বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে আ. লীগ নেতাকে সংবর্ধনা
ফেনী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
ফেনীতে কাতারস্থ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এম সাখাওয়াত হোসেন খানকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) রাতে শহরের একটি রেস্টুরেন্টে তাকে সংবর্ধনা দেয় আলোকিত ফেনী ফাউন্ডেশন নামের একটি সংস্থা।
জানা যায়, ফেনী সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের এম সাখাওয়াত হোসেন খান ২০২৩ সালে কাতার আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব নেন। সাম্প্রতিক সময়ে এম সাখাওয়াত হোসেন বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (সিআইপি) নির্বাচিত হওয়ায় তাকে এ সংবর্ধনা দিয়েছে আলোকিত ফেনী ফাউন্ডেশন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফেনী জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান, জেলা বিএনপির সদস্যসচিব আলাল উদ্দিন আলাল, জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা মুফতি আবদুল হান্নান প্রমুখ।
বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে আ. লীগ নেতাকে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের ছবি ও ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশের পর থেকেই নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বেলাল হোসাইন নামে এক ব্যক্তি লিখেছেন, ‘‘ফ্যাসিস্ট সরকারের অর্থদাতা এম সাখাওয়াত হোসেন খান কাতারস্থ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। কাতারে তার বাসায় ফেনী পৌর মেয়রসহ কয়েকজন কমিশনার, যুবলীগের দায়িত্বশীল নেতা ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের অবস্থান রয়েছে। আর আমরা তাকে সংবর্ধনা দিচ্ছি। কী জবাব দিবেন ৪ আগস্টের বীর শহীদদের? অর্থের কি ক্ষমতা।’’
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কাতার এর কমিটি ঘোষণা উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এম সাখাওয়াত হোসেন খান। ফাইল ফটো
জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হায়দার আলী রাসেল পাটোয়ারী এক পোস্টে মন্তব্য করেন, ‘‘টাকার কাছে সবাই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। কিছু টাকার বিনিময়ে আওয়ামী পরিবারের লোককে সংবর্ধনা দিচ্ছে। এসবের ধিক্কার জানাই।’’
আল-ইমরান নামে আরেকজন লিখেছেন, ‘‘টাকার বিনিময়ে যদি আওয়ামী দোসররা সংবর্ধনা নেন আর ওই অনুষ্ঠানে আমাদের সিনিয়র নেতৃবৃন্দরা যান, তাহলে আমরা কোথায় যাব? আওয়ামী দোসরা প্রকাশ্যে খুন খারাপি করেও তাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত বিন্দুমাত্র অনুতপ্ত নেই।’’
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ফেনীর অন্যতম প্রতিনিধি আবদুল্লাহ আল জুবায়ের বলেন, ‘‘এমন আয়োজন নিয়ে আমরা হতাশ। বিষয়টি মেনে নেওয়ার মতো না। যারা আওয়ামী লীগকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইবে তারাও আওয়ামী লীগের দোসর। আওয়ামী লীগ নেতাকে সংবর্ধনা দেওয়া মানে শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করা। শুধু ফেনী নয়, এ দেশে যারাই আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করার চেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।’’
অনুষ্ঠানে থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব আলাল উদ্দিন আলাল বলেন, ‘‘আমি অনুষ্ঠানের ভেন্যুতে যাওয়ার পরপরই জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার উপস্থিত হন। ওই সময়ে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া, সংবর্ধিত এই ব্যক্তি ২০১৭ সালে চেক জালিয়াতির মামলায়ও কারাগারে ছিলেন। সেখানে তিনি আওয়ামী নেতার চেয়েও চেক জালিয়াতির বিষয়টি নিয়ে আমি লজ্জিত।’’
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সদর উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব আমান উদ্দিন কায়সার সাব্বির ও জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সালাউদ্দিন মামুনও উপস্থিত ছিলেন বলে জানান আলাল উদ্দিন আলাল।
ঢাকা/শাহাব/রাজীব