পটুয়াখলীতে অনির্দিষ্টকালের জন্য আইনজীবীদের আদালত বর্জন
পটুয়াখালী (উপকূল) প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

সকাল থেকে এজলাসে কোন আইনজীবী উপস্থিত হননি
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আশীষ রায়ের ঘুষ-দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিয়মের প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের জন্য আদালত বর্জন করেছেন আইনজীবীরা।
বুধবার (৫ মার্চ) সকাল থেকে এজলাসে কোন আইনজীবী উপস্থিত হননি বলে জানা গেছে। এতে সাধারণ বিচারপ্রার্থীরা ভোগান্তিতে পড়েছেন।
দুপুরে আদালত বর্জনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা আইনজীবী সমিতির প্রতিনিধি ও কলাপাড়া চৌকি আদালত আইনজীবী কল্যাণ সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. মজিবুর রহমান চুন্নু।
এর আগে চৌকি আদালত আইনজীবী ভবনে আইনজীবীদের এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা আইনজীবী সমিতির প্রতিনিধি অ্যাডভোকেট মো. মজিবুর রহমান চুন্নুর সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অ্যাডভোকেট মো. হাফিজুর রহমান চুন্নু, অ্যাডভোকেট নাথুরাম ভৌমিক, অ্যাডভোকেট আব্দুস সত্তার(৫), অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন মাহমুদ, অ্যাডভোকেট খন্দকার নাসির উদ্দিন, অ্যাডভোকেট গোফরান বিশ্বাস পলাশ, অ্যাডভোকেট সাইদুর রহমান, অ্যাডভোকেট আবুল হোসেন, অ্যাডভোকেট খন্দকার শাহাবুদ্দিন, অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম, অ্যাডভোকেট কাওসার, অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন প্রমুখ। সভায় আইনজীবিরা আদালত বর্জনের সিদ্ধান্ত নেন।
ধানখালী থেকে আসা বিচারপ্রার্থী ফিরোজ মিয়া বলেন, “একটি মামলায় আমার আজ হাজিরা ছিল। সেই সকালে এসেছি। পরে শুনলাম আজ কোন উকিল আদালত করবেন না। তাই ফেরত যাচ্ছি। আমার আসা যাওয়ার ভাড়াটাই বৃথা গেল।”
কলাপাড়া চৌকি আদালতে প্রাকটিসরত জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও উপজেলা বিএনপির সম্পাদক অ্যাডভোকেট হাফিজুর রহমান চুন্নু বলেন, “জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আশীষ রায়ের দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতায় কলাপাড়ার বিচার প্রার্থী মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। প্রকাশ্যে ঘুষ লেনদেনে জামিন, খালাস আদেশ দেয়ায় আদালতের ভাবমূর্তি সংকটাপন্ন হয়ে পড়েছে।”
অপর জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট খন্দকার নাসির উদ্দিন বলেন, “ম্যাজিস্ট্রেটের ঘুষ, দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রকাশ্য আদালতে মুখ খোলায় আমি তার দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। কেননা এতে ক্ষুব্ধ হয়ে উনি আমার পরিচালনাধীন বেশ কয়েকটি মামলায় অন্যায় আদেশ দিয়েছেন। অবিলম্বে ওনার অপসারণের দাবিতে আদালত বর্জন করেছেন আইনজীবীরা।”
জেলা আইনজীবী সমিতির প্রতিনিধি অ্যাডভোকেট মো. মজিবুর রহমান চুন্নু বলেন, “আজকের সভায় আইনজীবীরা সর্বসম্মতি ক্রমে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের অপসারণের জন্য আদালত বর্জনের সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে। আমরা আজকের মধ্যেই এ রেজুলেশন জেলা জজ আদালতের প্রধান বিচারকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে পৌঁছে দিচ্ছি। অবিলম্বে তাকে অপসারণ করা না হলে আইনজীবীরা কঠোর কর্মসূচি পালনে বাধ্য হবে।”
কলাপাড়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. কাইয়ুম আকন্দ বলেন, “আইনজীবীরা কী করেছে সেটা আসলে আমরা অবগত নই। তবে আজ কোন আইনজীবী এজলাসে উপস্থিত হননি। স্বাভাবিকভাবেই আদালতের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।”
ঢাকা/ইমরান/এস