হাইমচরে পানির অভাবে বোরো ধান রোপণ করা যাচ্ছে না
চাঁদপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

চাঁদপুরের হাইমচরে জমি প্রস্তুত করেও পানি অভাবে বোরো ধান রোপণ করতে পারছে না কৃষক। এভাবে চলতে থাকলে বীজতলায় ধানের চারা বেশি দিন রাখলে ভালো উৎপাদন না হওয়ার আশঙ্কা করছেন চাষিরা।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) সকালে হাইমচরে চরভাঙ্গা, গন্ডামারা, কমলাপুর, ছোট লক্ষীপুরসহ মেঘনা নদীর পূর্ব অঞ্চল সরেজমিন গেলে চাষিরা তাদের এ হতাশার কথা জানান।
সেখানে দেখা যায়, চাষিরা জমি প্রস্তুত করেও পানি সংকটে ধান রোপণ করতে পারছে না। দ্রুত পানির প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন তারা।
হাইমচরে খাল সংস্কার না হওয়ায় বর্ষাকালে পানি নামতে না পারায় ফসলের জমি, বাড়ি-ঘর পানিতে ডুবে যায়। গত বর্ষায়ও এলাকার চাষিদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তাই পানি উন্নয়ন বোর্ড হাইমচরে দুটি খাল পুনঃখননের কাজ শুরু করেছে।
চরভাঙ্গা গ্রামের মহসিন, নাইমুল, ফারুকসহ কয়েকজন জানান, জমি প্রস্তুত করেও পানির অভাবে বোরো ধান রোপণ করা যাচ্ছে না। বহুদিন ধরে খাল পুনঃখনন করার কাজ চলমান রয়েছে। কবে তা শেষ হবে, আর খালে পানি আসবে; তা তারা জানেন না। বর্ষায় পানি বেশি থাকায় চাষ করতে পারেননি। এখন ঠিক মতো পানি না পেলে ধান রোপণ করতে না পারলে না খেয়ে থাকতে হবে।
তারা আরো জানান, দু-একজন চাষি পুকুর, ডোবা থেকে পানি দিয়ে চাষাবাদ শুরু করলেও পানির অভাবে ধানের চারা মারা যাচ্ছে।
হাইমচর উপজেলার দায়িত্বে থাকা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ হাসান গাজী জানান, দুটি খাল পুনঃখননের কাজ চলছে। এরমধ্যে উত্তরে কমলাপুর থেকে মহজমপুর ব্রিজ পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার; দক্ষিণে টেক কান্দি থেকে সাবু মাস্টারের মোড় পর্যন্ত ২ কিলোমিটার খনন কাজ চলমান রয়েছে। তিনি আশা করেন, কয়েক দিনের মধ্যে খাল পুনঃখনন করে পানি সরবরাহ করা সম্ভব হবে।
হাইমচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাকিল খন্দকার বলেন, ‘‘আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে পানি সরবরাহ করার জন্য চিঠি দিয়েছি। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড খাল পূনঃসংস্কার কাজ করায় পানি সরবরাহে বিলম্ব হচ্ছে।’’
তিনি বলেন, ‘‘বোরো ধান চাষিরা যদি সময় মতো পানি না পায় তাহলে চাষে বিঘ্ন হবে। তাই আমরা বারবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করে যাচ্ছি। দ্রুত যেন পানি সরবরাহ করা হয়।’’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাকিল খন্দকার জানান, হাইমচরে ৬৯০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ করা হয়। ফসল ঠিক মতো ঘরে তোলা গেলে ২ হাজার ৯৭৮ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হবে। ১ হাজার ৬০০ কৃষককে ৫ কেজি ধান বীজ, ১০ কেজি ডিএপি সার, ১০ কেজি করে এমওপি সার দেওয়া হয়েছে। এখানে ৪ হাজার ২০০ জন চাষি বোরো ধান চাষে সম্পৃক্ত রয়েছেন।
ঢাকা/জয়/বকুল