শরীয়তপুরে বস্তায় আদা চাষে কোটি টাকা আয়ের সম্ভাবনা
শরীয়তপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
ইউটিউব দেখে ও কৃষি বিভাগের পরামর্শ নিয়ে পতিত জমিতে সাড়ে ৬ হাজার বস্তায় আদা চাষ করছেন কৃষক হোসেন খাঁ
শরীয়তপুরে বাণিজ্যিকভাবে বস্তায় আদা চাষ শুরু হয়েছে। বাড়তি খরচ, কীটনাশক ও সেচের প্রয়োজন না হওয়ায় এ পদ্ধতিতে আদা চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। এ জেলার ছয়টি উপজেলায় চলতি মৌসুমে ৪২ হাজার ১৭৫টি বস্তায় আদা চাষ করা হচ্ছে। এতে অন্তত ১ কোটি টাকা আয়ের সম্ভাবনা দেখছেন কৃষকরা। লাভজনক হওয়ায় ভবিষ্যতে বস্তায় আদা চাষের পরিমাণ আরও বাড়বে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ।
শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার কেদারপুর এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, সারি সারি বসানো হয়েছে বস্তা। এসব বস্তার মাটি ফুঁড়ে বেরিয়ে এসেছে আদার গাছ। ইউটিউব দেখে ও কৃষি বিভাগের পরামর্শ নিয়ে প্রায় ৩ লাখ টাকা খরচ করে পতিত জমিতে সাড়ে ৬ হাজার বস্তায় আদা চাষ করছেন কৃষক হোসেন খাঁ। প্রত্যেক বস্তায় দেড় কেজি করে আদা পাওয়ার আশা করছেন এই কৃষক। এসব আদা বিক্রি করে ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা আয়ের স্বপ্ন দেখছেন তিনি। লাভ ভালো হলে পরিসর আরো বাড়ানোর পরিকল্পনা করছেন হোসেন খাঁ। তাকে দেখে অন্য চাষিরাও বস্তায় আদা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
এ বছর কয়েক হাজার বস্তায় আদা চাষ করছেন জাজিরা উপজেলার বড় কান্দি ইউনিয়নের কৃষক সোহাব আলী মাদবর। তিনি বলেছেন, “প্রতিটি বস্তায় ৬০-৭০ টাকা করে খরচ হয়েছে। একেকটি বস্তায় আধা কেজি করে আদার ফলন হলেও খরচ বাদ দিয়ে লাভবান হওয়ার আশা করছি।”
স্থানীয় আরেক কৃষক শাহজালাল বাধন বলেন, “উপজেলা কৃষি বিভাগের সহযোগিতা ও তত্ত্বাবধানে এখন অনেকেই বস্তা পদ্ধতিতে আদা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। প্রথম দিকে নিজেদের রান্নার প্রয়োজন মেটাতে বস্তা পদ্ধতিতে আদা চাষ শুরু হলেও এখন বাণিজ্যিকভাবে করা হচ্ছে। তুলনামূলকভাবে কম পরিশ্রম ও খরচ হওয়ায় শিক্ষার্থীরাও পড়ালেখার পাশাপাশি বস্তায় আদা চাষ করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারেন।”
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের শরীয়তপুর কার্যালয়ের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মোহাম্মদ রিয়াজুর রহমান বলেছেন, “আদা অধিক লাভজনক ফসল। শরীয়তপুরে বাণিজ্যিকভাবে বস্তা পদ্ধতিতে আদা চাষ করা হচ্ছে। ছায়াযুক্ত স্থানে অন্যান্য ফলগাছের নিচে আদা চাষ করা যায়। তাই, দিন দিন কৃষকদের মধ্যে বস্তায় আদা চাষ জনপ্রিয় হচ্ছে। তাদের সব ধরনের পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করছে কৃষি বিভাগ।”
ঢাকা/আকাশ/রফিক