ঢাকা     শুক্রবার   ০৭ মার্চ ২০২৫ ||  ফাল্গুন ২২ ১৪৩১

বরগুনায় বঙ্গবন্ধু নৌকা জাদুঘর ভাঙচুর  

বরগুনা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:১৩, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫   আপডেট: ২০:২৬, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
বরগুনায় বঙ্গবন্ধু নৌকা জাদুঘর ভাঙচুর  

বরগুনা পৌর শহরের বঙ্গবন্ধু নৌকা জাদুঘরে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠেছে বিএনপির সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে জাদুঘরটি ভাঙচুর করেন তারা। বিকেল পৌনে ৫টার দিকে জাদুঘরটি পুরোপুরি গুঁড়িয়ে দেন নেতাকর্মীরা। 

জাদুঘরটি ভাঙচুরে নেতৃত্ব দেন যুবদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মুরাদ খান, বরগুনা জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ইকবাল হোসেন সোহাগ এবং বরগুনা জেলা ছাত্রদলের সাবেক সদস্য সচিব মুরাদুজ্জামান টিপন। 

আরো পড়ুন:

২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর বরগুনা পৌর পুরানো গ্রন্থাগারের ঝূঁকিপূর্ণ ও পরিত্যক্ত ভবন ভেঙে তৈরি করা হয়েছিল নৌকা জাদুঘর। 

বরগুনা জেলা প্রশাসনের নাজির তানসেন জানান, নদী মাতৃক দেশের এক সময়ের একমাত্র বাহন নৌকাকে নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচিত করানোর পাশাপাশি দেশি-বিদেশি পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বরগুনায় নির্মাণ করা হয়েছিল দেশের প্রথম নৌকা জাদুঘর। ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর ১৬৫ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৩০ ফুট প্রস্থের নৌকার আদলে জাদুঘরটির নির্মাণ কাজ শেষ করে তৎকালীন বরগুনা জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ। এর মূল ভবন ৭৫ ফুট, প্রতিটি গলুইয়ের দৈর্ঘ্য ৪৫ ফুট। এরপর দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ১০১ ধরনের বিলুপ্ত নকশার নৌকা সংগ্রহ করে রাখা হয়েছিল।

ওই সময় জাদুঘরটির পাশাপাশি নৌকা গবেষণাকেন্দ্র, আধুনিক লাইব্রেরি, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ কর্নার, শিশুদের বিনোদনের জন্য রাইড, থিয়েটার, ক্ষুদ্র ক্যাফেসহ নানা প্রতিষ্ঠান নির্মাণের আশ্বাস ছিল। তবে উদ্বোধনের চার বছরেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।

দক্ষিণের পর্যটন উদ্যোক্তা আরিফুর রহমান বলেন, “বরগুনা উপকূলীয় জেলা। এই জেলার চারপাশ নদীবেষ্টিত। নৌকা আমাদের ঐতিহ্য। তবে দলীয় প্রতীক হিসেবে না দেখে ঐতিহ্য হিসেবে ভাবলে নৌকা জাদুঘরটা রাখা যেত। হয়তো নামের পরিবর্তন করে নৌকা জাদুঘরটা টিকিয়ে রাখা হলে আমাদের উপকূলের ঐতিহ্য টিকে থাকতো। বিএনপির উদ্যোগে ভেঙে ফেলা হয়েছে নৌকা জাদুঘর।”

বরগুনা জেলার ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মুরাদুজ্জামান টিপন বলেন, “নৌকা জাদুঘরের নামে ১০ টাকা করে চাঁদা উঠানো হতো। সরকারি সম্পত্তি দখল করে নৌকা জাদুঘর করা হয়েছে। তাই জনগণ এটা ভেঙে ফেলেছে।”

যুবদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মুরাদ খান বলেন, “বঙ্গবন্ধু নৌকা জাদুঘর নাম দেওয়ার কারণে জনরোষ সৃষ্টি হয়েছিল। তাই এটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। পরবর্তীতে শহীদ জিয়া স্মৃতি পাঠাগার তৈরি করার দাবি জানাচ্ছি জেলা প্রশাসকের কাছে।”

এ বিষয়ে জানতে বরগুনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আলমকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

ঢাকা/ইমরান/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়