বাঁশ-বেতের পণ্যই যার জীবিকার উৎস
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
সবচন্দ্র দেববর্মার সঙ্গে কথা বলছেন প্রতিবেদক মো. মামুন চৌধুরী।
হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার কালেঙ্গা পাহাড় বেষ্টিত কালিয়াবাড়ি পুঞ্জিতে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বাঁশ-বেত দিয়ে গৃহস্থালির নানা পণ্য তৈরি করা হচ্ছে। এখানে নানা প্রজাতির বাঁশ রয়েছে। এসব বাঁশ-বেত দিয়ে নানান জিনিস তৈরি করছেন কালিয়াবাড়ি পুঞ্জির শতবর্ষী সবচন্দ্র দেববর্মা। এই পেশার মধ্য দিয়ে তিনি প্রায় ৬০ বছর জীবিকা নির্বাহ করছেন।
বর্তমানে এভাবে জীবন কাটাতে পেরে আনন্দিত জানিয়ে সবচন্দ্র দেববর্মা জানান, কালেঙ্গা পাহাড়ি এলাকায় প্রচুর বাঁশ রয়েছে। তাই বেকার না থেকে বাঁশ সংগ্রহ নানা জিনিস তৈরি করে বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছি। বসে না থেকে বৃদ্ধ বয়সেও পরিশ্রমের মাধ্যমে রোজগার করতে পেরে ভালো লাগছে বলেও জানান তিনি।
তিনি আরো জানান, সরকারি সহযোগীতা পাওয়ার আশায় সময় নষ্ট না করে বাঁশ-বেতের কাজে ব্যস্ত থাকি। এতে চাটাই, ওড়া, ঝুড়ি, কুলা, ডালা, খাঁচাসহ নানা সামগ্রী তৈরি করছি। এসব স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা রোজগার হয়। এছাড়া সন্তানরা নানা পেশায় কাজ করে রোজগার করছে। এসব দিয়ে পরিবার নিয়ে কোনোমতে খেয়ে পড়ে বেঁচে আছি।
সবচন্দ্র দেববর্মার স্ত্রী শ্রীকন্যা দেববর্মা জানান, বেঁচে থাকতে হলে বেশি কিছুর প্রয়োজন হয় না। সামান্যতেও চলা যায়। এখানে হতাশ হয়ে লাভ কি। আমরা অল্পতে খুশি। সুখেই আছি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সবচন্দ্র দেববর্মা পরিবার নিয়ে কালিয়াবাড়িতে বসবাস করে বাঁশ-বেত দিয়ে নানা জিনিস তৈরি করে বিক্রি করছেন। এসব বিক্রির লাভের টাকায় তিনি পরিবার নিয়ে চলছেন। তিনি শান্তিপ্রিয় মানুষ। সরকারিভাবে আর্থিক সহযোগীতা করলে তিনি আরো এগিয়ে যেতে পারবেন। তার সাথে এ শীতে সবচন্দ্র দেববর্মাসহ শীতার্তদেরকে শীতবস্ত্র দেওয়ার দাবি জানান তারা।
জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এ কে এম আবদুল্লাহ ভূঞা বলেন, “যারা বাঁশের খাঁচা বানিয়ে জীবিকা চালান, তাদের প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য চেষ্টা করা হবে। তারা সমিতি গঠন করে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। সমিতি করলে নিয়মানুযায়ী সেই সমিতিকে নিবন্ধনের বিষয়ে সহযোগিতা করা হবে। এতে প্রতিবছর আর্থিক অনুদান পাওয়ার সুযোগ থাকবে।”
ঢাকা/মামুন/ইমন