আশ্বাসেই সীমাবদ্ধ, বন্ধ হয়নি সীমান্ত হত্যা
ইবনুল কাইয়ুম || রাইজিংবিডি.কম
সীমান্ত হত্যা বন্ধে ভারত বারবার আশ্বাস দিলেও সেটার বাস্তবায়ন হয়নি
সীমান্তে হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিলেও থেমে নেই ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে প্রাণহানির ঘটনা। পতাকা বৈঠকেই সীমাবদ্ধ সমাধানের পথ। তবে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পরিসংখ্যানে, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসেই ১৫ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
সীমান্ত হত্যা বন্ধে ভারত বারবার আশ্বাস দিলেও সেটার বাস্তবায়ন শূন্যের কোঠায়। যার সবশেষ প্রমাণ, ২৪ অক্টোবর নেত্রকোণা সীমান্তে যুবকের মরদেহ উদ্ধার।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) পরিসংখ্যান বলছে, ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত বিএসএফের গুলিতে ও নির্যাতনে অন্তত ৬০৭ জন বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া অধিকার নামের একটি মানবাধিকার সংস্থার মতে, ২০০৯ থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত বিএসএফ সদস্যদের হাতে অন্তত ৫৮২ বাংলাদেশি নিহত এবং ৭৬১ জন আহত হয়েছে।
চলতি বছরের ১০ মাসেই ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলি এবং সীমান্তে কাঠামোবদ্ধ আতঙ্কের পরিবেশের শিকার হয়ে প্রাণ গেছে অন্তত ১৭ বাংলাদেশির; আগের বছর এই সংখ্যা ছিল ৩১।
গত বছরের জুলাই মাসে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সংসদে জানিয়েছিলেন যে গত ১০ বছরে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিএসএফের হাতে মোট ২৯৪ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। তিনি আরও জানান, ২০০৯ সালে ৬৬ জন, ২০১০ সালে ৫৫ জন, ২০১১ ও ২০১২ সালে ২৪ জন করে, ২০১৩ সালে ১৮ জন, ২০১৪ সালে ২৪ জন, ২০১৫ সালে ৩৮ জন, ২০১৬ সালে ২৫ জন, ২০১৭ সালে ১৭ জন এবং ২০১৮ সালে মাত্র ৩ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন।
শেষ তিন বছরে সীমান্তে হত্যার সংখ্যা ধারাবাহিকভাবে কমে যাওয়ার পরিসংখ্যান দেখিয়ে মন্ত্রী এই ধরনের হত্যা আরও কমে যাওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু সে অনুযায়ী কাজ হয়নি। ২০১৮ সালে সীমান্তে নিহতের সংখ্যা তিন হলেও ২০১৯ এ তা বারোগুণ বেড়ে দাঁড়ায় ৩৪ জনে। যদিও শীর্ষস্থানীয় বিভিন্ন সংবাদপত্রের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বেসরকারি সূত্র অনুযায়ী এই সংখ্যা আরও বেশি।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ভূরাজনৈতিক ও বৈদেশিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা সীমান্ত হত্যা বন্ধে নানা উদ্যোগ ও পরামর্শ বাস্তবায়নের তাগিদ দিলেও কার্যত তার কোনো প্রতিফলন নেই।
তারা বলছেন, সীমান্ত হত্যা বন্ধে ভারতের সঙ্গে বিজিবি ও সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে আলোচনা করা হলেও প্রতিবেশী দেশটির কাছ থেকে ঘুরেফিরে আসছে ‘আশ্বাস’ এর বার্তা।
২৯ জানুয়ারি লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার তিন বিঘা করিডোর দিয়ে রবিউল ইসলাম টুকলুর (৩৩) মরদেহ হস্তান্তর করে বিএসএফ। এর আগে ২৮ জানুয়ারি ভোরে পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম-আঙ্গোরপোতা সীমান্তের ১ নম্বর মেইন পিলারের কাছে বিএসএফের গুলিতে টুকলু নিহত হন।
গত ২৬ অক্টোবর বাংলাদেশি নাগরিক রিজাউল করিমের মরদেহ হস্তান্তর করে বিএসএফ। ভারতীয় এই বাহিনীটির দাবি, গত ২৪ অক্টোবর তাড়া খেয়ে পালানোর সময় ভারতের অভ্যন্তরে পানিতে ডুবে মারা যায় রিজাউল।
দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে আসা খবর অনুযায়ী, শুধু ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ১৭ বাংলাদেশি। এর মধ্যে লালমনিরহাট সীমান্ত এলাকায় সবচেয়ে বেশি তিন জন প্রাণ হারিয়েছেন। অবশ্য সার্বিক হিসাব পেতে গবেষণার দাবি রাখে। তবে যেসব ঘটনার তথ্য হাতে রয়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচিত ছিল মৌলভীবাজারে কিশোরী স্বর্ণা দাস ও ঠাকুরগাঁওয়ে জয়ন্ত কুমার হত্যা।
বিএসএফ-এর হাতে হত্যার তালিকায় বাদ যায়নি বিজিবি সদস্যরাও। বছরের শুরুতে যশোর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে মোহাম্মদ রইশুদ্দীন নামে এক বিজিবি সদস্য মারা যান।
ঠাকুরগাঁওয়ে জয়ন্তী কুমারসহ লাগাতার সীমান্ত হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেট থেকে মিছিল বের করেন তারা। সেখান থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অ্যাকাডেমিক ভবন, সিরাজী ভবন, প্যারিস রোড হয়ে বুদ্ধিজীবী চত্ত্বরে সমাবেশে মিলিত হন শিক্ষার্থীরা।
মিছিলে ‘আমার বুকে তিস্তার জল কাইড়া নিল কে?’, ‘দিল্লির দাদাগিরি মানি না মানব না’, ‘সীমান্তে লাশ কেন, কসাই মোদি জবাব দে’, ‘সীমান্তে মানুষ মরে বিজিবি কী করে?’, ‘ফেলানী থেকে স্বর্ণা দাস, সীমান্তে আর কত লাশ?’, ‘বাংলাদেশের জলসম্পদ নিয়ন্ত্রণকারী আগ্রাসী দিল্লির দখলদারিত্ব নিপাত যাক’সহ নানা স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তেও চলতি বছরে দুজন নিহতের খবর মিলেছে। গত ১২ আগস্ট জেলার ওয়াহেদপুর সীমান্তে গুলিতে নিহত হন আব্দুল্লাহ নামে এক যুবক। এই জেলায় এর আগে ৪ এপ্রিল সাইফুল ইসলাম নামে একজনকে হত্যা করে দুদিন পর লাশ ফেরত দেয় বিএসএফ।
গত ৯ জুন কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায় সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে মো. আনোয়ার হোসেন (৫০) নামে এক ব্যক্তি নিহত হন। ৮ মে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত হন। ঘটনার পর বিএসএফ সদস্যরা তাদের মরদেহ নিয়ে যায়। দুই দিন পর তাদের লাশ ফেরত দেওয়া হয়।
চলতি বছরের ২২ এপ্রিল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে মো. হাসান (২৫) নামের এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হন। কসবা থানা সূত্রে সেসময় জানা যায়, হাসান নামের ওই যুবককে ধাওয়া দিয়ে গুলি করে বিএসএফ।
গত ২৭ মার্চ লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার দূর্গাপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে আহত লিটন মিয়া (২০) ভারতের কোচবিহার জেলার এমজেএন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
পরদিন (২৮ মার্চ) দূর্গাপুর সীমান্তে বিএসএফ মরদেহ হস্তান্তর করে। পরের মাসে (২৬ এপ্রিল) জেলার পাটগ্রাম সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে আবুল কালাম ডাকু (২০) নামে এক যুবক নিহত হন। ২৫ জুন রাতে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার গোড়ল ইউনিয়নের মালগারা সীমান্তে নুরুল ইসলাম (৬০) নামে একজন গুলিতে মারা যান।
এর আগে ১৮ মার্চ কুলাউড়া সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশি নাগরিক পারভেজ আলী ওরফে সাদ্দামের (১৫) মৃতদেহ হস্তান্তর করা হয়।
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া সীমান্তে গুলিতে ১ সেপ্টেম্বর নিহত হন স্বর্ণা দাস নামে ১৬ বছর বয়সি এক কিশোরী। হত্যাকাণ্ডের প্রায় ৪৫ ঘণ্টা পর ৩ সেপ্টেম্বর চাতলাপুর চেকপোস্ট দিয়ে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।
গত ২৬ মার্চ নওগাঁর পোরশা সীমান্তের ওপারে বিএসএফের গুলিতে আল আমিন (৪০) নামে এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হন। সম্প্রতি গত ১৮ ডিসেম্বর যশোরের বেনাপোল সীমান্তে জাহাঙ্গীর হোসেন, সাকিবুল হাসান ও শাহাবুর আলী নামে তিন বাংলাদেশিকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বিএসএফের বিরুদ্ধে।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) ভোরে তাদের হাতের শিরা কেটে ও পিটিয়ে হত্যার পর মহদেহ সীমান্তের ইছামতি নদীতে ফেলে দেয় বিএসএফ। পরে এলাকাবাসীর সহযোগীতায় দুপুরে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে।
চলতি বছরের শুরুতে (২২ জানুয়ারি) যশোরের ধান্যখোলা বিওপির জেলেপাড়া পোস্ট এলাকায় বিএসএফের গুলিতে নিহত হন বিজিবির সদস্য মোহাম্মদ রইশুদ্দীন। দুদিন পর ২৪ জানুয়ারি তার লাশ বাংলাদেশে হস্তান্তর করা হয়।
বিজিবি সদস্য নিহত হওয়ার পর একে ‘বিচ্ছিন্ন’ ঘটনা বলে বর্ণনা করেছিলেন তৎকালীন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তবে দুই দেশের বাহিনীর মধ্যে এ ধরনের সংঘাতের ঘটনা খুব একটা ঘটে না।
এর আগে ২০১৯ সালের অক্টোবরে রাজশাহী সীমান্তে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে গোলাগুলি হয়েছিল। সেসময় বিজিবির গুলিতে একজন ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্য নিহত হয়েছিল। তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এই ঘটনাকে ‘অনাকাঙ্ক্ষিত এক দুর্ঘটনা’ বলে বর্ণনা করেছিলেন।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দায়িত্ব গ্রহণ করেন নোবেলজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার।
১৩ আগস্ট তৎকালীন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছিলেন, ‘‘বিজিবির মতো একটা ফোর্সকে (বাহিনী) পিঠ দেখাতে বলেছে সীমান্তে। সীমান্তে আমাদের লোক মরে, বিজিবি পতাকা বৈঠক করতে বাধ্য হয়। আমি বলেছি যে, পিঠ দেখাবেন না। এনাফ ইজ এনাফ (যথেষ্ট হয়েছে)।’’
আইন ও সালিশ কেন্দ্র-আসক এর তথ্য মতে, ২০২৩ সালে বিএসএফ সীমান্তে গুলি করে ৩১ জন বাংলাদেশিকে হত্যা করেছে। এর আগে ২০২১ সালে ১৮ এবং ২০২২ সালে ২৩ জনকে হত্যা করা হয়েছিল। ২০০৯ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে বিএসএফের হাতে অন্তত ৫২২ জন বাংলাদেশি প্রাণ হারিয়েছেন।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে প্রায় ৪ হাজার ১৫৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের আন্তর্জাতিক স্থল সীমান্ত রয়েছে; যা বিশ্বে পঞ্চম বৃহত্তম। সীমান্ত হত্যাকাণ্ড শূন্যে নামাতে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যৌথ বিবৃতি দিয়েছিলেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০১৪ সালে ভারত থেকে গরু রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এরপরও চোরাইপথে গরু আসছে। হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছেন মূলত রাখাল শ্রেণির চোরাকারবারিরা। ২০১১ সালে সীমান্তে ফেলানি হত্যার নির্মম ঘটনা বিশ্বব্যাপী সাড়া ফেলে। এর বছর ছয়েক পরে ২০১৮ সালে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত সীমান্ত সম্মেলনে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার না করার প্রতিশ্রুতি দেয় ভারত। সেই প্রতিশ্রুতি তারা রাখেনি।
গত ২৭ মার্চ সীমান্ত হত্যা নিয়ে বিবৃতি প্রদান করেন বিএনপির মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, “সীমান্তে এক বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যা ও একজনকে গুলি করে ধরে নিয়ে যাওয়ার পরও ডামি সরকার ও তাদের মন্ত্রীরা এখনও নিশ্চুপ। প্রতিবাদ বা কোনো পদক্ষেপ নেওয়া দূরে থাক টু শব্দটিও তারা করেনি। সরকারের মন্ত্রীরা নির্বিকারভাবে এ সমস্ত রক্তাক্ত ঘটনা মেনে নিচ্ছে। ডামি সরকারের নতজানু নীতির কারণে বাংলাদেশি নাগরিকদের জীবন আজ নিরাপত্তাহীন। ক্ষমতার জন্য এরা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব দুর্বল করতেও দ্বিধা করে না।”
গত ২৭ জুন সীমান্ত হত্যা নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রশ্ন করে বলেন, ‘‘পৃথিবীর কোন দেশ আছে যে, সীমান্তে তার বন্ধু দেশের নাগরিকদের হত্যা করা হয়?’’
চলতি বছরের ৫ মার্চ ঢাকার পিলখানায় ‘বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের ৫৪তম সীমান্ত সম্মেলন’ অনুষ্ঠিত হয়। ৯ মার্চ সকালে যৌথ আলোচনার পর দলিল স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে সীমান্ত সম্মেলন শেষ হয়। মূলত ঢাকায় সীমান্ত সম্মেলনে অংশ নেওয়া শেষে বিএসএফ প্রধানের ফিরে যাওয়ার পর তাদের মারমুখী অবস্থান বিষ্ময় সৃষ্টি করে।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক মনে করেন, ‘‘এই হত্যাকাণ্ড বন্ধে দুই দেশের পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে তৎপর হতে হবে। সীমান্তে হত্যা বন্ধে সংশ্লিষ্ট এই দপ্তরগুলোতে তৎপরতায় ঘাটতি রয়েছে। দুই দেশেই আইন আছে, তবুও সীমান্তে আইন লঙ্ঘন করে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে; যা মানবাধিকার লঙ্ঘন।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. আমেনা মহসীন বলেন, ‘‘ভারত বারবারই আমাদের আশ্বাস দেয়, সীমান্তে কোনো নির্যাতন বা হত্যার ঘটনা ঘটবে না। কিন্তু কোনো সমাধান আসছে না।”
তিনি আরো বলেন, “দেশটির সাথে দ্বিপক্ষীয় যে কোনো আলোচনায় সীমান্তে হত্যা জিরোপয়েন্টে আনতে আমাদের জোর দিয়ে বিষয়টি তুলতে হবে। এর সাথে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক যেমন জড়িত, উভয় দেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জোরালো পদক্ষেপও প্রয়োজন।’’
ঢাকা/সনি