মাদারীপুরে ২ দিনের ব্যবধানে ৬ খুন
মাদারীপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
ফাইল ফটো
মাদারীপুরে গত দুই দিনে বিভিন্ন এলাকায় পৃথক ঘটনায় ছয় হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। গত শুক্র ও শনিবার (২৭ ও ২৮ ডিসেম্বর) এই দুদিনে হত্যাকাণ্ডগুলো সংঘটিত হয়।
এর মধ্যে মাদারীপুর শহরের পুরান বাজারে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা, মাদারীপুর সদরের চিড়াইপাড়া গ্রামে আম গাছের সাথে শিকল পরা অবস্থায় লাশ উদ্ধার, রাজৈরে তৃতীয় শ্রেণির মাদ্রাসার শিক্ষার্থীর মুখে গামছা বাঁধা অবস্থায় লাশ উদ্ধার ও কাকিনিতে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে পিতাপুত্রসহ তিনজন নিহত হন।
মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মো. সাইফুদ্দিন জানান, শনিবার (২৮ ডিসেন্বর) বিকেল ৪টার দিকে মাদারীপুর শহরের প্রাণকেন্দ্র পুরাণবাজারের স্বর্ণকারপট্টীতে পাওনা টাকার জন্য এক মিষ্টি দোকানের কর্মচারীকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার বন্ধুর বিরুদ্ধে।
দিনদুপুরে এমন ঘটনা হওয়ায় চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী। নিহতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
নিহত গৌতম বসু (২৫) সদর উপজেলার পূর্বরাস্তি এলাকার হারান বসুর ছেলে এবং অভিযুক্ত তপন সদর উপজেলার ছিলারচর ইউনিয়নের রঘুরামপুর গ্রামের শ্রী স্বনন্দের ছেলে।
একই দিন সকালে সদর উপজেলার ঘটমাঝি ইউনিয়নের চিড়াইপাড়া গ্রামের আলমগীর মাতুব্বরের মাছের ঘেরে আম গাছ থেকে শিকল বাঁধা অবস্থায় একটি লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত মিজান সরদার (৫০) সদর উপজেলার ঝাউদী ইউনিয়নের বনিকপাড়া গ্রামের মৃত আবু আলী সরদারের ছেলে।
এর আগে শুক্রবার রাতে (২৭ ডিসেম্বর) রাজৈর উপজেলার নয়াকান্দি গ্রামে বসতঘর থেকে মুখে গামছা বাঁধা অবস্থায় তিশা আক্তার (১১) নামে এক মাদ্রাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিশা ওই গ্রামের ভ্যানচালক মিলন সরদারের মেয়ে।
অন্যদিকে একই দিন সকালে মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের ভাদুরী এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হামলায় নিহত হন ইউপি সদস্য মো. আতাউর রহমান আক্তার শিকদার (৪৫), তার ছেলে মো. মারুফ শিকদার (২০) ও মো. সিরাজুল চৌকিদার (২৫)।
এই ঘটনায় নিহতের পরিবার কালকিনির বাঁশগাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান সুমন ও তার ভাই মশিউর রহমান রাজন বেপারীকে দায়ী করছেন। তাদের অভিযোগ এই হত্যাকাণ্ড চেয়ারম্যানের লোকজনই করেছে।
এদিকে এই ঘটনার পর থেকে গ্রেপ্তার এড়াতে ওই এলাকা পুরুষশুন্য হয়ে পড়েছে। এছাড়াও ওই এলাকায় এখনো মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ ঘটনায় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মো. সাইফুদ্দিন বলেন, “এসব ঘটনায় অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কারো আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।”
ঢাকা/বেলাল/সনি