এডিবির ৭৫ লাখ টাকা আত্মসাত
ফুলবাড়িয়ায় প্রকৌশলীর বিচার দাবিতে মানববন্ধন
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলা পরিষদের কাজ না করে বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্পের (এডিপি) ৮ প্রকল্পের ৭৫ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী মনিরুজ্জামানসহ অভিযুক্তদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে।
রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে ফুলবাড়িয়া উপজেলা পরিষদের সামনে জনসাধারণের উদ্যোগে মানববন্ধন করা হয়। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, ফুলবাড়িয়া উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক ইমদাদুল হক মিলন, সাবেক ছাত্রনেতা তাইফুর রহমান কাফি, আব্দুল্লাহ, আবু রায়হান খোকা, সন্তোষপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মনসুর আলী, ফুলবাড়িয়া উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব আলামিন সাদাত, আজাহারুল আলম রিপন, অভিবাবক আব্দুল কাদির প্রমুখ।
মানববন্ধনে দুর্নীতিবাজ উপজেলা প্রকৌশলী মনিরুজ্জামানের অপসারণ করে বিচারের দাবি জানানো হয়। এছাড়াও ঘটনার সঙ্গে জড়িত উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা কাবেরী জালাল ও ঠিকাদারের বিচারের দাবি জানান। না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন বক্তারা।
ফুলবাড়িয়া উপজেলার এডিপির ৮ প্রকল্পের ৭৫ লাখ টাকা উত্তোলন করে এবং তা আত্মসাতের অভিযোগ উঠে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা কাবেরী জালাল, উপজেলা প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান ও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় এবং বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। পরে ময়মনসিংহ দুদকের কর্মকর্তারা জানতে পেরে গত ২২ ডিসেম্বর ৮ প্রকল্প পরিদর্শন করে ঘটনার সত্যতা পান এবং ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন দুদকের সহকারী পরিচালক বুলু মিয়া।
বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় ৮টি প্রকল্প নেওয়া হয়। ইচাইল উচ্চ বিদ্যালয় সংস্কারে ১০ লাখ টাকা, আন্ধারিয়াপাড়া বিডিএস দাখিল মাদ্রাসার ১০ লাখ টাকা, কাচিচড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ১০ লাখ টাকা, ছলেমননেছা এতিমখানা ও দাখিল মাদ্রাসায় ১০ লাখ টাকা, অন্বেষণ উচ্চ বিদ্যালয়ে ১০ লাখ টাকা, উপজেলা পরিষদের রাস্তা (এইচবিবি) সংস্কারকরণে ১০ লাখ টাকা, উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির জন্য ১০ লাখ টাকা, উপজেলা চেয়ারম্যানের কোয়ার্টার মেরামতে ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়।
চলতি বছরের ১১ জুন প্রসাদ এন্টারপ্রাইজ, অর্ণব এন্টারপ্রাইজ এবং উড়ালাল এন্টারপ্রাইজ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ পান। উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে টাকা উত্তোলন করলেও কোনো কাজ করা হয়নি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রসাদ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী বিশ্বজিৎ প্রসাদ বলেন, ‘‘এ বিষয়ে আমার কোনো বক্তব্য নেই।’’ উপজেলা প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামানের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন করলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
প্রকল্পের সভাপতি ও ফুলবাড়িয়া উপজেলার সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাবেরী জালাল বদলি হওয়ায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
ময়মনসিংহ দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক বুলু মিয়া বলেন, ‘‘তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। সেই অনুযায়ী তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। মামলার বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে।’’
ঢাকা/মিলন/বকুল