ঢাকা     শুক্রবার   ০৩ জানুয়ারি ২০২৫ ||  পৌষ ২০ ১৪৩১

‘মাউশি থেকে বলছি’

রাজশাহী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৩০, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪  
‘মাউশি থেকে বলছি’

ডাঙ্গেরহাট মহিলা কলেজ

বকেয়া এরিয়া বিল ছাড় করতে রাজশাহীর একটি কলেজের অধ্যক্ষকে ফোন করে টাকা চাওয়া হয়েছে। ‘মাউশি থেকে বলছি’ বলে এক নারী অধ্যক্ষকে বলেন, “দ্রুত ফাইলটার কাজ করাতে কিছু টাকা দিতে হবে।”

গত রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) রাজশাহীর পবা উপজেলার ডাঙ্গেরহাট মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ আসলাম আলীকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর-মাউশি’র নামে এভাবে ফোন করা হয়। মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) বিষয়টি জানাজানি হয়।

ডাঙ্গেরহাট মহিলা কলেজের  অধ্যক্ষ আসলাম আলী জানান, কলেজটির অন্তত সাত মাসের বকেয়া এরিয়া বিল আটকে আছে। ৪৩ জন শিক্ষক-কর্মচারীর পাওনা প্রায় ৯০ লাখ টাকা। বিলের এই ফাইল আছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষার (মাউশি) রাজশাহী অঞ্চলের উপ-পরিচালক (ডিডি) ড. মো. আলমগীর কবীরের টেবিলে। আগামী ৬ জানুয়ারির মধ্যে সব ফাইলের কাজ শেষ করার কথা।

আরো পড়ুন:

এদিকে, কলেজের অধ্যক্ষ আসলাম আলীসহ কয়েকজন শিক্ষক মঙ্গলবার মাউশির রাজশাহী অঞ্চলের পরিচালক অধ্যাপক মোহা. আছাদুজ্জামানের সঙ্গে দেখা করে এভাবে (ফোন করে) টাকা চাওয়ার কথা জানিয়েছেন। তারা পরিচালককে মোবাইল নম্বরটিও দিয়েছেন। নম্বরটিতে কল দিয়ে দেখা গেছে সেটি বন্ধ। পরিচালক এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করার পরামর্শ দিয়েছেন।

মাউশির রাজশাহী অঞ্চলের পরিচালক অধ্যাপক মোহা. আছাদুজ্জামান বলেন, “কে ফোন করেছিল সেটা তো আমি নিশ্চিত না। মোবাইল নম্বরটিও চিনতে পারছি না। তাই অধ্যক্ষকে বলেছি, তিনি যেন থানায় অভিযোগ করেন। তাহলে পুলিশই অভিযুক্তকে খুঁজে বের করবে।”

অধ্যক্ষ আসলাম আলী বলেন, “মাউশির রাজশাহী অঞ্চল থেকে ফাইলটি ঢাকায় যাবে। এরপর টাকা পাওয়া যাবে। রাজশাহী অঞ্চল ফাইলের ভেরিফিকেশন করে থাকে। কোনো কারণে নেগেটিভ রিপোর্ট দিলে আর টাকা পাওয়া যাবে না। এ ঘটনার পর দুশ্চিন্তায় আছি।”

তিনি আরও বলেন, “একজন নারী ফোন করে বললেন, ‘আপনার ফাইলটা আছে। কাজটা করতে টাকা লাগে। দ্রুত করে নিতে হলে টাকা দিতে হবে।’ আমি তাকে বলেছি, ‘টাকা দিয়ে কোনো কাজ করাব না’।”

অধ্যক্ষ বলেন, “যিনি ফোন করেছিলেন তিনি নিজের নাম বলেননি। শুধুমাত্র ‘মাউশি থেকে বলছি’ বলেছিলেন।”

মাউশিতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ডাঙ্গেরহাট কলেজের এই ফাইলটি ডিডি (কলেজ) ড. মো. আলমগীর কবীরের টেবিলে রয়েছে। 

তার পক্ষে কেউ ফোন করেছিলেন কি না জানতে চাইলে ড. আলমগীর কবীর বলেন, ‍“আমি এটা বলতে পারব না। আমি তো এ বিষয়ে এখনো কিছুই শুনিনি।”

‘‘আপনাদের (সাংবাদিকদের) এসব কে বলে?” পাল্টা প্রশ্ন করে ড. আলমগীর কবীর বলেন, “ফাইল তো আটকে নেই। এটা চলমান প্রক্রিয়া। আগামী ৬ তারিখের মধ্যে ফাইলের কাজ করতে হবে। এখনো আমার টেবিলে ৫০টা ফাইল আছে। ৬ তারিখ পার হলে না হয় বলা যেত আটকে আছে।”

ঢাকা/কেয়া/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়