ঢাকা     রোববার   ০৫ জানুয়ারি ২০২৫ ||  পৌষ ২১ ১৪৩১

দাম না পেয়ে ক্ষেতে নষ্ট হচ্ছে ফুলকপি

জাহিদুল হক চন্দন, মানিকগঞ্জ  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:১৮, ২ জানুয়ারি ২০২৫   আপডেট: ২১:১৭, ২ জানুয়ারি ২০২৫
দাম না পেয়ে ক্ষেতে নষ্ট হচ্ছে ফুলকপি

মানিকগঞ্জে গত বছর ফুলকপি চাষ করে চাষিরা লাভ করেন। এ কারণে এবার জেলায় ফুলকপির চাষ বেড়েছে। তবে ফুলকপির দামে কমে যাওয়ায় চাষিদের এখন মাথায় হাত। লোকসানে পড়ে অনেক চাষি ক্ষেত থেকে ফুলকপি তুলছেন না। ফলে ক্ষেতে নষ্ট হচ্ছে। অনেক চাষি তুলে গরু-ছাগলকে খাওয়াচ্ছেন।

বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) দুপুরে সাটুরিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ ফুলকপি বাজারজাতকরণের উপযুক্ত হলেও চাষিরা তুলছেন না। অনেক চাষি তুলে তা খামারের গরু-ছাগলকে খাওয়ানোর জন্য নিয়ে যাচ্ছেন। কিছু চাষি বাজারে পাঠাচ্ছেন।

ফুলকপি চাষি লোকমান ব্যাপারি বলেন, ‘‘এবার ফুলকপি সব একসঙ্গে উঠেছে। ফলে বাজারের চাহিদার তুলনায় যোগান বেশি হয়েছে৷ যোগান বেশি হওয়ার দাম নেই। ধাপে ধাপে ফুলকপি ক্ষেত থেকে উঠলে বাজারের চাহিদার সঙ্গে ভারসাম্য থাকতো৷ চারা কেনা, হালচাষ, দিনমজুর, সার ও কীটনাশক কেনার অর্ধেক টাকাও উঠছে না।’’

আরো পড়ুন:

আরেক চাষি হবি মিয়া জানান, প্রতি বিঘা জমিতে তার ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। অথচ এখন ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে না। যদি সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকত তবে ধীরে ধীরে বিক্রি করা যেত।

সোলায়মান হোসেন জানান, দুই বিঘা জমির ফুলকপি বিক্রির উপযোগী হলেও বিক্রি করতে পারছেন না। কামলা খরচ ও ভ্যান ভাড়া দিয়ে আড়ত পর্যন্ত নেওয়ার খরচও উঠছে না।

ফুলকপি চাষিরা জানান, প্রতি পিস ফুলকপির উৎপাদন খরচ যেখানে ১০ টাকার বেশি, সেখানে তাদের এখন তা বিক্রি করতে হচ্ছে ২ থেকে ৩ টাকায়।

অনেক বেপারি ক্ষেতের ফুলকপি আগাম কিনে রেখেছিলেন। তারা এখন ক্ষতির মুখে পড়েছেন। ইদ্রিস আলী নামে এক বেপারি সরাসরি চাষির কাছ থেকে আগাম ফুলকপি কিনে মানিকগঞ্জসহ ঢাকার বিভিন্ন আড়তে সরবরাহ করেন। কিছুদিন আগে তিনি কৃষকের কাছ থেকে ৭৮ হাজার ২০০ পিস কপি কিনেছিলেন কিন্তু এখন তা ২ থেকে ৩ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে তিনি আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

মানিকগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. রবিআহ নূর বলেন, ‘‘ফুলকপির উৎপাদন বেশি হওয়ায় কৃষকরা সমস্যায় পড়েছেন। এক সঙ্গে একটি ফসলের চাষ না করে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করতে উৎসাহ দেয় কিন্তু প্রথমে দাম বেশি পাওয়ায় সবাই একসঙ্গে ফুলকপি চাষ করেছেন। আগাম, মধ্যম ও নাবি জাতের ফুলকপি চাষ করলে এমন সমস্যা এড়ানো যেত।’’
 

ঢাকা/বকুল

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়