ঢাকা     রোববার   ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২৯ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

যৌতুকের শিকল থেকে উদ্ধার তানিয়া

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:২৩, ৭ জানুয়ারি ২০২৫   আপডেট: ২২:৫১, ৭ জানুয়ারি ২০২৫
যৌতুকের শিকল থেকে উদ্ধার তানিয়া

তানিয়া খাতুন

আট বছর আগে সোহেল রানার সঙ্গে তানিয়া খাতুনকে বিয়ে দেন রিপন গাজি। এরমধ্যে জমাইকে কয়েক দফায় ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা যৌতুক দেন তানিয়ার বাব রিপন গাজি। এরপরও টাকার দাবিতে স্ত্রীর ওপর নির্যাতন চালাচ্ছিলেন সোহেল। যৌতুকের দাবিতে তিনি তানিয়ার পায়ে শিকল বেঁধে তালাবদ্ধ করে রাখেন। 

মেয়েকে নির্যাতন করা হচ্ছে এমন খবর পেয়ে মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) সোহেলের গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ উপজেলার বাদেডিহী গ্রামে যান রিপন গাজি। সেখানে তিনি মেয়ের পা শিকল দিয়ে বাঁধা অবস্থায় দেখতে পান। মেয়েকে নির্যাতনের কারণ জানতে চাইলে রিপন গাজিকেও মারধর করে আহত করেন সোহেল ও তার পরিবারের সদস্যরা। খবর পেয়ে পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বাবা-মেয়েকে উদ্ধার করে। অবশেষে যৌতুকের শিকল থেকে উদ্ধার হন তানিয়া।

আরো পড়ুন:

এ ঘটনায় রিপন গাজি আজ রাতে বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। মামলায় নির্যাতিতার স্বামী সোহেল রানা, শাশুড়ি মাহামুদা খাতুন ও ননদ রুমি খাতুনকে আসামি করা হয়েছে।। 

ভুক্তভোগী তানিয়া কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজার ইউনিয়নের মঙ্গলপৈতা গ্রামের রিপন গাজির মেয়ে।

রিপন গাজি বলেন, “তানিয়ার দুইটি কন্যা সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকে জামাই সোহেল আমার মেয়েকে প্রায়ই যৌতুকের জন্য মারধর করত। যে কারণে মেয়ের ভালো চেয়ে কয়েক দফায় টাকা দিয়েছি তাকে (সোহেল রানা)। এরপরও জামাই ও তার পরিবারের লোকজনের আচরণ পরিবর্তন হয়নি। তানিয়াকে আবার টাকা আনতে বলে তারা। এতে সে (তানিয়া) রাজি না হওয়ায় সোমবার (৬ জানুয়ারি) সকালে তানিয়াকে মারধর করে পায়ে শিকল বেঁধে আটকে রাখে সোহেল ও তার পরিবার।” 

তিনি আরো বলেন, “খবর পেয়ে আজ সকালে জামাই বাড়ি গেলে আমাকেও মারধর করে জামাই ও তার বাড়ির লোকজন। খবর পেয়ে পুলিশ দুপুর ১২টার দিকে আমাদের উদ্ধার করে।”

নির্যাতনের শিকার তানিয়া খাতুন বলেন, “বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য স্বামীসহ তার পরিবারের লোকজন আমার ওপর নির্যাতন চালাচ্ছিল। বাবা গরিব হলেও আমার সুখের জন্য কয়েক দফায় তাদের ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা দেন। এরপরও তারা নির্যাতন বন্ধ করেনি। গতকাল সোমবার শাশুড়ি, স্বামী ও ননদ মিলে আমাকে মারধর করে। পরে তারা আমার পা শিকল দিয়ে বেঁধে আটকে রাখে।” 

তিনি আরো বলেন, “খবর শুনে আমার বাবা আজ সকালে এসে নির্যাতনের কারণ জানতে চাইলে তাকেও মারধর করে ওরা। পরে পুলিশ এসে আমাদের উদ্ধার করে। আমি তাদের শাস্তি দাবি করছি।”

এ বিষয়ে জানতে সোহেল রানার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি।

কালীগঞ্জ থানার ওসি শহিদুল ইসলাম জানান, কোনো এক গৃহবধূকে পায়ে শিকল বেঁধে আটকে রাখা হয়েছে শুনে তিনি পুলিশ পাঠিয়েছিলেন। পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে গৃহবধূ তানিয়াকে পায়ে শিকল বাঁধা ও তার বাবা রিপন গাজিকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান। এ ঘটনায় নির্যাতিত তানিয়ার বাবা রিপন গাজি আজ রাতে বাদী হয়ে কালীগঞ্জ থানায় মামলা করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

ঢাকা/শাহরিয়ার/মাসুদ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়