টাকা দিয়ে টোকেন সংগ্রহ করা পৌর এলাকার শেখপাড়া মহল্লার বৃদ্ধা মনজেলা খাতুন (৭০) বলেন, ‘‘বাবা ওইসব ছাওয়াল-মাইয়ারা আমার বাড়ি গেছিল। জারের কষ্ট দেহ্যা একটা কম্বলের টোকেন দিছিল। আজ আইসা কম্বল নিলাম।’’

আয়শা খাতুন নামের একৃ গৃহবধূ বলেন, “এই শীতি খুব উপকার হইলো কম্বলখান পায়া। ওরা খুব ভাল কাজ করতিছে। প্রত্যেক বছর ঈদির মধ্যিও দুই টেকা দিয়ে জামা কাপড় দেয়। আল্লাহ উগারে ভাল করুক।”

ব্যতিক্রমী এ আয়োজনে শুধু দরিদ্র মানুষের উপস্থিতি মেলাকে পূর্ণতা দিয়েছে বলে মনে করেন এ সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা মেহেরাব হোসেন জিম। 

তিনি বলেন, “প্রকৃত গরিবদের হাতে প্রকৃত সহায়তা পৌঁছে দিতে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করা হয়। ‘দুই টাকায় আমেজ’ সে রকম একটি কর্মসূচি। হাজারো মানুষের হাতে দুই টাকার টোকেন তুলে দিয়ে এখানে স্টল সাজানো হয়েছে। স্বচ্ছল ব্যক্তিদের এখানে আসার সুযোগ নেই।”

বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোর্শেদুল ইসলাম বলেন,  “সংগঠনটির কর্মকাণ্ড মানবিক। উপজেলা প্রশাসন তাদের পাশে রয়েছে। এভাবে অন্য সংগঠনগুলো এগিয়ে আসলে সমাজের আরো অনেক অসহায় মানুষ উপকৃত হবেন।”

উল্লেখ্য, বেড়া উপজেলার এ সংগঠনটির শিক্ষার্থীরা ২০১৬ সাল থেকে তাদের টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে প্রথমে গরিব শিক্ষার্থীদের সহায়তা শুরু করে। এখন প্রতিটি মানবিক কাজে নিজেদের মেলে ধরছেন। তাদের কাজে এলাকার বিত্তবান মানুষও সহযোগিতা করছেন।” 

দুই টাকায় তারা ঈদের খাদ্য সামগ্রী ও পোষাক বিতরণ, দুই টাকার ত্রাণ সামগ্রী ও শীতবস্ত্র বিতরণ করে আসছে। এছাড়া পাঠাগার ও এতিমখানা পরিচালনা বিভিন্ন মানবিক ও সামাজিক কাজ পরিচালনা করে আসছে। তাদের এ উদ্যোগ ইতিমধ্যে সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে। এ বছর সংগঠনটি বেস্ট ভলেন্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে।

ঢাকা/শাহীন/সনি


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়