প্রেমের টানে ইউক্রেনের তরুণ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়, করলেন বিয়ে
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
নবদম্পতি অ্যান্দ্রো প্রকিপ ওরফে মোহাম্মদ ও বৃষ্টি আক্তার। সোমবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের কালাছড়া গ্রামে।
ফেসবুকে পরিচয়, টানা দুই বছরের প্রেম। তাদের মধ্যে বাধা হয়নি ভৌগোলিক দূরত্ব বা ধর্ম। প্রেমের শেষ পরিণয় বিয়েতে আবদ্ধ হয়েছেন তারা। ইউক্রেনের নাগরিক অ্যান্দ্রো প্রকিপ (২৭)। নাম বদলে এখন মোহাম্মদ। বিয়ে করেছেন বাংলাদেশের বৃষ্টি আক্তারকে।
সোমবার (৩১ ডিসেম্বর) সকালে বিজয়নগর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী কালাছড়া গ্রামে দেখা মিলে বৃষ্টি-প্রকিপের। কথা বলেন তাদের ভালোবাসা নিয়ে। জানালেন বিয়ে করতে পেরে তারা খুশি। সবার দোয়া চান তারা।
কালাছড়া গ্রামের কামাল মিয়ার মেয়ে বৃষ্টি। এসএসসি পাস। টুকটাক ইংরেজি জানেন। বছর দুয়েক আগে ফেসবুকে রিকোয়েস্ট পাঠান প্রকিপকে। সেই থেকে প্রেমের শুরু। গত ১৯ ডিসেম্বর বেলজিয়াম থেকে বাংলাদেশে আসেন প্রকিপ। সেদিনই বিয়ে করেন বৃষ্টিকে।
বৃষ্টি ও তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দুই বছর আগে ফেসবুকে ইউক্রেনের নাগরিক অ্যান্দ্রোর সঙ্গে বৃষ্টির পরিচয় হয়। অ্যান্দ্রো পোল্যান্ডে ভবন নির্মাণের কাজ করেন। মাঝেমধ্যে কাজ করতে যান বেলজিয়ামে। ফেসবুকে তাদের নিয়মিত মনের ভাব আদান–প্রদান হতো। একপর্যায়ে বৃষ্টিকে প্রেম নিবেদন করেন অ্যান্দ্রো। তবে বৃষ্টি প্রথমে তার প্রস্তাবে রাজি হননি। পরে অ্যান্দ্রো বিয়ের প্রস্তাব দেন এবং ইসলাম ধর্ম গ্রহণের কথা জানান।
বৃষ্টি বলেন, “অ্যান্দ্রোকে আমি বিশ্বাস করি। সে নিজেই ধর্মান্তরিত হওয়ার কথা বলেছিল। ১৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশে এসে আমাকে বিয়ে করার কথা জানিয়েছিল। বিয়ের জন্য আংটি কিনতে আমার কাছে টাকা পাঠায়। ওর ওই কথায় আমার ন্যূনতম সংশয় হয়নি। সে আসবে আমি নিশ্চিত ছিলাম। আমাদের বিয়েতে পরিবারের সম্মতি ছিল।”
বৃষ্টি আরো বলেন, “আমাকে পোল্যান্ডে নেওয়ার জন্য অ্যান্দ্রো বিয়ের কাবিননামাসহ সব কাগজপত্র জমা দিয়েছে। ও বাংলাদেশে এসে এবং আমাকে বিয়ে করে অনেক আনন্দিত। আমি এবং আমার পরিবার অনেক খুশি। আমি আগে থেকে ইংরেজি বলতে পারতাম। ইংরেজিতে ওর সঙ্গে কথা বলেছি। সেও কিছু কিছু বাংলা বলতে পারে।”
এ সময় কথা হয় অ্যান্দ্রো প্রকিপ ওরফে মোহাম্মদের সাথে। তিনি বলেন, “ফেসবুকে দুই বছর আগে বৃষ্টির সঙ্গে পরিচয়। বৃষ্টি অনেক ভালো মেয়ে। আমার দেশের মেয়েদের তুলনায় সে ভিন্ন ও ব্যতিক্রমধর্মী। এক মাস পর চলে যাব। সব প্রক্রিয়া শেষে তাকে সঙ্গে নিয়ে যাব।”
তিনি আরো বলেন, “আমার বিয়ে করা দরকার ও মুসলিম হব- এ দুটি বিষয় আকৃষ্ট করেছে আমাকে। বৃষ্টিকে বিয়ে করতে পেরে আমি খুব খুশি। বাংলাদেশ আমার ভালো লাগছে।”
বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার ফরহাদ আলী বলেন, “প্রেমের এমন ঘরনায় আমরা সবাই খুশি। এ দম্পতিকে দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে অনেকেই ছুটে আসছেন।”
ঢাকা/মাইনুদ্দীন/ইমন