ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১০ এপ্রিল ২০২৫ ||  চৈত্র ২৭ ১৪৩১

৭ বি‌য়ে করা সেই র‌বিজু‌লের না‌মে থানায় মানব পাচারের অভিযোগ 

কুষ্টিয়া প্রতি‌নি‌ধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৪৪, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫   আপডেট: ১৬:৪৬, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
৭ বি‌য়ে করা সেই র‌বিজু‌লের না‌মে থানায় মানব পাচারের অভিযোগ 

কু‌ষ্টিয়ার সেই ৭ বি‌য়ে করা র‌বিজু‌ল ইসলা‌মের বিরু‌দ্ধে মানব পাচা‌রের অ‌ভি‌যোগ উঠে‌ছে। এ ঘটনায় সিরাজ শেখ না‌মে এক ভুক্তভোগী যুব‌কের বাবা ইসলামী বিশ্ব‌বিদ্যালয় থানায় লি‌খিত অ‌ভি‌যোগ করেছেন। 

গত ৫ ফেব্রুয়া‌রি দা‌য়ের করা অ‌ভি‌যো‌গে ‌র‌বিজুল, তার বাবা আয়নাল এবং স্ত্রী রু‌বি খাতু‌নের নাম উল্লেখ করা হ‌য়ে‌ছে। 

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ও‌সি) মে‌হেদী হাসান এ তথ্য নি‌শ্চিত ক‌রে‌ছেন। 

র‌বিজুল ইসলাম (৪০) কুষ্টিয়া সদর উপ‌জেলার মিয়াপাড়া গ্রা‌মের বা‌সিন্দা। তি‌নি পেশায় মাইক্রোবাস চালক ছি‌লেন। জীবিকার তাগিদে পাড়ি জমিয়েছিলেন লিবিয়ায়। ১৫ বছর লিবিয়ায় থাকার পর দে‌শে ফি‌রে ৭ বি‌য়ে ক‌রে আলোচনায় আসেন তি‌নি।

পু‌লিশ ও ভুক্ত‌ভোগী প‌রিবার  জানায়, দুই বছর আগে সদর উপ‌জেলার জগ‌তি কৃষকপাড়ার সিরাজ শে‌খের ছে‌লে তান‌জিলকে ইতালিতে উচ্চ বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ১১ লাখ টাকার বিনিময়ে লিবিয়া পাঠি‌য়ে দেন র‌বিজুল। সেখানে সাত-আট মাস কাজ করানোর পর তানজিলকে  মানব পাচারকারী চক্রের হাতে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন সিরাজ শেখ। পরে তিনি ছেলেকে মুক্ত করতে ধারদেনা করে ৩৪ লাখ টাকা তুলে দেন। কিন্তু দফায় দফায় টাকা নেওয়ার পরও দালালরা ছেলেকে মুক্ত করেনি বলে তিনি জানান। অবশেষে প্রায় ১০ মাস পর ১১ ফেব্রুয়ারি বন্দিশালা থেকে ছাড়ি‌য়ে ছেলেকে লি‌বিয়া‌য় এক প‌রি‌চিত জ‌নের কা‌ছে তানজিলকে তিনি রেখেছেন। এখন ছেলেকে দেশে ফেরাতে বিমানভাড়া জোগাড় করতে পারছেন না তিনি।

পেশায় মোটর মেকানিক সিরাজ শেখ ব‌লেন, ‘‘আমার সুখের সংসার ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছে রবিজুল। তানজিল কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিল। প্রলোভন দে‌খি‌য়ে ছে‌লে‌কে ইতালি পাঠা‌নোর নাম ক‌রে লি‌বিয়া প‌ঠি‌য়ে‌ছে। মা‌ফিয়া চ‌ক্রের কাছ থে‌কে ছে‌লে‌কে ছাড়া‌তে ভিটেমাটি বিক্রি করে দিয়ে এখন জগতির রেলের জায়গায় থাকতে হচ্ছে।’’

সিরাজ শেখ বলেন, ‘‘ছেলেকে ছাড়াতে দফায় দফায় মোট ৩৪ লাখ টাকা দালালকে দিয়েছি। এরপর টাকা চাইলেও আর দিতে পারিনি। অবশেষে গত ১১ ফেব্রুয়ারি তানজিল বন্দিশালা থেকে মুক্তি পেয়েছে।’’

‘‘মানব পাচারকারী চক্রের হোতা রবিজুল একসময় লিবিয়ায় থাকলেও বর্তমানে বাংলাদেশেই সক্রিয়। তার ৭টি বিয়ে হয়েছে এবং বর্তমানে ৫ স্ত্রীকে নিয়ে আত্মগোপনে আছে।’’ বলেও জানান ভুক্তভোগী বাবা। 

এ বিষ‌য়ে জান‌তে র‌বিজু‌লের মু‌ঠো‌ফো‌নে যোগা‌যোগ করা হ‌লে ফোন‌টি বন্ধ পাওয়া যায়।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মে‌হেদী হাসান ব‌লেন, ‘‘ভুক্ত‌ভোগী এক যুব‌কের বাবা থানায় অ‌ভি‌যোগ দি‌য়ে‌ছেন। অ‌ভি‌যো‌গের ভি‌ত্তি‌তে র‌বিজু‌লের বাবা ও স্ত্রী‌কে‌ জিজ্ঞাসাবা‌দের জন্য থানায় আনা হ‌য়ে‌ছে।’’

কাঞ্চন//


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়