প্রমীলা ফুটবল টুর্নামেন্ট নিয়ে সংঘর্ষ, আহত ৭
দিনাজপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
![প্রমীলা ফুটবল টুর্নামেন্ট নিয়ে সংঘর্ষ, আহত ৭ প্রমীলা ফুটবল টুর্নামেন্ট নিয়ে সংঘর্ষ, আহত ৭](https://cdn.risingbd.com/media/imgAll/2025January/Dinajpur-risingbd-2501281532.jpg)
দিনাজপুরের হাকিমপুরে প্রমীলা প্রীতি ফুটবল টুর্নামেন্টেকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত সাতজন আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) বিকেলে উপজেলার আলিহাট ইউনিয়নের বাওনা গ্রামে টুর্নামেন্টের আয়োজক কমিটির সঙ্গে তৌহিদী জনতার ব্যানারে মিছিলকারীদের সংঘর্ষ হয়।
হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অমিত রায় বলেন, “প্রমীলা ফুটবল টুর্নামেন্টকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। আমরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দুই পক্ষের লোকজনদের শান্ত করার চেষ্টা করেছি। কিছু লোকজন অতর্কিত হামলা চালানোর কারণে ৪-৫ জন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আমি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছি। তারা আহতদের বিনা খরচে চিকিৎসার ব্যবস্থা করবে।”
এলাকাবাসী জানান, বিজয় দিবস উপলক্ষে বাওনা ছাত্র কল্যাণ পরিষদের উদ্যোগে বাওনা গ্রামের অস্থায়ী মাঠে ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়। এরমধ্যে টিকিট করে প্রমীলা প্রীতি ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করে আয়োজক কমিটি। প্রমীলা ফুটবল টুর্নামেন্ট বন্ধের দাবিতে তৌহীদি জনতার ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি ঘটনাস্থলে পৌঁছালে ইউএনও অমিত রায়, হাকিমপুর ঘোড়াঘাট সার্কেলের এএসপি আ. ন. ম নিয়ামত উল্লাহ, ওসি মো. সুজন মিঞা, তদন্ত ওসি জাহাঙ্গীর আলম মিছিলকারীদের সঙ্গে কথা বলে পরিবেশ শান্ত এবং খেলা বন্ধ করার চেষ্টা করেন।
এরপর প্রশাসনের লোকজন অস্থায়ী মাঠে গিয়ে আয়োজক কমিটির সঙ্গে কথা বলে। এরমধ্যে কয়েকজন যুবক লাঠি নিয়ে তৌহিদী জনতার বিক্ষোভ মিছিলের লোকজনের দিকে এগিয়ে যান। এসময় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন।
তৌহদী জনতার আজিজুল হক অভিযোগ করেন, “বাওনা গ্রামের যুব সমাজের আয়োজনে বিজয় দিবস উপলক্ষে ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়। তারা প্রমীলা ফুটবল টুর্নামেন্টেরও আয়োজন করে। তখন আমরা এই খেলা বন্ধের দাবিতে প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দেই এবং বিক্ষোভ করি। তারা (প্রশাসন) আমাদের আশ্বাস দেন খেলা হবে না। আজ আবারো তারা (খেলার আয়োজকরা) এলাকায় মাইকিং করে এবং মিথ্যা কথা বলে যে, ডিসি মহোদয় অনুমতি দিয়েছেন।”
তিনি আরো বলেন, “আমরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পুলিশ আমাদের বলে আপনারা শান্ত থাকেন, আমরা বন্ধের ব্যবস্থা করছি। এরমধ্যে প্রশাসনের উপস্থিতিতে আয়োজক কমিটির লোকজন আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা করে। হামলায় আমাদের গালিব, আব্দুর রহমান, রায়হানসহ সাতজন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।”
তিনি অভিযোগ করেন, ““আমাদের উপর অতর্কিত হামলা এবং মারামারি সময় পুলিশ কোনো ভূমিকা নেয়নি। এমন কি পুলিশ বাঁশিতেও ফু দেয়নি।”
হাকিমপুর ও ঘোড়াঘাট থানার সার্কেল এএসপি আ. ন. ম নিয়ামত উল্লাহ বলেন, “অনুমতি ছাড়া প্রমীলা ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হয়েছেন।”
পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “আমি ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছে আয়োজক কমিটিকে ১০ মিনিট সময় দেই এবং তৌহিদী জনতাকে খেলা বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেই। আমরা মাঠে গিয়ে তাদের (খেলার আয়োজক) সঙ্গে কথা বলে মাঠের চারপাশের কাপড় খোলার ব্যবস্থা করি। এসময় তৌহিদী জনতার লোকজনের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় আয়োজক কমিটির কিছু লোকজন। পর্যাপ্ত পুলিশ না থাকায় পুলিশ কোনো ভূমিকা নিতে পারেনি। পুলিশ জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”
ঢাকা/মোসলেম/মাসুদ