ঢাকা     শনিবার   ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ||  ফাল্গুন ৯ ১৪৩১

বিজিবিকে মেরে মহিষ ছিনিয়ে নিলেন বিএনপির নেতাকর্মীরা 

রাজশাহী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:০২, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫   আপডেট: ১৯:০৩, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫
বিজিবিকে মেরে মহিষ ছিনিয়ে নিলেন বিএনপির নেতাকর্মীরা 

রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদের মারধর করে দুটি ভারতীয় মহিষ ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বিএনপি ও যুবদলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। শনিবার (১৮ জানুয়ারি) রাত দেড়টার দিকে এ ঘটনায় বিজিবির পক্ষ থেকে থানায় মামলা করা হয়েছে। 

বিজিবির রাজশাহীর ১ ব্যাটালিয়নের রাজাবাড়ি বিশেষ ক্যাম্পের মো. শাহ আলম বাদী হয়ে ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি করেছেন। এর আগে একই দিন সকালে মহিষ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে।

গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন বলেন, “বিজিবিকে মারধর করে ভারতীয় মহিষ ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় মামলা হয়েছে।”

আরো পড়ুন:

বিজিবির দায়ের করা মামলার আসামিরা হলেন- উপজেলার নাজিরপুর গ্রামের মো. মুকুল (৫৫), তার ছেলে হাসান (২৮), বিয়ানাবোনা গ্রামের মো. আক্কাশ (৫৯), তার জামাতা মো. জীবন (৩৩), মোল্লাপাড়া গ্রামের মো. বাবলু (৫০), তার ছেলে মো. ডলার (৩২), একই গ্রামের নয়ন (৩৫), বিজয়নগর গ্রামের হামিদ (৩৫), মো. জনি (৩৫), তার ভাই মো. টনি (৩৩), বিয়ানাবোনা গ্রামের মো. জনি (৪০) ও পবার গহমাবোনা গ্রামের সিজার (৩০)। 

মামলার আসামিদের মধ্যে জনি ও টনি দেওপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবদুল হাই টুনুর ছেলে। গত বছরের ৫ আগস্টের পর তাদের বিরুদ্ধে এলাকায় নানা অপকর্মের অভিযোগ আছে। আক্কাশ দেওপাড়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য ও ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি। বাবলু ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি। বাবলু চোরাপথে ভারতীয় গরু-মহিষ আনার ব্যবস্থা করেন বলে অভিযোগ আছে। নয়ন ৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক। পবা থেকে যাওয়া সিজারও ঘাটিয়াল। হুন্ডি কারবারে জড়িত থাকার অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, বিজিবি সদস্যরা খবর পান, নাজিরপুর গ্রামের গরু-মহিষের ব্যবসায়ী মুকুল ভারত থেকে চোরাপথে দুটি মহিষ এনে বাড়ির পাশের জঙ্গলে রেখেছেন। এই খবরে বিজিবি সদস্যরা অভিযানে যান। তখন মুকুল কৌশলে পালিয়ে যান। মুকুলকে না পেলেও বিজিবি সদস্যরা মহিষ দুটি জব্দ করে রাজাবাড়ী বিশেষ ক্যাম্পে ফিরছিলেন। আসার পথে রাজাবাড়ী এলাকায় বিএনপির নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্র এবং লাঠি নিয়ে অতর্কিতভাবে বিজিবি সদস্যদের ওপর হামলা করেন এবং মহিষ নিয়ে যেতে বাধা দেন। তারা হুমকি দেন যে, মহিষ ছেড়ে না দিলে বিজিবি সদস্যদের লাশ ফেলে দেওয়া হবে। একপর্যায়ে তারা অতর্কিতভাবে বিজিবি সদস্যদের ধাক্কা দেন এবং কিল-ঘুষি মেরে টেনে-হিঁচড়ে মহিষ দুটি ছিনিয়ে নেন। ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার পর মামলা করা হয়।

ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্তরা আত্মগোপনে থাকায় তাদের সঙ্গে কথা বলা যায়নি। 

অভিযুক্ত বিএনপি নেতা আক্কাশের মোবাইলে ফোন করা হলে তার ভাই মো. শরীফ কল ধরেন। তিনি বলেন, “আমার ভাই বাড়িতে নেই। মহিষ নিয়ে আসলে কী হয়েছে আমি সঠিক বলতে পারব না।”

গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন বলেন, “বিজিবিকে মারধর করে ভারতীয় মহিষ ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলায় সরকারি কাজে বাধা দানেরও অভিযোগ আনা হয়েছে। আমরা ছিনিয়ে নেওয়া মহিষ দুটি উদ্ধারের চেষ্টা করছি। পাশাপাশি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। দ্রুতই তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।”

ঢাকা/কেয়া/মাসুদ


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়