ঢাকা     মঙ্গলবার   ০৭ জানুয়ারি ২০২৫ ||  পৌষ ২৩ ১৪৩১

বিচারককে হুমকি, মুচলেকায় ছাড় পেলেন যুবদল নেতা

শরীয়তপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৫২, ৫ জানুয়ারি ২০২৫  
বিচারককে হুমকি, মুচলেকায় ছাড় পেলেন যুবদল নেতা

সোলায়মান খান

শরীয়তপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সিনিয়র সহকারী বিচারক ও লিগ্যাল এইড কর্মকর্তা মো. খালেদ মিয়াকে বিচারিক কাজে বাঁধা ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগে সোলায়মান খান (৩৫) নামে এক যুবদল নেতাকে আটক করা হয়। তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদনও করেছিলেন বিচারপতি। পরে বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীদের হস্তক্ষেপে ক্ষমা চেয়ে লিখিত মুচলেকা দেওয়ার পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। 

রবিবার (৫ জানুয়ারি) শরীয়তপুর আদালতের পুলিশ পরিদর্শক শিমুল সরকার বলেন, ‍“একজন সহকারী বিচারকের মৌখিক নিদের্শে দুপুরে এক ব্যক্তিকে জজ আদালতের দ্বিতীয়তলা থেকে আমাদের হেফাজতে রাখা হয়েছিল। সন্ধ্যার দিকে বিচারকের নির্দেশে মুচলেকা নিয়ে বিএনপিপন্থী এক আইনজীবীর জিম্মায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।”

আদালত সূত্রে জানা গেছে, শরীয়তপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবনের দ্বিতীয় তলায় সরকারের জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার জেলা লিগ্যাল এইড কার্যালয়। সিনিয়র সহকারী জজ খালেদ মিয়া লিগ্যাল এইড কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আজ দুপুরে লিগ্যাল এইড আদালতে স্বামী-স্ত্রীর দেনমোহর সংক্রান্ত মামলার শুনানি চলছিল। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন নিজেকে সদর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পরিচয় দেওয়া সোলায়মান খান। তিনি একটি পক্ষ নিয়ে বিচারকের আদেশ ঘোষণার সময় উত্তেনাজনাপূর্ণ মন্তব্য করেন ও সহকারী জজ খালেদ মিয়াকে হুমকি দেন। পরে সহকারী জজ খালেদ মিয়া কোর্ট পুলিশ ডেকে সোলায়মানকে আটক করার নির্দেশ দেন। পুলিশ দুপুর দেড়টার দিকে তাকে আটক করে কোর্টের হাজত খানায় রাখে। 

আরো পড়ুন:

বিকেলে সহকারী জজ খালেদ মিয়া বাদী হয়ে একটি মামলার আবেদন করেন। বিকেলে ওই মামলা অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট চাঁদনী রুপমের আদালতে পাঠানো হয়। এরপরই বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা ও স্থানীয় বিএনপির নেতারা ওই ব্যক্তিকে ছাড়িয়ে নিতে তৎপর হয়ে ওঠেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সোলায়মানকে সহকারী জজ খালেদ মিয়ার কক্ষে আনা হয়। সেখানে বিএনপিপন্থী আইনজীবী ও বিএনপি নেতাদের উপস্থিতিতে সহকারী জজের কাছে দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চান তিনি। এ ধরনের আচরণ আর কখনো করবেন না এমন মুছলেকা দেওয়ার পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। সন্ধ্যা ৭ টার দিকে সোলায়মানকে তার স্বজন ও বিএনপির নেতারা আদালত থেকে নিয়ে যান।

নিজেকে সদর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পরিচয় দেওয়া সোলায়মান খান বলেন, “আমার এক প্রতিবেশী ছেলের সঙ্গে তার স্ত্রীর ঝামেলা ছিল। সেই ব্যাপারে তার সঙ্গে আদালতে যাই। সেখানে বসে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। পরে বিষয়টি সমাধান হয়ে গেছে।” 

সোলায়মান খান যুবদলের কেউ না বলে দাবি করেছেন শরীয়তপুর জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন বিদ্যুৎ। তিনি বলেন, “সোলায়মান খান যুবদলের কেউ না। শুনেছি, বিচারকের সঙ্গে খারাপ আচরণ করায় পুলিশ তাকে আটক করেছে।” 

শরীয়তপুর জজ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মনিরুজ্জামান দীপু বলেন, “বিষয়টি আমার দৃষ্টিগোচর হয়নি। আদালতের ও আইনজীবীদের কোনো পক্ষ বিষয়টি আমাকে জানায়নি। সাংবাদিকদের কাছেই প্রথম শুনেছি।”

ঢাকা/সাইফুল/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়