শীতকালীন সবজিতে ধামরাইয়ের কৃষকদের মুখে হাসি
আরিফুল ইসলাম সাব্বির, (সাভার) ঢাকা || রাইজিংবিডি.কম
ফুলকপির ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত ধামরাই উপজেলার এক কৃষক
“এইবার আল্লায় অনেক শিম দিছে, এক মাস ধইরা বেচতাছি, আরো বেচুম। খরচ উইঠা গেছে। আগেরবার লাভ পাই নাই, এইবার পাইছি।”
শীতকালীন সবজি শিম চাষ করে লাভবান ঢাকার ধামরাইয়ের কৃষক আবুল কালাম এভাবেই নিজের মনের কথা বলছিলেন। শুধু তিনি নন, উপজেলা জুড়ে এবছর শীতকালীন সবজির ভালো ফলন হয়েছে বলে জানিয়েছেন অনান্য কৃষকরাও।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, এবছর ধামরাইয়ে ২ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে চিচিঙ্গা, মিষ্টি কুমড়া, লাউ, শিম, বেগুন, পেঁপে, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাল শাক, পালং শাকসহ বিভিন্ন শাক-সবজি চাষ হয়েছে। প্রতিদিনই মাঠ থেকে ফসল তুলে স্থানীয় বাজারসহ ঢাকা, গাজীপুর ও মানিকগঞ্জে বিক্রির জন্য পাঠাচ্ছেন চাষিরা।
কৃষকরা জানান, গেল কয়েক সপ্তাহ ধরেই ধামরাইয়ের গাংগুটিয়া, কুশুরা, বাইশাকান্দা, বালিয়া, রোয়াইলসহ কয়েকটি ইউনিয়নে চাষ করা শাক-সবজি মাঠ থেকে তোলা শুরু হয়েছে। এসব সবজি ধামরাইয়ের বাজারের চাহিদা মিটিয়ে সাভারের বাইপাইল, ঢাকার কারওয়ান বাজার, গাজীপুরের কোনাবাড়িসহ বিভিন্ন বাজারে পাঠানো হচ্ছে। চাহিদা থাকায় ভালো দামও পাচ্ছেন কৃষকরা।
সরেজমিনে মাঠে গিয়ে দেখা যায়, সব ক্ষেত শীতকালীন সবজিতে ভরপুর। কৃষক ও শ্রমিকেরা ক্ষেত থেকে সবজি তুলে সড়কের পাশে স্তূপ করছেন। পাইকাররা সেখান থেকেই সবজি কিনে ট্রাকে তুলে নিয়ে যাচ্ছেন দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রির জন্য।
গাংগুটিয়া ইউনিয়নের কাওয়াখোলা এলাকায় ফুল কপির ক্ষেত পরিচর্যার কাজ করছিলেন কৃষক আবুল কালাম ও তার স্ত্রী। আবুল কালাম বলেন, “গত বছর তিন বিঘা জমিতে ফুলকপি চাষ করেছিলাম। সেসময় আবহাওয়া ভালো না থাকায় ফলন ভালো হয়নি। এজন্য ভেবেছিলাম জমি চাষ করব না। এরপরও এবছর ফুুলকপি চাষ করেছি। আবহাওয়া ভালো থাকায় ফলন ভালো হয়েছে। বিক্রির শুরু থেকেই ভালো দাম পেয়েছি।”
পাশেই শিম খেতে কাজ করছিলেন নজরুল ইসলাম নামে অপর কৃষক। তিনি বলেন, “পাঁচ বিঘা জমিতে শিম চাষ করেছি। অনেক ফলন হয়েছে। দামও ভালো পাচ্ছি।”
ধামরাই কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, “আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবছর সবজির ফলন খুবই ভালো হয়েছে। কৃষি অধিদপ্তর সবসময় কৃষকদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে তাদের দিকনির্দেশনা দিচ্ছে। কৃষকরাও দীর্ঘদিন ধরে চাষ করায় অভিজ্ঞ হয়ে উঠেছেন। আবহাওয়া বুঝে যাওয়ায় তারা আগাম সবজি চাষ করছেন। ফলে শীতের শুরুতে তারা যেমন ভালো দাম পান, শীত শেষেও যখন সবজির চাহিদা থাকে, তখনো তারা ভালো দাম পান। আমরা তাদের বিষমুক্ত সবজি চাষে উদ্বুদ্ধ করছি। বিষ মুক্ত সবজি চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে, ফলে টাটকা সবজি পাচ্ছেন ভোক্তারা।”
ঢাকা/মাসুদ