লক্ষ্মীপুরে চাঁদা না পাওয়ায় শ্রমিকদের মারধর করলেন যুবদল নেতা
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

অভিযুক্ত যুবদল নেত আনোয়ার সম্রাট (পাঞ্জাবি পরিহিত)
লক্ষ্মীপুরে বেড়িবাঁধ সংস্কার কাজের ঠিকাদারের কাছ থেকে চাঁদা না পেয়ে ছয় শ্রমিককে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে সাবেক যুবদল নেতা আনোয়ার সম্রাটের বিরুদ্ধে।
আহতদের দাবি, প্রথমে ২০-৩০ জন লোক এসে কাজে বাধা দেয়। এরপরও কাজ চলমান থাকায় সম্রাট নিজে এসে লাঠি দিয়ে শ্রমিকদের পিটিয়ে আহত করেন।
নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে আনোয়ার সম্রাট বলেন, “আমি ব্যবসা করি। আমি বেঁড়িবাধের কাজ বন্ধ করিনি। শ্রমিকদের মারধরের ঘটনায় আমি কিংবা আমার কোনো লোক জড়িত নয়। আমি ঘটনাস্থল যাইনি।”
শনিবার (১৫ মার্চ) সকাল ১১টার দিকে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চররমনী মোহন ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ঘটনাটি ঘটে।
অভিযুক্ত সম্রাট নিজেকে চররমনী মোহন ইউনিয়ন যুবদলের সহ-সভাপতি হিসেবে দাবি করেছেন।
আহত শ্রমিকরা হলেন- কাশেম সর্দার, ইসলাম সর্দার, জাহের সর্দার। অন্য তিনজন ভেকু চালক। তাদের নাম জানা যায়নি।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে মজুচৌধুরীর হাটে ‘ক্লাইমেট স্মার্ট এগ্রিকালচার এন্ড ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট’ প্রজেক্ট হাতে নেওয়া হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত ১০.০৪৮ কিলোমিটার বাঁধ সংস্কারের পাশাপাশি ভাঙা অংশে একটি স্লুইস গেট নির্মাণ করা হবে। একইসঙ্গে বাঁধ এলাকার ২ কিলোমিটার অংশে ক্যাম্পের খাল পুনঃখনন করা হচ্ছে। বাঁধ সংস্কার ও খাল খননে ৫ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মোস্তফা এন্ড সন্স কাজটি করছে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে বাঁধের উচ্চতা সাড়ে ৭ মিটার ও উপরিভাগের প্রস্থ ৬ মিটার হবে। প্রায় ২ কোটি টাকায় নির্মাণ করা হবে স্লুইসগেট। চলতি বছরের জুনে কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
আহত শ্রমিক কাশেম সর্দার বলেন, “শুক্রবার ৩-৪ জন লোক এসে আমাদের কাজ বন্ধ করে দেয়। তারা কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলতে বলেছে। আজ সকালে লোকজন এসে আবারো কাজে বাঁধা দেয়। কাজ বন্ধ না করায় সম্রাট এসে লাঠি দিয়ে আমাদের পিটিয়ে আহত করেন।”
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ক মামুনুর রশিদ বলেন, “বেড়িবাঁধ সংস্কার কাজে আমরা কয়েক দফা বাঁধাগ্রস্ত হয়েছি। আনোয়ার সম্রাট চাঁদা চেয়েছেন। চাঁদা না দেওয়ায় কাজে বাঁধা দিয়ে আমার শ্রমিকদের মারধর করেছেন তিনি। শুধু টাকা দিতে বলেন, কত টাকা দিতে হবে তাও তিনি বলেননি।”
লক্ষ্মীপুর জেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক সৈয়দ রশিদুল হাসান লংকন বলেন, “এই সম্রাট আওয়ামী লীগের দোসর। তাকে আমরা সংগঠন থেকে বিতাড়িত করেছি। তার জায়গা আমাদের সংগঠনে নেই। আমি তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পরামর্শ দিচ্ছি।”
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ঝলক মোহন্ত বলেন, “ঘটনাটি আমার জানা নেই। আমি বাইরে আছি। থানায় গেলে জানতে পারবো কেউ অভিযোগ দিয়েছে কি না।”
ঢাকা/জাহাঙ্গীর/মাসুদ