ঢাকা     রোববার   ১২ জানুয়ারি ২০২৫ ||  পৌষ ২৯ ১৪৩১

ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি ক্যাবের

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:১২, ১২ জানুয়ারি ২০২৫  
ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি ক্যাবের

মূল্যস্ফীতি ও মানুষের দুর্ভোগ কমাতে ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার দাবি জানিয়েছে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগ ও নগর কমিটির নেতারা। 

রবিবার (১২ জানুয়ারি) ক্যাব চট্টগ্রাম গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি জানায়। 

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন- ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগরের প্রেসিডেন্ট জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা প্রেসিডেন্ট আলহাজ আবদুল মান্নান, ক্যাব যুব গ্রুপ চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি চৌধুরী কেএনএম রিয়াদ, ক্যাব যুব গ্রুপ চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি আবু হানিফ নোমান প্রমুখ।

আরো পড়ুন:

বিবৃতিতে নেতারা বলেন, বৈশ্বিক ও দেশীয় নানা পট পরিবর্তনের কারণে ২০২৪ সাল পুরো বছর জুড়ে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ঊর্ধ্বমুখী ছিল। সর্বশেষ ডিসেম্বরে ১৩ শতাংশের কাছাকাছি এবং তার আগের মাসে ছিল ১৪ শতাংশের কাছাকাছি। ক্রমাগত নিত্য খাদ্যপণ্য ও খাদ্য বর্হিভূত পণ্য ও সেবার মূল্য প্রতিযোগিতা হারে বাড়ছে। ফলে নিম্নবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত পরিবারও ক্রমাগত মূল্যবৃদ্ধির চাপে জীবন জীবিকা নির্বাহে প্রায় দিশাহারা। এরই মধ্যে এই ভ্যাট-সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত মূল্যস্ফীতিকে আরেক দফা উসকে দিতে পারে।

নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আগামী মার্চে পবিত্র মাহে রমজান। রমজান উপলক্ষে এখন থেকেই নিত্যপণ্যের দাম বিশেষ করে তেল, ডাল, চিনি, ছোলা, মাছ, মাংস, মসলা অনেক পণ্যেরই দাম বাড়ানো ও মুজত করা শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। শীতের ভরা মৌসুমে শীতকালীন সবজির দাম কিছুটা কম থাকলেও ক্রমাগতভাবেই বাড়ছে চালের দাম। প্রকার ভেদে চাল কেজিপ্রতি ১০-১৫ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে। এই সময়ে এভাবে ভ্যাট-সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি করায় অসাধু ব্যবসায়ীরা এই সুযোগে আরেক দফা দাম বাড়ানোর সুযোগ নিয়ে নিত্যপণ্যের বাজারে আগুন ছড়াতে পারেন। এভাবে নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির হলে রমজান মাসে প্রান্তিক ও সীমিত আয়ের মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠবে। এমনকি রোজাদাররা সারা দিন রোজা রাখার পর ইফতারে ফল রাখতে পারবেন না।

নেতারা আরো বলেন, মূল্যম্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের নানাবিধ উদ্যোগ চলমান থাকলেও তার সুফল জনগণ পাচ্ছে না। সরকার ইতিপূর্বে ২৯টি পণ্যের ভ্যাট ও আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করলেও ভোক্তা পর্যায়ে তার কোনো প্রতিফলন আসেনি। এই শুল্ক প্রত্যাহারের পুরো সুবিধাটুকু বড় বড় করপোরেট গ্রুপ ও আমদানিকারকরা হাতিয়ে নেন। সেখানে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও সরকারের অন্য কোনো দপ্তর খবরও রাখেনি। মূল্যস্ফীতি ক্রমাগতভাবে ঊর্ধ্বমুখী থাকায় মানুষের প্রকৃত আয় কমে গেছে। প্রতিমাসে মানুষের ধার দেনা ও খাবারের তালিকা কাটছাড় করে কোনো রকমে সংসার চালাতে হচ্ছে। যেহেতু আয় বা বেতন তো বাড়েনি, সে কারনে পরিবারের পুষ্টিসহ অনেক প্রয়োজন কাটছাঁট করতে পারলেও পরিবারের চিকিৎসা খরচ উপক্ষো করা যাচ্ছে না। আবার জীব রক্ষাকারী ওষুধ কিনতে প্রতি মাসেই বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে। ওষুধের দামও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। এবার সেই ওষুধের ওপর ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর ফলে আরেক দফা মূল্য বৃদ্দি ঘটবে। 

তাই সরকারের রাজস্ব আয় বাড়ানোর জন্য বিদ্যমান ভ্যাট নেটের আওতা বাড়ানো, সহজীকরণ করা, কর ফাঁকি বন্ধ করা, এনবিআরে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের দুঃখ-কষ্ট-দুর্ভোগ বিবেচনা করা প্রয়োজন। একই সঙ্গে পরোক্ষ কর বৃদ্ধি করে নিম্ন আয়ের মানুষের দারিদ্রসীমার নিচে নেমে যাওয়া রোধে প্রত্যক্ষ কর বাড়ানোর ওপর জোর দেওয়া দরকার। কর প্রশাসনে সংস্কার ও কর ফাঁকির বিষয়টি বন্ধ করে অবিলম্বে ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার দাবি জানান বিবৃতিতে।

ঢাকা/রেজাউল/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়