যৌন নির্যাতনের অভিযোগে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে মামলা
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
ফাইল ফটো
স্কুলছাত্রকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জুয়েল রানা ফকিরের (৪৫) নামে মামলা হয়েছে।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) রাতে ভুক্তভোগীর বাবা বাদী হয়ে চৌহালী থানায় জুয়েল রানাকে একমাত্র আসামি করে মামলাটি করেন। চৌহালি থানার ওসি জিয়াউর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরো পড়ুন: সিরাজগঞ্জে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ
মামলার আসামি জুয়েল রানা চৌহালী উপজেলার সম্ভুদিয়া ইউনিয়নের চর-সলিমাবাদ গ্রামের আব্দুল খালেক ঝুনু ফকিরের ছেলে। তিনি উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক।
এর আগে, স্কুলছাত্রকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে রবিবার (১২ জানুয়ারি) রাতে উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জুয়েল রানা ফকিরকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ঘটনার বিষয়ে জবাব দিতে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। উপজেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক রেজাউল করিম নোটিশে স্বাক্ষর করেন।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, শনিবার (১১জানুয়ারি) রাতে ৮ম শ্রেণির স্কুলছাত্র (১৪) বলাৎকারের অভিযোগ উঠছে। যা রবিবার (১২ জানুয়ারি) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে দলের ভাবমূর্তি ব্যাপকভাবে ক্ষুন্ন হয়েছে। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তাকে (জুয়েল রানা) এ বিষয়ে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে কারণ দর্শাতে ব্যর্থ হলে জুয়েল রানার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ভুক্তভোগী ছাত্রের পরিবার সূত্রে জানা যায়, মোবাইলে খুদেবার্তার মাধ্যমে বিএনপি নেতা জুয়েল রানা ফকিরের সঙ্গে স্কুলছাত্রের পরিচয় হয়। শনিবার (১১ জানুয়ারি) বিকেলে সম্ভুদিয়া বাজার এলাকায় স্থানীয় বিএনপি আয়োজিত মতবিনিময়সভা চলাকালে সেখানে তাদের দেখা ও আলাপ হয়। শনিবার রাত ১১টার দিকে জরুরি কথা আছে বলে জুয়েল রানা তাকে চর-সোলিমাবাদ বাজার এলাকায় ডেকে নেন।
সেখানে একটি ঘরের মধ্যে নিয়ে তাকে (স্কুলছাত্র) যৌন নির্যাতন করেন জুয়েল রানা ফকির। এরপর সে (স্কুলছাত্র) বাড়িতে এসে পরিবারকে বিষয়টি জানায়। পরের দিন রবিবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে পরিবার থানায় অভিযোগ করতে গেলে স্থানীয় বিএনপির নেতারা উপযুক্ত বিচার দেওয়ার আশ্বাসে তাদের বাড়ি পাঠিয়ে দেন। আজ (সোমবার) রাতে ভুক্তভোগীর বাবা বাদী হয়ে চৌহালী উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জুয়েল রানা ফকিরকে একমাত্র আসামি করে থানায় মামলা করেন।
চৌহালী উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাহিদ মোল্লা বলেন, “বিষয়টি জানার পরই অভিযুক্ত জুয়েল রানাকে শোকজ করা হয়েছে। পাশাপাশি এ ঘটনা তদন্তে দলের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।”
অভিযোগ অস্বীকার করে জুয়েল রানা বলেন, “আমাকে ফাঁসানোর জন্য আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। সেই কারণে আমার বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। ওই ছাত্রের শারীরিক পরীক্ষা করলেই প্রমাণ পাওয়া যাবে।”
চৌহালি থানার ওসি জিয়াউর রহমান বলেন, “ভুক্তভোগীর বাবা একটি এজাহার দাখিল করেছেন। মেডিকেল পরীক্ষর জন্য ভুক্তভোগীকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সকালে তাকে শারীরিক পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হবে। ভুক্তভোগীকে প্রথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে অল্প সময়ের মধ্যেই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হবে।”
ঢাকা/অদিত্য/মাসুদ