ঢাকা     শনিবার   ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ||  ফাল্গুন ৯ ১৪৩১

‌‘আমার কাছে বালির মূল্য বেশি, মানুষের কোনো মূল্য নাই’

কুমিল্লা প্রতিনিধি  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:০৭, ১৭ জানুয়ারি ২০২৫   আপডেট: ১৮:০৮, ১৭ জানুয়ারি ২০২৫
‌‘আমার কাছে বালির মূল্য বেশি, মানুষের কোনো মূল্য নাই’

অভিযুক্ত হাজী শাহাজাহান

কুমিল্লা বুড়িচংয়ে বালু নিয়ে খেলা করার সময় চার বছরের এক শিশুকে পুকুরে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে হাজী শাহাজাহান নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর মায়ের সঙ্গে অভিযুক্ত ব্যক্তির কথোপকথনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। যেখানে অভিযুক্তকে বলতে শোনা যায়, “আমার কাছে বালির মূল্য বেশি, মানুষের কোনো মূল্য নাই। আমি সামাজিক মানুষও না।” 

গতকাল বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলার সদর ইউনিয়নের বুড়িচং পূর্ব পাড়া মঞ্জুর আলী সর্বার বাড়িতে ঘটনাটি ঘটে।

এদিকে ওই ঘটনায় শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) শিশুটির মা বুড়িচং থানায় মামলা করেছেন। বুড়িচং থানার ওসি আজিজুল হক বলেন, “আজ সকালে শিশুর মা বাদী হয়ে শিশু নির্যাতন মামলা করেছেন। আমরা আসামিকে ধরার চেষ্টা করছি।”

আরো পড়ুন:

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, শিশুটির মা শামছুন নাহার তানিয়া বলছেন, “আপনার মধ্যে কি মনুষ্যত্ব নেই। আপনি আমার বাচ্চাকে পানিতে ফেলে দিলেন। আপনি একজন সামাজিক মানুষ হয়ে এমন কাজ কিভাবে করতে পারলেন। একটু বালু ফেলে দিয়েছে, বলে আপনি এভাবে আমার বাচ্চাকে পুকুরে ফেলে দেবেন। আপনি কি একটা যুক্তিসঙ্গত কাজ করলেন এটা। আপনি আমার বাচ্চাকে ফেলে দেওয়ার পর না উঠিয়ে উল্টো বলছেন, যে বাচ্চাটা মরে যাক। 

শিশুটিকে পুকুরে ফেলে দেওয়া ব্যক্তি পাল্টা জবাবে বলেন, “তোমার বাচ্চা নাকি কার বাচ্চা এটা আমি দেখব না। আমার কাছে বালির মূল্য বেশি, মানুষের কোনো মূল্য নাই। আর আমি সামাজিক মানুষ ও না। আজকে ২০ দিন ধরে সবাইকে বলতেছিলাম। কেউ আমার কথা শোনেনি। তোমার বাচ্চা এখানে এসে বালি ধরেছিল। তোমার বাচ্চা আমার এখানে আসবে কেন?”

শামছুন নাহার তানিয়া বলেন, “আমার সন্তানকে শাহাজাহান হত্যা করার চেষ্টা করেছে। আমি প্রশাসনের কাছে বিচার চাই। একজন শিক্ষক হয়ে ঘৃণিত কাজ কিভাবে করেন তিনি। সেদিন যদি আমার মেয়ে উপস্থিত না থাকতো, তাহলে আমার বাচ্চাকে হত্যা করা হত।”

অভিযোগসূত্রে জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে বুড়িচং থানার পূর্ব পাড়া এলাকার বাসিন্দা মো. নজির আহম্মেদের দুই মেয়ে মোসা. মিফতাহুল মাওয়া (৪) এবং মোসা. গালিবা সুলতানা (১০) বালি নিয়ে খেলা করছিল ওই এলাকার শাহজাহানের বাড়ির সামনে। এসময় শাহজাহান পূর্ব শত্রুতার জেরে নজির আহমেদের ছোট মেয়ে মিফতাহুল মাওয়াকে মারধর করে এবং কোলে তুলে পুকুরে ফেলে দেন। এসময় গালিবা চিৎকার করলে শাহজাহান তাকে মারধর করেন। চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে অভিযুক্ত শাহজাহান পালিয়ে যান। পরে স্বজনরা দুই শিশুকে উদ্ধার করে প্রথমে বুড়িচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক মিফতাহুল মাওয়ার অবস্থার অবনতি দেখে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরের পরামর্শ দেন। বর্তমানে শিশুটি সেখানে চিকিৎসাধীন।

কুমিল্লার পুলিশ সুপার নজির আহমেদ বলেন, “ভিডিওটি দেখেছি। এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে প্রয়োজনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/রুবেল/মাসুদ


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়