ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন ঠাকুরগাঁও, চাহিদা বেড়েছে গরম কাপড়ের
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
পৌর শহরের রোড যুব সংসদ মাঠের গরম কাপড়ের মার্কেট
হিমালয়ের কাছে থাকা জেলাগুলোর মধ্যে ঠাকুরগাঁও অন্যতম একটি। গত কয়েকদিন ধরে ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন থাকছে পুরো জেলা। দেখা মিলছে না সূর্যের। দুপুরের পর কোন কোন দিন সূর্য উঠলেও থাকছে না তেজ। প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া ঘর থেকে তেমন বের হচ্ছেন না সাধারণ মানুষ।
ঘনকুয়াশার কারণে প্রায় প্রতিদিনই সকাল ১০ টা পর্যন্ত মহাসড়কের যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলতে দেখা যাচ্ছে। কয়েকদিনের ভারী কুয়াশা আর প্রচণ্ড শীতে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধ রোগীর সংখ্যাই বেশি। প্রতিদিন রাত ৮ টার মধ্যেই ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে গ্রাম-গঞ্জ ও শহরের হাট বাজারগুলো।
এদিকে তীব্র শীতের প্রকোপে এখানকার গরম কাপড়ের দোকানেও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মানুষের ভিড়। এ কারণে কাপড়ের দোকানগুলোতে ভিড় উপচেপড়া। সুযোগ বুঝে বিক্রেতারা কাপড়ের দাম বেশি চাইছেন বলে অভিযোগ ক্রেতাদের।
পৌর শহরের রোড যুব সংসদ মাঠের গরম কাপড়ের মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, নারী-পুরুষ ও শিশুরা মিলে ভিড় করছেন পছন্দমত শীতের কাপড় কিনতে। শহরের সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনের শীতের শুরুর দিকে হকার্স মার্কেট বসলেও জেলা প্রশাসনের নির্দেশে সেটি আর বসছে না। ফলে ঠাকুরগাঁও রোড যুব সংসদ মাঠে পুরাতন গরম কাপড়ের দোকানে ভিড় হচ্ছে বেশি।
কাপড় কিনতে আসা মফিজুল ইসলাম জানান, এখানে নিজের জন্য এবং পরিবারের মানুষজনের জন্য প্রয়োজনীয় শীতের কাপড় কিনতে এসেছেন তিনি। শীতের তীব্রতা আরও বাড়তে পারে ভেবে তিনি কাপড় কিনছেন। ভাল মানের কাপড় এখানে পাওয়া যায় তবে কাপড়ের দাম গত বারের চেয়ে অনেক বেশি বলেও জানান তিনি।
গরম কাপড় ব্যবসায়ি রাসেল হাসান জানান, এ বছর ভাল মানের শীতের গরম কাপড়ের দোকান বসেছে। ক্রেতারা উন্নত মানের যাবতীয় কাপড় সংগ্রহ করতে পারছেন এবং এখনকার মতো শীত থাকলে বেচাকেনাও আরও বাড়বে বলে জানান তিনি।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা যায়, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জেলায় সর্বোাচ্চ ২২ ডিগ্রি ও সর্বনিম্ন ৮ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
শীতে কাজ করতে অসুবিধা হওয়ায় অনেকটা বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। এ অবস্থায় কাজে যোগদান করতে না পেরে অসহায় হয়ে পরেছেন তারা। জেলা প্রশাসন ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে কিছু কিছু স্থানে শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। তবে শীত যত বাড়বে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তর ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ইসরাত ফারজানা জানান, ছিন্নমূল ও দরিদ্রদের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হচ্ছে। এ বছর বরাদ্দ চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। তাই আরও ২০ হাজার কম্বল ও ২০ লক্ষ টাকা শীতবস্ত্রের জন্য বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। এছাড়াও এর পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থা এবং ধনাঢ্যদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
ঢাকা/হিমেল/টিপু