ঢাকা     শনিবার   ০৪ জানুয়ারি ২০২৫ ||  পৌষ ২১ ১৪৩১

রাজশাহীর ২৫৫ নারী যৌতুকের জন্য নির্যাতনের শিকার 

রাজশাহী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:০৩, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪  
রাজশাহীর ২৫৫ নারী যৌতুকের জন্য নির্যাতনের শিকার 

আনুষ্ঠানিকভাবে নারী ও শিশু নির্যাতনের এক বছরের প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়

রাজশাহীতে গত এক বছরে যৌতুকের জন্য ২৫৫ জন নারী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এরমধ্যে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ১৫৭ জন। আর স্বামীর বাড়ি থেকে বিতাড়িত হয়েছেন ৫৩ জন। গত জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত এ সব নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। 

সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) অগ্নি প্রকল্পের পক্ষ থেকে রাজশাহীতে আনুষ্ঠানিকভাবে নারী ও শিশু নির্যাতনের এক বছরের প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়। দুপুরে রাজশাহী নগরের একটি রেস্তোরাঁয় এই প্রতিবেদন উপস্থাপন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

এতে আরো বলা হয়, এই একবছরে রাজশাহীতে পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ২৯৯ নারী। এরমধ্যে স্বামীর হাতে নির্যাতনের শিকার হন ১৫৭ জন। আর স্বামীর পরিবারের সদস্যরা নির্যাতন করেন ৮৪ জনকে। এই সময়ের মধ্যে ২৮ জন নারী ধর্ষণের শিকার হন। পাঁচজনকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ধর্ষণের কারণে আত্মহত্যা করেছেন সাতজন।

আরো পড়ুন:

এছাড়া ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে সাতজনকে। যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন ৫৪ জন। যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করায় লাঞ্ছিত হয়েছেন ৩২ জন। একবছরে জেলায় পারিবারিক বিরোধে স্বামীর হাতে ১৪ নারী খুন হয়েছেন। স্বামীর পরিবারের সদস্যদের হাতে খুন হয়েছেন চারজন। এছাড়া প্রেম প্রত্যাখান করায় একজন এসিড সন্ত্রাসের শিকার হয়েছেন।

একবছরে জেলায় ২২ শিশু হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে। এছাড়া শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে ১৪৯ জন। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ এবং অগ্নি প্রকল্পের ১৮০ জন স্বেচ্ছাসেবী মাঠপর্যায় থেকে এই তথ্য সংগ্রহ করেছেন বলে প্রতিবেদন উপস্থাপন সভায় জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের অগ্নি প্রকল্পের জেলা ব্যবস্থাপক হাসিবুল হাসান পল্লব। তিনি জানান, নির্যাতনের শিকার নারীদের তারা বিনামূল্যে আইনগত সহায়তা দিয়ে থাকেন। একবছরে অগ্নি প্রকল্পের মাধ্যমে ৬৬টি মামলা করা হয়েছে। পারিবারিক, যৌতুক ও শিশু উদ্ধারের এসব মামলার মধ্যে ২১টি নিষ্পত্তি হয়েছে। বাকিগুলো চলমান। নিষ্পত্তি হওয়া মামলাগুলোর মধ্যে ১৮টি মামলায় ভিকটিমের পক্ষে রায় এসেছে। 

প্রতিবেদন উপস্থাপন সভায় আইন ও সালিশ কেন্দ্রের অগ্নি প্রকল্পের ডাটা ম্যানেজমেন্ট কনসালটেন্ট সাব্বির ইসলাম, বেসরকারী সংস্থা পরিবর্তন-এর পরিচালক রাশেদ রিপন, আইনজীবী মোমিনুল ইসলাম বাবু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের আর্থিক সহযোগিতায় আইন ও সালিশ কেন্দ্র অগ্নি প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। তাদের সঙ্গে সহযোগী সংস্থা হিসেবে রয়েছে ব্র্যাক। আসছে ফেব্রুয়ারিতে প্রকল্পটি শেষ হবে।
 

ঢাকা/কেয়া/বকুল

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়